এদিন সকাল থেকেই শিশুদের নিয়ে বইমেলায় আসেন অভিভাবকেরা। এক স্টল থেকে অন্য স্টলে ঘুরে পছন্দের বই কিনছেন সবাই।
শনিবার মেলায় নতুন বই এসছে ১৮৬টি। এর মধ্যে গল্প ৩৩টি, উপন্যাস ৩০টি, প্রবন্ধ ৭টি, কবিতা ৭২টি, গবেষণা ১টি, ছড়া ৫টি, শিশুসাহিত্য ৩টি, জীবনী ৬টি, মুক্তযুদ্ধ বিষয়ক ২টি, নাটক ১টি, ভ্রমণ বিষয়ক ১টি, ইতিহাস বিষয়ক ২টি, রাজনীতি ২টি, স্বাস্থ্য বিষয়ক ১টি, রম্য ১টি, ধর্মীয় ২টি, অনুবাদ ২টি এবং অন্যান্য ১৬টি।
উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে বইপত্র থেকে এসেছে বলু কবীরের ‘বাঙালির হালখাতা’, কথাপ্রকাশ থেকে আমীরুল ইসলামের গল্পগ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধু ও দোয়েলের গল্প’, কালিকলম প্রকাশনা থেকে সেলিনা হোসেনের গল্প ‘ছোটগল্প’, কাশবন প্রকাশন থেকে আলী ইমামের গল্পগ্রন্থ ‘আলোকিত প্রান্তরে’, নৃ প্রকাশন থেকে আনোয়ারা সৈয়দ হকের কিশোর গল্প ‘ছানা ও নানুজান’, বলাকা প্রকাশন থেকে শরীফা বুলবুলের ইতিহাস বিষয়ক গ্রন্থ ‘অপারেশন ১৯৭১’, পাঠক সমাবেশ থেকে সৈয়দ আবুল মকসুদের কাব্যগ্রন্থ ‘সভ্যতার পতন ও পুনরুদ্ধার’, বাসাপ বর্ণবিন্যাস থেকে আসাদ চৌধুরী’র কাব্যগ্রন্থ ‘জলের মধ্যে লেঘাজোখা’।
বিকেলে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের প্রকাশনা: অতীত ও বর্তমান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাহ্রুখ মহিউদ্দীন। আলোচনায় অংশ নেন ফরিদ আহমেদ এবং এ এফ এম হায়াতুল্লাহ। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।
প্রাবন্ধিক মাহ্রুখ মহিউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশের দীর্ঘ প্রকাশনা-ঐতিহ্যের অঙ্গীকারকে ধারণ করে এদেশের প্রকাশকরা উদ্যোগী হয়ে বিশিষ্ট নাগরিক, বিশেষজ্ঞ ও সত্যিকারের পড়ুয়া ব্যক্তিদের নিয়ে একটি পরিষদ গঠন করুক, যারা বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পের সমস্যার বিভিন্ন দিক নিয়ে ভাববেন, এর অর্থনীতি, রাজনীতির চুলচেরা বিশ্লেষণ করবেন এবং নেতিবাচক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথগুলো দেখিয়ে দেবেন। তাদের সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে আমরা প্রকাশনা শিল্পকে একটা পেশাদার ভিত্তি দিতে পারবো। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে গবেষণা ও সৃজনশীলতার চর্চা বিকশিত হবে এবং সত্যিকারের একটা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ আমরা গড়ে তুলতে পারবো।
আলোচকরা বলেন, বাংলাদেশের প্রকাশনা অতীতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বর্তমানে একটি দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এদেশের ভাষা, শিক্ষা ও সাহিত্যের অগ্রযাত্রার সমান্তরালে প্রকাশনার ব্যাপ্তিও বেড়েছে বহুগুণ; যদিও পূর্ণাঙ্গ শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি এখনও। তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী মুদ্রিত প্রকাশনার আকালের সময়ে বাংলাদেশে মুদ্রিত প্রকাশনা-কেন্দ্রিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্রন্থমেলার আয়োজন প্রমাণ করে এদেশের প্রকাশনাশিল্পের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত ইতিবাচক।
সভাপতির বক্তব্যে শামসুজ্জামান খান বলেন, বাংলাদেশের প্রকাশনা-জগৎ দিন দিন বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং নব-আঙ্গিকে বিকশিত হচ্ছে। উন্নত প্রযুক্তির সংযোজন এদেশের প্রকাশনাকে দিয়েছে নবতর মাত্রা। তবে কেবল একুশের গ্রন্থমেলাকেন্দ্রিক না হয়ে প্রকাশনা যদি বছরব্যাপী চলমান এবং উদ্ভাবনশীল থাকে, তবেই এদেশের প্রকাশনার গুণগত অগ্রযাত্রা নিশ্চিত হবে।
রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪ টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বলধা গার্ডেন: আমাদের উদ্যান-ঐতিহ্য শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মোকারম হোসেন। আলোচনায় অংশ নেবেন হাশেম সূফী, মোহাম্মদ আলী খান, নূরুন্নাহার মুক্তা। সভাপতিত্ব করবেন বিপ্রদাশ বড়ুয়া। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯
এসকেবি/ওএইচ/