ঢাকা: কয়েকদিন পরই শুরু হচ্ছে বইপ্রেমীদের উৎসব অমর একুশে গ্রন্থমেলা। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ মুখরিত হবে লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের পদচারণায়।
বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, নিরাপত্তা জোরদারে নেওয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্টলগুলোর চতুর্দিকে টিনের ও বাঁশের দুই স্তরের নিরাপত্তা প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে।
মেলা আয়োজক কর্তৃপক্ষ এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি মেলায় প্রবেশের মুখে বসানো হবে চেক পোস্ট, দোয়েল চত্বর থেকে চারুকলা পর্যন্ত লাগানো হবে দুই শতাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। মেলা এলাকার অভ্যন্তরে বসানো হবে ওয়াচ টাওয়ার। মাসব্যাপী মেলায় থাকবে স্থায়ী র্যাব-পুলিশের একাধিক ক্যাম্প। টিনের ও বাঁশের তৈরি দুই স্তরের নিরাপত্তা প্রাচীরের মাঝের ফাঁকা স্থানে সার্বক্ষণিক অবস্থান করবেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
মেলার নিরাপত্তা ও সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রসঙ্গে কার্টুনিস্ট, লেখক ও প্রকাশক আহসান হাবীব বাংলানিউজকে বলেন, মৌলবাদীদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই, তারা সংখ্যায় মাত্র গুটিকয়েক। তাদের ভয়ে চুপসে যাওয়ারও কিছু নেই। লেখক-প্রকাশকেরা অবশ্যই তাদের কাজ নিজ গতিতে চালিয়ে যাবেন।
আহসান হাবীব মেলার নিরাপত্তা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এবারের মেলায় যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাতে আশা করছি কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই মেলা শেষ করা যাবে।
এদিকে গত বছরের অক্টোবরে জঙ্গি হামলার শিকার শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর পরিচালক আহমেদুর রশীদ টুটুল নিরাপত্তাহীনতার কারণে বইমেলায় স্টল পরিচালনার জন্য কর্মী পাচ্ছেন না বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মারুফ হোসেন সরদার বাংলানিজকে জানান, মেলার অভ্যন্তরে পুলিশের ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করা হচ্ছে। মেলা প্রাঙ্গণে সাদা পোশাকে অধিক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি কোনো লেখক কিংবা প্রকাশক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলে পুলিশ তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তাতারও ব্যবস্থা করবে।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৬ এর আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বইমেলা উপলক্ষে দোয়েল চত্বর থেকে চারুকলা ইনস্টিটিউট পর্যন্ত দুই শতাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো হবে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ষাট। এছাড়া মেলায় প্রবেশের ক্ষেত্রে চেকপোস্ট এবং আর্চওয়ে পার হয়ে যেতে হবে। তাছাড়া মেলার নিরাপত্তার স্বার্থে মেলার চারপাশের অস্থায়ী প্রাচীর ঘিরে চব্বিশ ঘণ্টা পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার সময় জঙ্গিবাদীদের হামলায় নিহত হন মুক্তমনা ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়। হামলায় আহত হন তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা।
একই বছরের অক্টোবরের ৩১ তারিখে অভিজিতের বই প্রকাশকদের ওপর পৃথক দুটি প্রকাশনা অফিসে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে নিহত হন জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন দীপন। গুরুতর আহত হন শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর আহমেদুর রশীদ টুটুল, লেখক রণদীপম বসু ও তারেক রহীম।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬
এইচআর/এমজেএফ