ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

প্রকাশকদের দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে ফারসীম মান্নানের সমালোচনা

তানিম কবির, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৬
প্রকাশকদের দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে ফারসীম মান্নানের সমালোচনা

বইমেলা থেকে: জোতির্বিজ্ঞানের অমীমাংসিত তমোবস্তু সমস্যা নিয়ে ফারসীম মান্নান মোহাম্মদীর বিজ্ঞান বিষয়ক নতুন বই ‘ডার্ক ম্যাটার’ প্রকাশিত হয়েছে বইমেলায়। প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিলো আরও দু’টি বই।

কিন্তু প্রকাশকদের দায়িত্বহীনতার কারণে একটি বই প্রকাশিত হচ্ছে না এবং অপর বইটিও মেলা চলাকালে ছাপা হয়ে আসবে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে ফারসীমের।

অভিযোগ করে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে প্রকাশকরা ভালো কোনো পরিকল্পনা করে মেলায় নামছেন না। কার্যকর পরিকল্পনাটি হলো, প্রথম দুই সপ্তায় বই বিক্রির হারের ওপর নির্ভর করে তারা অন্য বইগুলোতে হাত দেন। এদিকে লেখককে কিন্তু আশ্বাস দিচ্ছেন যে বই হবে, কিন্তু ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহেও বইয়ের কোনো খবর নেই।
 
তিনি মনে করেন, প্রকাশকের উচিত পারা এবং না-পারার একটা বাস্তবসম্মত হিসাব করে এগোনো। নচেত এভাবে অ্যাডহক ভিত্তিতে কাজ করার কোনো মানে হয় না। বইয়ে ভুল থাকে, লেখক নাখোশ হন, প্রকাশকের সাথে মন কষাকষি হরদম লেগে আছে। পারস্পরিক আস্থাও রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এটা কোনো কাম্য পরিস্থিতি নয়।
 
জানালেন প্রকাশককে পাণ্ডুলিপিও সরবরাহ করা হয়েছিল সঠিক সময়ে। তবুও বই আনতে এমন দেরি বা গড়িমসি অপেশাদারিত্বেরই নমুনা।

ফারসীম বলেন, আমার দুটো পাণ্ডুলিপি তৈরি হয়ে গিয়েছিল প্রায় ৬ মাস আগেই। প্রকাশকের সব “লজিস্টিকস” গুছিয়ে কাজ শুরু করতে ডিসেম্বর লেগে গেলো। তদুপরি যে বইটি প্রকাশিত হয়েছে সেটিও মেলায় এলো ১৮ ফেব্রুয়ারি।
 
জানান, একই সময়ে ছোটদের জন্যও একটি বই লিখেছিলেন তিনি, আর সেটিও সময়মতো প্রকাশককে দেওয়া হয়েছিল। চাহিদা ছিল রঙিন ইলাস্ট্রেশন থাকবে। প্রকাশক নিলেন, বললেন কয়েকজন ইলাস্ট্রেটরকে কাজ দিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি হার মানলেন, বললেন, বই বের করতে পারছেন না মেলার সময়। অথচ বইটি দেওয়া হয়েছিল অনেক আগে।
 
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, গত দুই বছরের লেখালেখির সংকলনে হাত দিয়েছি গত ডিসেম্বরে। বই করবো সেইরকম কোনো পরিকল্পনা ছিল না। একজন প্রকাশক ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে বই প্রকাশের আগ্রহ প্রকাশ করলে সংকলনটি গুছিয়ে প্রকাশকের দরবারে পাঠিয়েছি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। ১৫ দিন পর প্রথম প্রুফ পেয়েছি। কিন্তু অদ্যাবধি আর কোনো সংবাদ নেই।
 
প্রকাশিত একমাত্র বইটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চাইলে ফারসীম বলেন, ডার্ক ম্যাটার বা তমোবস্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানের এক অসমাহিত সমস্যা। এ আছে কিন্তু ধরা যাচ্ছে না, আমরা জানি সে আছে, কিন্তু তবু সে অধরা। এক অদ্ভুত মিস্ট্রি এই তমোবস্তু ঘিরে। তমসাচ্ছন্ন এই বস্তু নিয়েই বইটি। কীভাবে ডার্ক ম্যাটার সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা জানলেন, কীভাবে এটা প্রমিত বিশ্বচিত্রে স্থান পেলো, এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে কী জানে, কতটুকু জানে, কীভাবে জানে, আর কতটুকু জানা যাবে, কীভাবে সেটা জানা যাবে, পদার্থবিজ্ঞানের সর্বাধুনিক এক্সপেরিমেন্ট এবং তার জন্য দরকারি যন্ত্রপাতির সঙ্গে পরিচিতি।

জানান, বইয়ে উপরি হিসেবে থাকছে লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার এবং হিগ্‌স বোসনের আবিষ্কার নিয়ে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা।

বইটির ভূমিকায় তিনি লিখেছেন: ইতোপূর্বে আমার একাধিক গ্রন্থে তমোবস্তুর সমস্যা আলোচিত হয়েছে সংক্ষিপ্ত কলেবরে। বর্তমান গ্রন্থখানি শুধুমাত্র তমোবস্তুর বিষয়খানি নিয়েই রচিত হলো— তমোবস্তুর আবিষ্কারের নেপথ্য কাহিনী, এর সালতামামি, বর্তমান গবেষণার হালহকিকত। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অনুসন্ধান এবং ত্বরকযন্ত্রে তমোবস্তুর খোঁজে কী কী অগ্রগতি হয়েছে, ভবিষ্যতে কী হতে যাচ্ছে সেসব নিয়েই ছোট কলেবরে বইটি রচিত হলো। আশা করি, খুদে বিজ্ঞানী এবং কৌতূহলী তরুণদের জন্য এটি তমোবস্তুর পিপাসা মেটাবে।
বইটি সম্পর্কে একবাক্যে কিছু বলতে বললে ফারসীম বলেন, ডার্ক ম্যাটার নিয়ে এটি বাংলায় লেখা পূর্ণাঙ্গ একটি বই।

বইটির প্রকাশক প্রকৃতি পরিচয়। পরিবেশনা করছে সংহতি। বইমেলায় সংহতির স্টল নাম্বার ৪১৩-১৪। প্রচ্ছদ সব্যসাচী হাজরার। এটি লেখকের ১৯তম বই। বইটি লেখা হয়েছে গত বছরের মার্চ-এপ্রিল সময়ে। বিনিময় মূল্য ১১০ টাকা। ঘরে বসে বইমেলার সব বই পেতে ভিজিট করুন rokomari.com-এ। অথবা কল করুন ১৬২৯৭ নম্বরে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৬
টিকে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।