ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

ক্যাস্ত্রোর জবানবন্দি: ইতিহাস আমাকে মুক্তি দেবে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭
ক্যাস্ত্রোর জবানবন্দি: ইতিহাস আমাকে মুক্তি দেবে প্রচ্ছদ

গত শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে আমৃত্যু অনুপ্রেরণাদায়ী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বিপ্লবী ফিদেল ক্যাস্ট্রোর তাৎপর্য তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়নি। বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সোভিয়েত বলয়ভুক্ত বাকি দেশগুলোর মতো ভেঙে না পড়ে একদিকে পুরো কিউবার অর্থনীতি ও সমাজের পুনর্গঠন এবং বৈশ্বিক সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নতুন দিশা হাজির করে ক্যাস্ত্রো বিশ্বব্যাপী মুক্তিকামী মানুষের কাছে সংগ্রামের প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন।

প্রবল মার্কিন অবরোধ, হুমকি, ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে জাতীয় গণপ্রতিরক্ষার নতুন দৃষ্টান্তই তিনি শুধু স্থাপন করেননি, শিক্ষা-কৃষি-স্বাস্থ্যখাতে কিউবার অর্জন পৃথিবীর মানুষের সামনে বিকল্প সমাজ ব্যবস্থার বাস্তবতাকে হাজির করেছে।

‘ইতিহাস আমাকে মুক্তি দেবে’ গ্রন্থটি আদতে চার ঘণ্টার একটা বক্তৃতা, মোনকাদা দুর্গ আক্রমণের অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে ১৯৫৩ সালের ১৬ অক্টোবর আদালতের সামনে নিজের রাজনৈতিক তৎপরতার পক্ষে যুক্তি তর্ক উপস্থাপনের উদ্দেশ্যেই এর জন্ম।

কিন্তু, আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে ক্যাস্ত্রো কার্যত বিদ্যমান রাষ্ট্র-আইন-ক্ষমতাকেই জেরার মুখে ফেলেছিলেন। অসাধারণ দক্ষতায় তিনি স্বৈরাচারী বাতিস্তা সরকারের অবৈধতা এবং তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ন্যায্যতা কিউবার বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে প্রতিষ্ঠিত করেন।

ফিদেলের আত্মপক্ষ সমর্থনে যুক্তি তর্ক এতটাই ফলপ্রসূ ছিলো যে হামলায় অংশগ্রহণকারী ১৯ জনসহ গ্রেফতারকৃতদের ৬৫ জনকে আদালত শেষ পর্যন্ত খালাস দেয়, ৩১ জনকে অভিযুক্ত করেও লঘু শাস্তিতেই সীমাবদ্ধ থাকে। বিদ্রোহের নেতৃত্ব হিসেবে ফিদেল ক্যাস্ত্রোসহ চার জনকে সর্বোচ্চ ১৫ বছর কারাদণ্ড ঘোষণা করে। কিন্তু রাষ্ট্র খুব বেশিদিন তাদের কয়েদ করে রাখতে পারেনি।

ক্যাস্ত্রো আত্মপক্ষ সমর্থনে ওই বক্তব্য উপস্থিত বক্তৃতা হিসেবে দিয়েছিলেন। পরে জেলে বসেই তিনি এর লিখিত রূপ দাঁড় করান এবং গোপনে বাইরে পাঠান ছাপার জন্য। দ্রুততম সময়ে এই বক্তৃতা ২৫ হাজার কপি হাভানাসহ সারা কিউবায় ছড়িয়ে পড়ে। ক্যাস্ত্রোর পক্ষে জনমত এত তীব্র হয়ে উঠেছিলো যে, অচিরেই জনদাবির মুখে সরকার ক্যাস্ত্রোসহ সবাইকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

বক্তৃতাটি পরিণত হয় ক্যাস্ত্রোর নেতৃত্বাধীন ‘২৬ জুলাই আন্দোলন’-এর ইশতেহারে। এই আত্মপক্ষ সমর্থন একদিকে যেমন ছিলো আদালতের প্রতি ক্যাস্ত্রোর জবাব, একইসাথে তা ছিলো কিউবার জনগণের মুক্তির জন্য একটা রাজনৈতিক আহ্বান।

চিরায়ত রাজনৈতিক সাহিত্যের অংশে পরিণত হওয়া ‘ইতিহাস আমাকে মুক্তি দেবে’ গ্রন্থটি আফসানা বেগমের অনুবাদে প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ অনুবাদ সংসদ। গ্রন্থটির প্রকাশনা ও বিতরণ সহযোগী হয়েছে সংহতি প্রকাশন। অমর একুশে গ্রন্থমেলার ৫৯০ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে বইটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।