ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

একুশের চেতনায় বইমেলায় প্রাণের জোয়ার

আদিত্য আরাফাত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৬
একুশের চেতনায় বইমেলায় প্রাণের জোয়ার ছবি: দীপু মালাকার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বইমেলা থেকে: ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি....’ ক্ষণে ক্ষণে মেলাজুড়ে ভেসে আসছে এ কালজয়ী গানের সুর। করুণ এ সুর যেনো  বইমেলায় একুশের চেতনাকে জাগ্রত ও ভাষার প্রতি ভালোবাসা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।



শুধু একুশের এ গানে-সুরে নয়, রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) মেলায় আগতদের পোশাক ও শরীরেও একুশের আবহ। একুশের সাজে সজ্জিত প্রায় সবাই। বর্ণমালা লেখা বাহারি কাপড়, কালোশাড়ি, পাঞ্জাবি ও ফতুয়া পরে এসেছেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ।

রঙতুলির ছোঁয়ায় শরীরে বাংলা বর্ণমালা। কেউবা শরীরে এঁকেছেন শুধুই ২১, কারও টি-শার্টের বুক বরাবর ভাষা শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরের প্রতিকৃতি। বাদ যাননি ছোট শিশুরাও। তাদের গালে-কপালে আঁকা জাতীয় পতাকা ও শহীদ মিনারের প্রতীক। এমনই চিত্র ২১ ফেব্রুয়ারির অমর একুশে গ্রন্থমেলায়।

মানুষের বাঁধভাঙা প্রাণের জোয়ার প্রমাণ করেছে, একুশ ও একুশে বইমেলা তাদের জীবনে কখনও ম্লান হওয়ার নয়।

এদিন সকাল ৮টায় বইমেলার দুয়ার খোলা হলেও এর ঘণ্টাখানেক পরই বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাড়তে থাকে মানুষের পদচারণা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রভাতফেরি শেষে জনতার একাংশ আসে বইমেলার দিকে। বইমেলা আর শহীদ মিনার জনস্রোতে একাকার হয়ে যায়।

বেলা গড়াতেই বইপ্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে বইমেলা প্রাঙ্গণ। শহীদ মিনারের ভিড় কমে তা মেলায় চলে আসে।   বেলা যতো বাড়তে থাকে মেলায় প্রবেশের জন্য লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। দীর্ঘ লাইন দেখেও প্রাণের মেলায় ঢুকতে মানুষের আগ্রহের কমতি হয়নি।

মানুষের স্রোত বয়ে গেছে বইমেলার বহিরাঙ্গনেও। ফুটপাতে বসে অনেকেই জমিয়ে তুলেছেন সঙ্গীতের আসর। শহীদ দিবসে মানুষের ঢল দেখে অভিভূত হয়েছেন মেলায় আগত বিদেশিরা। বাঙালির ভাষাপ্রেম দেখে তারাও উদ্দীপ্ত হয়েছেন নিজ নিজ ভাষার ভালোবাসায়।

এতো ভিড়ে বই কেনার চেয়ে ঘোরাঘুরিই বেশি হচ্ছে। তবে বই ক্রেতার উপস্থিতিও নেহাত কম নয়। তারা ঠিকই স্টলে স্টলে ঘুরে পছন্দের লেখকের বই নিয়ে ঘরে ফিরেছেন। তবে সকালে ভিড়ের তুলনায় আশানুরূপ বিক্রি হয়নি বলে  মত প্রকাশকদের।

বলাকা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী শরিফা বুলবুল বাংলানিউজকে বলেন, যতো মানুষ মেলায় আসেন তাদের সবাই যে বই কেনেন তা নয়। মানুষের তুলনায় বই বিক্রি না হলেও বই নিয়ে মানুষের আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

এদিকে, ২১ ফেব্রুয়ারির এ দিনে সকাল সাড়ে ৭টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর। এতে সভাপতিত্ব করেন কবি আসাদ চৌধুরী।

বিকেল ৪টায় অমর একুশে গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে অমর একুশে বক্তৃতানুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।

'আবাসন: বিশ্বে ও বাংলাদেশে’ শীর্ষক একুশে বক্তৃতা রাখবেন সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৬
এডি/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।