সব মিলিয়ে পহেলা ফাল্গুন পেরিয়ে ভালোবাসা দিবস- দিন দুইটি খারাপ যায়নি বলেই জানালেন প্রকাশকরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ভালোবাসার মানুষকে বই উপহার দিতে অনেকেই এসেছিলেন গ্রন্থমেলায়।
আর ভালোবাসার দিনে তাদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে ছিল কবিতার বই। সেই সুরেই যেন এদিন মেলায় অন্যান্য বইয়ের তুলনায় কবিতার বই প্রকাশ পেয়েছে সবথেকে বেশি।
বসন্তের দ্বিতীয় দিনে মেলায় নতুন বই এসেছে ১৪৭টি। এর মধ্যে কবিতা ৫০টি, গল্প ২৪টি, উপন্যাস ২৯টি, প্রবন্ধ ৬টি, গবেষণা ১টি, ছড়া ২টি, শিশুসাহিত্য ১টি, জীবনী ৬টি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ২টি, নাটক ১টি, বিজ্ঞান বিষয়ক ১টি, ভ্রমণ ১টি, ইতিহাস বিষয়ক ৩টি, রাজনীতি ২টি, স্বাস্থ্য ১টি, ধর্মীয় ১টি, অনুবাদ ২টি, অভিধান ১টি, সায়েন্স ফিকশন ২টি এবং অন্যান্য ১০টি।
প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে পার্ল পাবলিকেশন্স থেকে মাহবুব জামিল পুলকের কাব্যগ্রন্থ ‘জলপরীর নিঃশ্বাস’, আগামী প্রকাশনী থেকে আবদুল গাফফার চৌধুরী’র প্রবন্ধ ‘বঙ্গবন্ধু আজ যদি বেঁচে থাকতেন’, সৈয়দ মিজানুর রহমানের ইতিহাস গ্রন্থ ‘নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ইতিহাসের অকাট্য দলিল’, উৎস প্রকাশন থেকে আহবাব চৌধুরী খোকনের নিবন্ধ ‘কালের ভাবনা’, কথা প্রকাশ থেকে সেলিনা হোসেনের উপন্যাস ‘সময়ের ফুলে বিষপিঁপড়া’, অনন্যা থেকে উৎপল শুভ্রের ক্রিকেট বিষয়ক গ্রন্থ ‘শুধুই ক্রিকেট’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও বিজ্ঞানভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক ড. ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী।
আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক বিজ্ঞান গবেষক ও লেখক রেজাউর রহমান এবং বিশিষ্ট লেখক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আবদুল কাইয়ুম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।
আলোচকরা বলেন, বাংলা ভাষা সাহিত্য ও বিজ্ঞান ভাবনা কোনো পরস্পরবিযুক্ত বিষয় নয়, বরং আমাদের সাহিত্যে বিজ্ঞানের উপাদান জনমনে বিজ্ঞানবোধ সৃজনে ভূমিকা রেখেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিক ভবিষ্যত নির্মাণে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। তবে আমাদের কেবল প্রযুক্তিগত সমৃদ্ধিতেই সন্তুষ্ট থাকলে চলবে না, বরং গোটা জাতির মাঝে বিজ্ঞানভিত্তিক ইহজাগতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি আমিনুর রহমান সুলতান এবং সাকিরা পারভীন। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী হাসান আরিফ এবং মাহিদুল ইসলাম। সন্ধ্যায় সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী খুরশিদ আলম, সুজিত মোস্তফা, তানভীর সজীব আলম, মুর্শিদুদ্দিন আহম্মদ, আঞ্জুমান আরা শিমুল, মো. রেজওয়ান আহমেদ।
শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিন মেলায় থাকবে শিশুপ্রহর। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়েছে। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী: শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল। আলোচনায় অংশ নেবেন মোহাম্মদ সাদিক, জাহিদ হায়দার এবং সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশ সময়: ২৩০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
এইচএমএস/এমএ