ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

প্রাণের মেলায় প্রাণের জোয়ার

সৈয়দ ইফতেখার আলাম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৬
প্রাণের মেলায় প্রাণের জোয়ার ছবি: দীপু মালাকার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে: মেলা শুরুর পর প্রথম কোনো সরকারি ছুটির দিন। তাই বইপ্রেমীদের ভিড়টা একটু বেশিই হবে তা অনুমেয়।

ঠিক হয়েছেও তাই। ছুটির দিনে বাঁধনহারা বইপোকারা ছড়িয়ে গেছেন মেলার আনাচে-কানাচে। গ্রন্থমেলার দু’প্রাঙ্গণের (বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী) ধুলা মাড়িয়ে তারা ছুটে চলেছেন এ-স্টল থেকে ও-স্টল।

এদিকে মেলার প্রবেশমুখে দীর্ঘ সারি। সময় যতই যাচ্ছে এ লাইনে সমাবেতদের তালিকাও দীর্ঘ হচ্ছে। ঠিক যেন এমন এক দিনের অপেক্ষাতেই ছিলেন লেখক-প্রকাশক-পাঠক সবাই। যেন প্রাণের মেলায় প্রাণের জোয়ার।

শুক্রবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলা ঘুরে ঠিক এমনই চিত্র চোখে পড়ে। ছুটি পেয়ে রাজধানীর মিরপুর থেকে সপরিবারে এদিন মেলায় এসেছেন মোস্তফা হোসেন। জানালেন, দুই মেয়ে ও স্ত্রীর জন্য পছন্দের বই সংগ্রহই তার লক্ষ্য।

মোস্তফা বলেন, আমি তো সারাদিন অফিসেই। তবে বাসায় মেয়েরা ও আমার স্ত্রী যেন বই পড়ে সুন্দর অবসর কাটাতে পারে সে জন্য স্টলে স্টলে ঘুরছি। তাদের পছন্দ মতো আজ অনেক বই নেবো।

তার স্ত্রী হাসনা বানু বলেন, আমি আগে অনেক বই পড়তাম। তবে এখন সংসারের কাজের ফাঁকে যেটুকু সময় ব্যয় করি তা ওই বই পড়েই। এছাড়া দুই মেয়ে রামিসা ও জেবাকে বই কিনে দিতে চাই। তারা টেলিভিশন বা কম্পিউটার নিয়ে বেশি সময় না কাটিয়ে বই গল্প-উপন্যাসে আগ্রহী হবে এমনটা চাই।

রাজধানীর একটি হাইস্কুলের শিক্ষক সৈকত মির্জা। হাতে অনেকগুলো বই তার। দেখেই দৃষ্টি না কেড়ে পারে না। কথা বলার জন্য ডাকতেই তিনি জানালেন তার বিজ্ঞান ও গণিত বইয়ের প্রতি আগ্রহের বিষয়টি। তিনি বলেন, এই আগ্রহই আমাকে প্রাণের গ্রন্থমেলায় টেনে এনেছে। ভীষণ ভিড় হয়েছে আজ। জমজমাট এই পরিবেশে ঘুরতেও তো মন্দ লাগছে না!

তার সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেলো, মেলা শুরুর সময় থেকেই তিনি ছিলেন অপেক্ষায়। শুক্রবার ছুটি থাকায় আর দেরি করলেন না, চলে এলেন। তিনি বলেন, পড়ালেখাটা চলমান বিষয়। নিজের আগ্রহের বিষয়গুলোর বই যদি কেনা যায় মেলা থেকে এটাই প্রতিবার (প্রতি বছর) চেষ্টা করি।

মেলা ঘুরতে আসা সিম্ফনি মোবাইলের হেড অব এইচআর আহমেদ পাশার বাংলানিউজকে বলেন, বই দেখা, কেনা এসব আমার কাছে মনে হয় একা একা করার বিষয়। তাই ছুটির এই দিনে সময় বুঝে চলে এলাম। সেই সঙ্গে কিনেও ফেললাম অনেকগুলো বই।

‘মাসে আমার আটদিন ছুটি। প্রাণের টানে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অন্তত চার দিন আসবো এই করেছি পণ’- যোগ করেন তিনি।

সোহরাওয়ার্দীতে ঘুরতে ঘুরতে পাওয়া গেলো একজন কবিতার পাঠককে। নাম সিদ্দিকুর রহমান। চাকরি করেন একটি টেলিকম প্রতিষ্ঠানে। অফিস ছুটি আজ, সুন্দর এক বিকেল-সন্ধ্যার প্রত্যাশায় মেলায় আসা। তিনি বাংলানিউজকে জানান, প্রেমের কবিতা তাকে অনেক টানে। প্রতি বছরই মেলায় এসে বেশ কয়েকজন লেখকের/কবির কবিতার বই সংগ্রহের চেষ্টা করেন।

তার সঙ্গে এসেছেন শাখাওয়াত হোসেন। সম্পর্কে বন্ধু। তিনি চাকরি করেন হজ ট্রাভেলস প্রতিষ্ঠানে। প্রবন্ধের বই বেশ পছন্দ বলে জানালেন। এছাড়া কোনো বই ভালো লাগলে কিনতে দ্বিধা করেন না, মূল্য তার যতই হোক।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৬
আইএ/এএ

** কোলে-পিঠে চেপে মেলায় ঘুরে বেড়ানোর দিন
** সময়টা শুধু শিশুদের
** বইমেলায় রং-তুলি, শিশুদের লুটোপুটি
** বাংলা একাডেমিতে চলছে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
** বাংলা একাডেমির শিশু প্রতিযোগিতার ফরম বিতরণ শেষ বুধবার

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।