বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনীতে অতীতের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক সময় এই বাংলা একাডেমিতে অনেক সময় কেটেছে তার। এটি তার প্রিয় প্রাঙ্গণ।
সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৬’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
বাংলা একাডেমিতে অনেক সময় কেটেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিচারণ করেন যে, তার প্রয়াত বন্ধু বেবী মওদুদকে নিয়ে এখানকার লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করতেন। অনেক সময় কাটাতেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এখানে আসতে আমার খুব ভালো লাগে। তবে অনেক নিয়মে বন্দি থাকতে হয় এখন। সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। আবার কবে বইমেলায় অাগের মতো ঘুরে বেড়াতে পারবো! মুক্ত হয়ে বইমেলায় ঘুরে বেড়ানোর প্রত্যাশায় থাকলাম।
তিনি আরও বলেন, সারা বছরই এখন অনেক আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বসে থাকি বইমেলা কখন আসবে। ফেব্রুয়ারি আমাদের প্রেরণা দেয়। প্রতিবাদের ভাষা শেখায় এই মাস। বিজয়ের পথ দেখায় এই মাস।
বাঙালি জাতি কোনো দিন মাথা নত করেনি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেছেন, এই জাতিকে সব সময় আন্দোলন-সংগ্রাম করে, বুকের রক্ত দিয়ে যুগে যুগে ন্যায্য দাবি আদায় করতে হয়েছে। যারই মহত্তম প্রকাশ ঘটেছিল ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাষা আন্দোলন শুরু হয় দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই ১৯৪৮ সালে। শুরু থেকেই এ আন্দোলনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
শেখ হাসিনা বলেন, মূলত পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য উঠেপড়ে লাগে। ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দিন আইন পরিষদে ঘোষণা দেন যে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নেবে। তার এই ঘোষণার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগসহ গোটা ছাত্রসমাজ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
বক্তব্যের আগে প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৫ অর্জনকারীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। ১০ ক্যাটাগরিতে এই পুরস্কার গ্রহণ করেন প্রাপ্ত কবি-সাহিত্যিকরা।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন, কবিতায় আলতাফ হোসেন, কথাসাহিত্যে শাহীন আকতার, প্রবন্ধে যৌথভাবে আবুল মোমেন ও ড. আতিউর রহমান, গবেষণায় মনিরুজ্জামান, অনুবাদে আব্দুস সেলিম, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যে তাজুল মোহম্মদ, আত্মজীবনী, স্মৃতিকথা ও ভ্রমণকাহিনী ক্যাটাগরিতে ফারুক চৌধুরী, নাটকে মাসুম রেজা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশে শরীফ খান ও শিশুসাহিত্যে সুজন বড়ুয়া।
তার আগে, বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান, প্রকাশকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। আরও বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি সচিব। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।
সবশেষে রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা গান পরিবেশন করেন। তারপর প্রধানমন্ত্রী হেঁটে হেঁটে বইমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন এবং কিছু সময় অবস্থান করেন সেখানে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৬/আপডেট ১৭০০
এডিএ/এমইউএম/আইএ/এইচএ
** সংস্কৃতি চর্চা নিয়ে যাচ্ছি তৃণমূল পর্যায়ে
** বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
** অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু
** দুয়ার খুলছে পরিপাটি বইমেলার