চারদিনে মেলায় ছিল বিপুল সংখ্যক বইপ্রেমী আর দর্শণার্থী। যারা এসেছেন, সবাই বই কিনে ঘরে ফিরেছেন।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিভিন্ন প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের তুলনায় এ চারদিনে বিক্রি বেড়েছে। তারা আশা করছেন মেলার এ সময়টা থেকে বিক্রির ধারা অব্যাহত থাকবে। কেননা ইতোমধ্যেই চলে এসছে প্রায় সব বইগুলো।
অন্যবারের তুলনায় বইয়ের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও পাঠকরা সন্তুষ্ট বইয়ের মানে। এতোদিন যারা বিভিন্ন স্টল ঘুরে তালিকা সংগ্রহ করে বই পছন্দ করছিলেন, তারাও এখন কিনতে শুরু করেছেন নিজেদের বাছাই করা বইগুলো।
শনিবার বাংলা একাডেমির হিসাব মতে মেলায় নতুন বই এসেছে ২০৬টি। এরমধ্যে অন্যপ্রকাশ থেকে পিয়াস মজিদের প্রবন্ধ ‘র্ভদুপুরে বিভূতিভূষণ’, পূরবী বসুর প্রবন্ধ ‘রোকেয়া ও রবীন্দ্রনাথ কাছে থেকেও দূরে’, আনোয়ারা সৈয়দ হকের গল্পগ্রন্থ ‘সেরা দশ গল্প’, অনিন্দ্য প্রকাশ থেকে আবু নাছের টিপুর ‘রূপ লাবণ্যে ভরা দ্বীপদেশ নিউজিল্যান্ড’, অক্ষর প্রকাশ থেকে হাসান হাফিজের কাব্যগ্রন্থ ‘জ্বলো তুমি ৭১’, অনুপম প্রকাশনী থেকে ধ্রুব এষের ‘পাঁচ কিশোর উপন্যাস’, শুদ্ধ প্রকাশ থেকে যতীন সরকার, শওকত আলী ও কামাল লোহানীর ভিন্ন ভিন্ন আত্মজীবনী ‘কিশোরবেলা’, বেহুলা বাংলা থেকে পরিতোষ হালদারের ‘রাত ও রঙ্গণরেখা’ উল্লেখযোগ্য।
প্রতিদিনের মতো বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে আজকের বিষয় ছিল ‘চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর: শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আয়োজন। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মইনুদ্দীন খালেদ। আলোচনায় অংশ নেন ফরিদা জামান, চিত্রশিল্পী নিসার হোসেন এবং মলয় বালা। সভাপতিত্ব করেন শিল্পী হাশেম খান।
প্রাবন্ধিক বলেন, সৈয়দ জাহাঙ্গীর শুধু শিল্পী নন, কর্মবীরও। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগে তিনি দীর্ঘদিন পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার দায়িত্ব পালনের সময়ই এ বিভাগ যেন শৈশব থেকে তারুণ্যে উন্নীত হয়েছে। চারুকলা বিভাগে দায়িত্বকালে সৈয়দ জাহাঙ্গীর দেশের প্রধান শিল্পীদের একক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন। কর্মবীর এ মানুষটির একটি বড় অর্জন এশীয় দিবার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনীর আয়োজন। এ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর ফলে এদেশের শিল্পী ও শিল্পানুরাগী দর্শক বিভিন্ন দেশের ছবি দেখার সুযোগ লাভ করেছে। এ শৈল্পিক আয়োজন আমাদের শিল্পচর্চাতেও এনেছে বিশেষ অভিঘাত।
সভাপতির বক্তব্যে হাশেম খান বলেন, সৈয়দ জাহাঙ্গীর বাংলাদেশের শিল্পকলা আন্দোলনে এক অবিস্মরণীয় নাম। শুধু চিত্রশিল্পে নয়, এদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনেরও তিনি এক অগ্রণীজন।
কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি কাজী রোজী এবং মারুফ রায়হান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তি শিল্পী মুস্তাফা ওয়ালিদ এবং কাজি মাহতাব সুমন। নৃত্য পরিবেশন করেন মৈত্রী সরকারের পরিচালনায় নৃত্যসংগঠন ‘স্বপ্নবিকাশ কলা কেন্দ্র’-এর নৃত্যশিল্পীবৃন্দ। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী লীনু বিল্লাহ, চম্পা বণিক, বশিরুজ্জামন সাব্বির, প্রিয়াংকা বিশ্বাস, অপু আমান।
রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মেলা চলবে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক: শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন খালেদ হোসাইন। আলোচনায় অংশ নেবেন মফিদুল হক, আসাদ মান্নান, শিহাব সরকার, আনিসুল হক।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কবি মনজুরে মওলা। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯
এইচএমএস/এনটি