ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

মেলার ১৫তম দিনে ১৪৪ নতুন বই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৮
মেলার ১৫তম দিনে ১৪৪ নতুন বই ছবি: শাকিল-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৫তম দিনে মেলায় নতুন বই এসেছে ১৪৪টি। এর মধ্যে রয়েছে গল্প ২০টি, উপন্যাস ২৩টি, প্রবন্ধ ১০টি, কবিতা ৪৫টি, গবেষণা পাঁচটি, ছড়া পাঁচটি, শিশুসাহিত্য ছয়টি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক দু’টি, নাটক একটি, বিজ্ঞান দু’টি, ইতিহাস তিনটি, স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি, ধর্মীয় দু’টি, অনুবাদ দু’টি, সায়েন্স ফিকশন দু’টি, অন্যান্য ১৪টি।

এদিকে, বহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় 'আরাকান রাজসভায় বাংলা সাহিত্য' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফা।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আহমদ কবির, সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ এবং এম আবদুল আলীম। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল কাইউম।

প্রাবন্ধিক বলেন, ১৯৩৫ সালে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ ও মুহম্মদ এনামুল হকের আরাকান রাজসভায় বাংলা সাহিত্য প্রকাশিত হওয়ায় সপ্তদশ শতকে আরাকানে বাংলা সাহিত্যচর্চার একটি অজ্ঞাত ইতিহাস উদ্ঘাটিত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যের চর্চা বঙ্গদেশের সীমানা ছাড়িয়ে কীভাবে আরাকান প্রসারিত হয়েছিলো তা ইতিহাসবিদদের কৌতূহলী করে তুলেছিলো।

তিনি বলেন, সপ্তদশ শতকে আরাকানে বাংলা সাহিত্যের যে চর্চা হয়েছে তা বাংলার মূল ভূখণ্ড থেকে দূরে। সেখানকার অধিবাসীদের ভাষাও বাংলা নয়। রোসাঙ রাজ্যের আমত্যগণ একটি ভিনদেশি সাহিত্যকে পৃষ্ঠপোষকতা করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। শুধু একজন মন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী নন, একাদিক্রমে অনেকদিন ধরে অনেক আমত্যই বাংলাভাষায় সাহিত্যসৃষ্টির জন্য কবিদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। সম্ভবত আরাকানি ভাষা সাহিত্যের বাহন হিসেবে উপযুক্ত হয়ে না ওঠায় রোসাঙ্গের আমত্যগণ প্রতিবেশী দেশের একটি ভাষার মাধ্যমে তাদের সাহিত্য-রসাস্বদনের তৃষ্ণা মেটাতে চেয়েছেন।

আলোচকবৃন্দ বলেন, আরাকান সংযোগের ফলে বাংলা সাহিত্য নতুন সৃষ্টিসম্ভারে ঋদ্ধ হয়েছে। নতুন ভাব-আঙ্গিকে আমাদের সাহিত্য বিচিত্র ও বর্ণময় হয়ে উঠেছে। ধর্মনির্ভর চিন্তার আধিপত্য ছেড়ে বাংলা সাহিত্য মানুষের মর্ত্যজীবনের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাহন হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে রচিত না হলেও এ সাহিত্যসৃষ্টিগুলো আমাদের সাহিত্য-ইতিহাসের ধারার সঙ্গে সম্পর্কিত।

তারা বলেন, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের পূর্ণতার ধারণা পেতে আরাকান রাজসভায় বাংলা সাহিত্য বইটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল কাইউম বলেন, কলম্বাস যেমন একটি মহাদেশ আবিষ্কার করেছেন, তেমনি আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ আরাকান রাজসভায় বাংলা সাহিত্যচর্চার অনেক বিষয় আবিষ্কার করেছেন। তিনি সহস্রাধিক পুঁথি সংগ্রহ করেছিলেন। তার চিন্তায় হিন্দু-মুসলমান ভেদ ছিল না। তিনি অসাম্প্রদায়িক চিন্তা থেকে সবার পুঁথিই সংগ্রহ করেছিলেন।

সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে মো. মোশাররফ হোসেনের পরিচালানায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘দৃষ্টি’, আনোয়ার হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আরশিনগর বাউল সংঘ’ এবং সাইফুল ইসলামের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উজান’ সংগীত পরিবেশন করেন। এসময় যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন শ্যামা প্রসাদ প্রজুমদার (কী-বোর্ড) ও জয়প্রসাদ সিংহ রায় (তবলা)।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৬তম দিন। এদিন মেলা শুরু হয়েছে সকাল ১১টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। মেলায় সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৮
এইচএমএস/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।