বইমেলা থেকে: সপ্তম শ্রেণির ছাত্র জাওয়াদ আল হামিদ সিয়ামকে নিয়ে বাবা নজরুল ইসলাম এসেছেন বইমেলায়। ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল)-এর প্যাভিলিয়নে দেখা হলো তাদের সঙ্গে।
বাংলানিউজকে নজরুল ইসলাম বললেন, আজকের দিনটিসহ মোট চারদিন মেলায় এলাম। সব দিক দিয়ে এবারের মেলা চমৎকার হয়েছে। ছেলেকে নিয়ে আজ আসছি ওর পছন্দের কিছু বই কিনতে।
ছেলেকে দেশবিভাগ সম্পর্কে জ্ঞান দিতে দেখে কৌতূহলবশত প্রশ্ন করলাম, কী ধরনের বই কিনবেন ছেলের জন্য?
একটি বেসরকারি কলেজের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, তরুণ এবং কিশোরদের মধ্যে পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে হাল্কা মেজাজের চিত্তাকর্ষক বই পড়তে দেওয়া উচিত। সিয়ামের জন্য সে ধরনের বই-ই কিনবো। তবে ইতিহাস বিশেষ করে ভূ-ভারত ও বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে শুরু থেকেই ওদেরকে একটা স্বচ্ছ ধারণা দেওয়া দরকার।
বই যদি হয় জ্ঞানের বাহন, তাহলে বইমেলা নি:সন্দেহে জ্ঞানের মেলা। সেই মেলায় এসে নতুন প্রজন্মকে দেশের ইতিহাস, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও বিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা দিতে দেখে মনটাই ভালো হয়ে গেলো।
মেলা একেবারে শেষ প্রান্তে। আজকের দিনটা বাদ দিলে আর মাত্র একটা দিন বসবে এ মেলা। পরবর্তী মেলার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো একটি বছর।
প্রাণের আবেগ মিশ্রিত এ মেলা কেমন গেলো তা জিজ্ঞেস করতেই নিজের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান তাম্রলিপির স্টলে দাঁড়িয়ে এ কে এম তারিকুল ইসলাম রনি বাংলানিউজকে বলেন, খুব ভালোই গেছে। যারা ভালো বই বের করেছে তাদের বিক্রি ছিলো সন্তোষজনক। আর যারা পান্ডুলিপি সিলেকশনে ভুল করেছে অথবা ইনভেস্ট কম করেছে তাদের জন্য মেলা ভালো যায়নি।
কারো হাতে বই দেখলেই চিত্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে। কথা বলার জন্য উতলা হয়ে ওঠে মন। কিন্তু সব সময় সবার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাওয়া যায় ব্যস্ত এ সময়ে।
হাতে বইয়ের ব্যাগ নিয়ে দ্রুত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বের হচ্ছেন আব্দুল আলিম। ব্যস্ততা দেখে তার কাছে সময় চাইলাম মাত্র ১ মিনিট।
অত্যন্ত বিনয়ী আব্দুল আলিম ১ মিনিটের জায়গায় ১০ মিনিট দিতেও রাজি। জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, নওরোজ সাহিত্য সম্ভার থেকে আল মাহমুদের ‘সোনালী কাবিন’, জীবনানন্দ দাসের ‘রূপসী বাংলা’ ও ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থ কিনেছি। এ বইগুলো ঘরে ছিলো, পুরাণ হয়ে গেছে। তাই আবার নতুন করে কিনলাম।
সারা বছর যারা বই পড়েন, সারা বছর তারা বই কেনেনও বটে। তারপরও বইমেলা থেকে বই কেনার মজাটাই আলাদা। তাই মেলা শেষ হওয়ার আগের দিনটার পথম প্রহরেই বই বিক্রির ধুম। মেলায় আসা প্রায় সবার হাতেই বই। আর এ দৃশ্য হাসি ফুটিয়েছে প্রকাশকদের মুখে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় শুক্রবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মেলা শুরু হয়েছে সকাল ১১টা থেকে। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
এদিকে মেলার দরজা খোলার আধা ঘণ্টা আগেই একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলা গেটের সামনে পাঠক ও দর্শনার্থীদের ভিড় জমে যায়। ১১টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে মেলার দরজা উন্মুক্ত হলে লাইন দিয়ে মেলায় প্রবেশ করে সবাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫