ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

ব্যাগ ভর্তি বই নিয়ে ফিরছেন সবাই

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৯
ব্যাগ ভর্তি বই নিয়ে ফিরছেন সবাই

গ্রন্থমেলা থেকে: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের ছাত্রী রেহনুমা ও শারমিন। বান্ধবীদের সঙ্গে অন্য সময় গ্রন্থমেলায় এলেও বই কেনা হয়নি তাদের। শেষ সময়ে এসে দু’জনে কিনলেন হুমায়ূন আহমেদ, জাফর ইকবালসহ জনপ্রিয় লেখকদের বই। দু’হাতে ব্যাগ ভর্তি বই নিয়ে ফিরছেন তারা। 

জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা ইসরাফিল হাসানও কিনেছেন বেশ কয়েকটি বই। শুধু রেহনুমা, শারমিন বা ইসরাফিল নয়, মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলায় আসা অধিকাংশই ব্যাগ ভর্তি বই নিয়ে বাসায় ফিরেছেন।

 

শুরুর দিকে মেলায় বইক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীরা আসতেন বেশি। বইয়ের মলাট দেখে রেখে দিতেন। মেলা শেষ মুহূর্তে আসায় পাল্টে গিয়েছে পরিস্থিতি।  

মাওলা ব্রাদার্সের বিক্রয়কর্মী নাঈম বাংলানিউজকে বলেন, শেষ সময় হওয়ায় আজকে বিক্রি ভালো। সবাই বই কিনছেন। বৃষ্টি না হলে আগামী দু’দিনও ভালো বিক্রি হবে বলে তিনি জানান।
 
অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২৬তম দিনে আজ বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা থেকে নতুন বই এসেছে ১৮৫টি। এর মধ্যে গল্পগ্রন্থ এসেছে ২০টি, উপন্যাস ৩১টি, প্রবন্ধ ১২টি, কবিতা ৫৬টি, গবেষণা ৭টি, ছড়ার বই ৮টি, শিশুসাহিত্য ৬টি, জীবনী ১১টি, রচনাবলী ২টি, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বই ২টি, নাটক ৫টি, বিজ্ঞান বিষয়ক বই ২টি, ভ্রমণকাহিনী ২টি, ইতিহাস ২টি, রাজনীতি ১টি, চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য ২টি, রম্য/ধাঁধা ১টি, ধর্মীয় ১টি, অনুবাদ ১টি, এবং অন্যান্য গ্রন্থ এসেছে ১২টি।
 
বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় চলচ্চিত্রজন মৃণাল সেন, আমজাদ হোসেন ও আনোয়ার হোসেন: শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাজেদুল আউয়াল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ম. হামিদ, তপন বাগচী এবং বিধান রিবেরু। সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ হাসান ইমাম।
 
প্রাবন্ধিক বলেন, মৃণাল সেন, আমজাদ হোসেন ও আনোয়ার হোসেন এই তিন চলচ্চিত্রজন পশ্চিম ও পুবের চলিচ্চিত্রশিল্পকে দেশীয় প্রেক্ষিতে যেমন ঋদ্ধ করেছেন, তেমনি বৈশ্বিক পরিমণ্ডলেও পরিচিতি দিয়ে গেছেন। তিনজনই তাদের সময়ে ঘটতে থাকা সমাজ-ইতিহাসকে তাদের স্ব স্ব ক্ষেত্রের কাজের মাধ্যমে শাসন করেছেন এবং নিজেদের সক্ষমতার সাক্ষার গেছেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন মানে নিজেদের গর্বিত ইতিহাসকে সামনে আনা। একইসঙ্গে সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি ও সাহস সঞ্চয় করা।

আলোচকবৃন্দ বলেন, মৃণাল সেন, আমজাদ হোসেন ও আনোয়ার হোসেন বৃহৎ বাংলা চলচ্চিত্র-বিশ্বের তিন স্মরণীয় নাম। ভিন্ন প্রেক্ষিতে কাজ করলেও তাদের চলচ্চিত্রকর্মের মধ্যে অভিন্ন ঐক্যও পরিলক্ষিত হয়। এই ঐক্য মানবিক বোধ এবং সাধনার। মৃণাল সেনের চলচ্চিত্রে যেমন ফুটে উঠেছে মধ্যবিত্তের পলায়ন এবং সংগ্রামের আখ্যান তেমনি আমজাদ হোসেনের চলচ্চিত্রে অমর একুশে থেকে বাংলাদেশের নিত্যকার বাস্তব উদ্ভাসিত হয়েছে অনন্য ব্যঞ্জনায়। অন্যদিকে চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণে আনোয়ার হোসেন যে বিশিষ্টতার পরিচয় দিয়েছেন তা তুলনারহিত।
 
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, মৃণাল সেন, আমজাদ হোসেন ও আনোয়ার হোসেন এই তিন গুণী চলচ্চিত্রজনকে অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে হারিয়েছি আমরা। বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ ঋদ্ধ হয়েছে তাদের নানামাত্রিক ও বহুবর্ণিল অবদানে। বাংলা একাডেমি একুশের আয়োজনে তাদের স্মরণ করে আমার সবার শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের সুযোগ করে দিয়েছেন।  
 
বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) গ্রন্থমেলা চলবে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বইমেলা: উদ্যোগ ও অর্জন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন শাহিদা খাতুন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ওসমান গণি, রেজানুর রহমান, ফরিদ আহমদ দুলাল এবং জালাল আহমেদ। সভাপতিত্ব করবেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৯
এসকেবি/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।