মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমির তথ্যমতে মেলায় নতুন বই এসেছে ১৪৯টি। এরমধ্যে বোধি প্রকাশনালয় থেকে দ্বিজেন শর্মার স্মৃতিকথামূলক ‘সমাজতন্ত্রে বসবাস’, মেলা প্রকাশন থেকে প্রাচীন ভারতীয় পণ্ডিত কৌটিল্যের রাষ্ট্রদর্শন এর আলোকে বিজন হালদারের ‘সফলতার গুপ্ত নীতি’, মম প্রকাশ থেকে ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের সাইন্স ফিকশন ‘জিওমেট্রি’, জোনাকি প্রকাশনী থেকে অনীশ দাস অপুর অনুবাদ ‘দ্য প্রেসিডেন্ট ইজ মিসিং’, উৎস প্রকাশন থেকে শেখ ফজলে এলাহীর গবেষণাগ্রন্থ ‘হবিগঞ্জে রাজনৈতিক ইতিহাস (১৮৭৮-১৯৪৭)’, ভাষাচিত্র থেকে সাদাত হোসাইনের কবিতার বই ‘যেতে চাইলে যেও’, কবিতা চর্চা থেকে মাসুদ পথিকের কবিতার বই ‘অনাহারী ধুলোগণ’, অনন্যা থেকে আনিসুল হকের গল্পগ্রন্থ ‘গল্প সমগ্র’, উৎপল শুভ্রের ভ্রমণ ‘ক্যারিবীয় কড়চা’, হাসান হাফিজের কবিতার বই ‘রমনীয় কুজকের টান’, মুক্তচিন্তা থেকে মুসাহিদ উদ্দিন আহমদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিষয়ক গ্রন্থ ‘মেসোপটেমিয়া থেকে ইরাক’, অন্যপ্রকাশ থেকে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের গল্পগ্রন্থ ‘কয়লাতলা ও অন্যান্য গল্প’, অর্জন প্রকাশন থেকে আলী ইমামের ভিনদেশি লোক কাহিনী ‘গল্প আরো গল্প’, মুক্তধারা থেকে যতীন চট্টোপাধ্যায়ের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থ ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘কবি-অনুবাদক মনিরউদ্দীন ইউসুফ: জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি হাসান হাফিজ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কবি ও বিশিষ্ট লেখক রেজাউদ্দিন স্টালিন, শফিউল আলম এবং মোহাম্মদ আবদুল হাই। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গবেষক মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ।
প্রাবন্ধিক বলেন, বহুমাত্রিক একজন লেখক ছিলেন মনিরউদ্দীন ইউসুফ। সাধারণ কোনো লেখক নন, সাধকই বলতে পারি তাকে। আমৃত্যু ব্রতী ছিলেন জ্ঞান ও সাহিত্য সাধনায়। সুদীর্ঘ সাহিত্যজীবনে তিনি সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় সৃজনকর্মে গভীর অভিনিবেশ, নিষ্ঠা ও মৌলিকত্বের পরিচয় রেখে গেছেন। যে মেধা, ঐকান্তিক অধ্যবসায়ে তার সাহিত্যকৃতি উজ্জ্বল এবং বিচিত্রগামী হয়েছে, আমরা পেয়েছি সোনালি ফসল।
অন্য আলোচকরা বলেন, ‘শাহনামা’ অনুবাদ মনিরউদ্দীন ইউসুফের অসামান্য কীর্তি। এরমধ্য দিয়ে বিশ্বসাহিত্যের ধ্রুপদী সৃজনকর্মের সঙ্গে তিনি বাঙালি মননের যোগাযোগ স্থাপন করেছেন। শুধু এই অনুবাদ নয়, তার কবিতা, প্রবন্ধ এবং অন্যান্য রচনায় একজন সংবেদী মানুষের পরিচয় মুদ্রিত রয়েছে যাকে অনায়াসে শুভ ও কল্যাণ-চেতনার প্রতীক বলে আখ্যায়িত করা যায়।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ বলেন, মনিরউদ্দীন ইউসুফ একজন বিস্মৃত মনীষা। বাংলা একাডেমি তার অনুবাদে ছয় খণ্ডে ‘শাহনামা’ প্রকাশ করছে যা দেশে ও বিদেশে বিপুলভাবে আদৃত হয়েছে। জন্মশতবর্ষে তাকে নিয়ে এ স্মরণ-আয়োজন মূলত তার অসামান্য কৃতির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধার নিদর্শন।
আলোচনা শেষে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি জাহিদুল হক এবং জাহিদ হায়দার। আবৃত্তি পরিবেশন করেন নাজমুল আহসান এবং জিনিয়া ফেরদৌস। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী কল্যাণী ঘোষ, বিশ্বজিৎ রায়, ফারহানা ফেরদৌসী তানিয়া, সানজিদা মাহমুদ নন্দিতা, রাজিয়া সুলতানা, নাজমুল আহসান তুহিন, উম্মে রুমা ট্রফি এবং সঞ্জয় কুমার দাস।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মেলা চলবে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘কবি রফিক আজাদ: শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিশ্বজিৎ ঘোষ।
আলোচনায় অংশ নেবেন অসীম সাহা, ফারুক মাহমুদ এবং জাফর আহমদ রাশেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন রশীদ হায়দার। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
এইচএমএস/এমজেএফ