আলোচনায় ড. হাননান বলেন, ধর্মকেন্দ্রিক শিক্ষাও বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের হতে পারে, এ কথা অনেকেই স্বীকার করতে চায় না। কিন্তু এই বইয়ে সে সত্য তুলে ধরা হয়েছে।
সাংবাদিক আলী হাসান তৈয়ব বলেন, এ বইটি প্রত্যেক জ্ঞানপিপাসু ও ইতিহাস অন্বেষীর সংগ্রহে থাকা জরুরি।
অনুষ্ঠানে লেখক কাসেম শরীফ বলেন, বইটির মুখ্য বিষয় কওমি মাদরাসা হলেও এখানে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠনের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
১৮৬৬ সালে ভারতের দেওবন্দে প্রতিষ্ঠিত দারুল উলুম দেওবন্দের কারিকুলাম অনুযায়ী পরিচালিত ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্রর নাম কওমি মাদরাসা। বাংলাদেশে কওমি মাদরাসার ইতিহাস ১২০ বছরের। কিন্তু ভারতবর্ষে মসজিদ ও মাদরাসাকেন্দ্রিক ধর্মীয় শিক্ষার ইতিহাস হাজার বছরের। এই শিক্ষাব্যবস্থার সংযোগ রয়েছে প্রায় পনেরো শ বছরের ঐতিহ্যবাহী ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে।
২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের উত্থান ও ২০১৮ সালে কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদের স্বীকৃতি এ বিষয়ে সর্বসাধারণের কৌতূহল আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এ গ্রন্থে সেই কৌতূহল দূর করার কিঞ্চিৎ প্রয়াস চালানো হয়েছে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মক্কার জীবন, মদিনার জীবন থেকে শুরু করে খোলাফায়ে রাশেদিন, উমাইয়া, আব্বাসীয়, ফাতেমীয়, স্পেনসহ সব যুগে ইসলামি শিক্ষার ক্রমবিকাশ নিয়ে এটি একটি আকরগ্রন্থ।
দেওবন্দ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, কী পড়ানো হয় কওমি মাদরাসায়, কওমি মাদরাসা জাতিতে কী দিয়েছে, ‘দরসে নিজামি’ কীভাবে এলো, এসব বিষয়ে ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে।
সরকারি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ফলাফল, ব্রিটিশদের প্রণীত শিক্ষাব্যবস্থার ফলাফল ও কওমি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ফলাফল উল্লেখ করা হয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে।
কওমি মাদরাসা ও সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে তুলনামূলক পর্যালোচনা এবং দুটি শিক্ষাব্যবস্থার সুফল-কুফল, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি তুলে ধরা হয়েছে কোনো রাখঢাক ছাড়া। কওমি মাদরাসার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ-অপপ্রচার বনাম বাস্তবতা, কওমি মাদরাসার সনদের স্বীকৃতি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা পাঠকের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। সম্পূর্ণ নতুন ও ভিন্ন চিন্তা থেকে লেখা কওমি মাদরাসার ইতিহাসের আদ্যোপান্ত পাওয়া যাবে এক মলাটে।
বইটি প্রকাশ করেছে বিশ্বসাহিত্য ভবন (স্টল নম্বর ৫০৪-৫০৭)। রয়েল সাইজের ২২৪ পৃষ্ঠার বইটি পাওয়া যাবে ৩০০ টাকায়। বইটির প্রকাশক তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, বইটি রকমারি ডটকমেও পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
এমএমইউ