ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

রাজীব মীরের ঘোষণায় শক্তি আছে, আছে সাহস

মাহমুদ মেনন, হেড অব নিউজ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫
রাজীব মীরের ঘোষণায় শক্তি আছে, আছে সাহস

শুধু তোমার জন্য লিখি, সত্যিই এক কঠিন ঘোষণা। যার জন্য লেখা সে বা তিনি ছাড়া আর কেই বা তাতে আগ্রহী হবে! কিন্তু রাজীব মীরের কবিতা সে কথা বলে না।

কবিতা যখন কথা বলে, তখন সে কথা শুনতে পায় হাজারজনা। ফলে এই তুমিই হয়ে ওঠে অনেক। আবার অনেক মিলেও তৈরি হয় এক তুমির। ফলে বলা যায়, রাজীব মীরের ঘোষণায় শক্তি আছে, আছে সাহস। আর এক নামে হাজারজনা কিংবা হাজারজন মিলে একজন হওয়ার যে প্রত্যাশা, তা কবিতায় কিংবা কবিতাগুলোতে বর্তমান।

শুক্রবার রাজীব মীরের কবিতার খুব প্রশংসা হচ্ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটারে আরসি মজুমদার মিলনায়তনে। কোনো ঘরোয়া বা জনাকয়েকের আড্ডা নয়, রীতিমতো অনেকের ভিড়ে। আর তাতে বক্ত‍া, যারা তারা কবিতা বোদ্ধা, সেরা কবিদের দলের। কবি আসাদ চৌধুরীতো বলেই ফেললেন, তিনি আবার তারুণ্যে ফিরতে চান, রাজীব মীরদের মতো উচ্চারণে ফিরতে চান, ফিরতে চান প্রতিবাদে। সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব ড. রনজিৎ বিশ্বাস এসেছিলেন ভিড় ঠেলে ব্যথাপায়ে হেঁটে। বললেন, রাজীব মীরের কবিতা তাকে টেনে এনেছে। আর তার মুগ্ধতার প্রকাশ ঘটাতে তিনি কবিকে উপহার দিলেন দিনের সব ফুটন্ত ফুল। কবিতাও প্রশংসা পেলো। তবে তার চেয়েও বড় হয়ে উঠলো, কবিতায় মুগ্ধ অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের কথা। যিনি বইয়ের এখান-সেখান থেকে পড়ে পড়ে শোনালেন আর মুগ্ধতার প্রকাশ ঘটালেন। তিনিই ছিলেন উৎসবের সভাপ্রধান।

কথা বললেন অধ্যাপক আফসার আহমদ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এ শিক্ষক লিখেছেন, ‘শুধু তোমার জন্য লিখি’র ইনার ফ্ল্যাপ। সেখানে তিনি প্রথম বাক্যেই রাজীব মীরকে কবি বলে সম্বোধন করেছেন। বক্তৃতায় তারই প্রতিধ্বনি শোনালেন।

তাহলেতো রাজীব মীর কবিই। এ বইয়ের মধ্য দিয়ে তার কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা মিললো। এটাই তার কবিতার প্রথম বই। আর কবিতা লেখার সময়টিও দীর্ঘ নয়। রাজীব মীর লিখতে শুরু করছেন হয়তো অল্প দিন হবে। কিন্তু তিনি নাকি অনেক আগে থেকেই কবি। তা না হলে এত পরিণত কবিতা, কাব্যের গাঁথুনিতে এত কঠোর উচ্চারণ সম্ভব হতো না, সেকথা তপন বাগচীর। বাংলা একাডেমির এ গবেষকও এসেছিলেন আলোচক হয়ে। আর কবি সাংবাদিক সোহরাব হাসানতো বলেই দিলেন, রাজীব মীরদের জন্য স্থান ছেড়ে দিতে তিনি প্রস্তুত।

আর তরুণ সঙ্গীত শিল্পী সাহস মুস্তাফিজ এরই মধ্যে রাজীব মীরের কবিতায় গানের গন্ধ পেয়ে গেছেন। কবিতার কথায় সুরারোপ হয়ে তৈরি হয়েছে গান। সে গানও শোনা গেলো প্রকাশনা উৎসবে।

ফেরা যাক কবিতার কথায়। বলছিলাম, কবিতা কথা বলে রাজীব মীরের। যে কবিতা কথপোকথনের, তা তো কথা বলবেই। কিন্তু রাজীব মীর তার ‘শুধু তোমার জন্য লিখি’তে একটিও কথপোকথনের স্থান দেননি। তিনি নিজেই লিখেছেন তার কথা। মনের মধ্যে যা এসেছে তাই লিখেছেন। কাব্যগুণে কতটা উত্তীর্ণ তা আলোচকদের কথায় নিশ্চয়ই আঁচ করা যায়। তবে তারা এ তরুণ কবিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, তাকে হাঁটতে হবে দীর্ঘপথ। দীর্ঘপথের প্রথম পদক্ষেপটি সবাইকে মুগ্ধই করেছে।

বইয়ে স্থান পাওয়া ৭৯টি কবিতার মধ্য থেকে এলোমেলো পাতা উল্টে পড়া কবিতাগুলো থেকে বলাই যায়, রাজীব মীর দ্রোহের কবি হতে চলেছেন। সময়ের উচ্চারণ তার মুখে আরও আরও উচ্চারিত হোক এটাই প্রত্যাশা।

বাংলাদেশ সময় ১৫০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।