বিশেষ করে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীরা সেলফি ফ্যাশনে বেশি আকৃষ্ট। আর যদি মেলায় কোনো তারকার দেখা হয়।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এবং লেখক-পাঠকদের সঙ্গে কথা বলে এমন পরিস্থিতিই স্পষ্ট হয়ে উঠে।
বইমেলায় কথা হলো তরুণ কবি জাহাঙ্গীর হোসাইন বাবলুর সঙ্গে। তিনি বলেন, বর্তমানে ফেসবুকপ্রেমী মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায়, বইপ্রেমী মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। আগে পাঠকরা বই কিনে লেখকদের কাছ থেকে অটোগ্রাফ নিতো, এখন বই কেনা হোক, না হোক তারা ফটোগ্রাফ নেয়, সেলফি নেয়।
বইমেলায় এসে পাঁচটি বই কিনেছেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের কর্মকর্তা শাহজাহান বাদশা সুজন। সবাই নিজেকে প্রকাশ করতে চায়। আর এজন্য বই কেনা সম্ভব হোক আর হোক হালের ভাব বজায় রাখতে সবাই সচেতন বলে মত দেন তিনি।
সেলফির মাধ্যমে সবাই নিজের বিজ্ঞাপন দেয়। এ যুগটা হচ্ছে বিজ্ঞাপনের যুগ। লেখক-পাঠক সবাই নিজের বিজ্ঞাপন নিয়ে ব্যস্ত। এমন কথা বলেন- বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনে কর্মরত সহকারী হিসাব কর্মকর্তা নাইমুল হুদা।
'বই কেনা হয়নি তো কি, তাই বলে বইমেলায় যাবো না, সেলফি তুলবো না, তাই হয়' এমন মন্তব্য করলেন সদ্য মাস্টার্স শেষ করা চাকরিপ্রার্থী মিজানুর রহমান।
মেলায় হাঁটতে-হাঁটতে কাগজ প্রকাশনের স্টল একেবারে ফাঁকা দেখা গেলো। এগিয়ে গিয়ে পরিচয় হলো স্টলটির ম্যানেজার মো. মহিউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি জানালেন, মেলায় যেভাবে মানুষ আসে, সেভাবে বই বিক্রি হয় না। সেইভাবে যদি বই বিক্রি হতো, তবে আমাদের বসে থাকতে হতো না।
বইমেলায় আগত দর্শনার্থীর সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ বই কিনে বলে মন্তব্য করলে, তাতে সায় দেন স্টলটির বিক্রয়কর্মী মো. ইব্রাহিম।
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ছবি কিংবা সেলফিতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। আপত্তি তখনই যখন শেকড়ের টান ভুলে, বই থেকে মুখ ফিরিয়ে কেবলই সেলফিতে মেতে ওঠা।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৭
টিআই/এএটি/