ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

বইমেলা নিয়ে তরুণদের প্রত্যাশা আরও কিছুটা বেশি

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২০
বইমেলা নিয়ে তরুণদের প্রত্যাশা আরও কিছুটা বেশি

ঢাকা: অন্যান্যবারের তুলনায় বড় পরিসরে আয়োজিত এবারের একুশে বইমেলা তুলনামূলক পরিপাটি আর নান্দনিক। এ নিয়ে খুশি বেশিরভাগ দর্শনার্থীই। তবে অনেক তরুণেরই প্রত্যাশা আরেকটু বেশি। তারা চান মেলা আরও গোছানো, আরও নান্দনিক হোক। আর মনোযোগ দেওয়া হোক মেলায় প্রকাশ পাওয়া বইয়ের মানের ওপর। 

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাদেমি বইমেলা ঘুরে বিভিন্ন তরুণ পাঠকের কথায় এরকম আলাপ আলোচনাই উঠে এলো।  

তরুণ পাঠক সাইফুর রহমান বলেন, লেখার মান তো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

এর সঙ্গে কাগজের মান, প্রচ্ছদ, ছাপা, সম্পাদনা, বানানসহ অন্যান্য বিষয়গুলোর প্রতিও অনেক মনোযোগ দেওয়া উচিত প্রকাশকদের। পাঠকরা নতুন লেখকের বইয়ের প্রতি আগ্রহী হয় প্রথমত বইয়ের বাহ্যিক অঙ্গসজ্জা দেখে। ফলে এ ব্যাপারটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।  

‘এই মেলাটা আমাদের প্রাণের মেলা। সারা বছর এ মেলার জন্যই অপেক্ষা থাকে আমাদের। ইতোমধ্যেই এই মেলা আমাদের দেশকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করেছে। ফলে একে ঘিরে আমাদের প্রত্যাশাও বেশি। ’

তরুণ তথ্যচিত্র নির্মাতা এলিজা বিনতে এলাহী বলেন, বইমেলা দেখছি, ভালোই লাগছে। এই ভালো লাগাটাই আমাকে এখানে টেনে নিয়ে আসে। এখানে ঘুরে ঘুরে বই সংগ্রহ করতে পারি। তবে বইমেলাকে আরেকটু সিস্টেমেটিক, ম্যাপটা আরো একটু সুন্দর করে রাখা, স্টলগুলো আরেকটু নান্দনিক হতে পারে।

‘এছাড়া বিভিন্ন ধরনের বই অনুসারে চত্বর করা যেতে পারে। যেমন ভ্রমণ বিষয়ক বই যারা বেশি প্রকাশ করে, তাদের জন্য একটা আলাদা চত্বর থাকতে পারে। যারা ইতিহাসের বই বেশি প্রকাশ করে তাদের জন্যও হতে পারে একটা আলাদা চত্ত্বর। এভাবে বিষয়ভিত্তিকভাবে আলাদা আলাদা চত্বর তৈরি করা যেতে পারে। যদিও বিষয়টা কষ্টকর, তবুও বিদেশে মেলাগুলো যেভাবে হয়, সেভাবে ক্লাসিক, মডার্ন হিস্ট্রি, কথাসাহিত্য এভাবে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে মেলাকে সাজানো যেতে পারে। এতে করে পাঠকদের জন্য বই খুঁজে পেতে আরেকটু সুবিধা হয়। ’

এ প্রসঙ্গে কথা সাহিত্যিক ও মনোবিদ মোহিত কামাল বলেন, একটা প্রকাশনী তো সাধারণৎ বিভিন্ন ধরনের বই প্রকাশ করে। তবে এটা ঠিক যে, কিছু প্রকাশনী নির্দিষ্ট বিষয়ের বইয়ের জন্য বেশি পরিচিত। নিজেদের সে সব বই পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রকাশনীরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। তারা যদি নিজেদের প্রচারণাটা ভালোভাবে করে তাহলে সেই স্টলে গিয়ে সহজেই পাঠকরা ওই বইগুলো খুঁজে পেতে পারে। কিন্তু বইয়ের ক্যাটাগরি অনুযায়ী চত্বর করার দাবি পূরণ কষ্টসাধ্য। তবে একটা সময় এমন হবে বলেও আমরা আশা রাখতে পারি।

মেলাকে আরও আকর্ষণীয় করতে কী কী করা যেতে পারে  জানতে চাইলে এ লেখক বলেন, এখন বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দুই অংশেই মেলা চলছে। পুরো মেলা উদ্যানে আনা হয়নি। কারণ, আমরা বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজের সঙ্গে নাড়ীর সম্পর্কটা ছিন্ন করতে চাই না। তো এ ক্ষেত্রে মেলার দুই অংশকে যুক্ত করতে উড়াল সেতুর মতো ব্যবস্থা করা যেতে পারে। হয়তো ৫/৭ বছরের মধ্যে তেমন কিছু হবে, তাতে করে মেলাটা উপস্থাপনা আরও নান্দনিক হবে। এছাড়া স্টলের ডিজাইন, বিন্যাসে কিছু বদল আনা যেতে পারে।  

মঙ্গলবার বইমেলার তৃতীয় দিনেই মেলা বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে। অনেকেই এসেছেন মেলায়, কিনছেন পছন্দের বই। সন্ধ্যার পর ভিড় আরও বাড়তে থাকে, অনেকেই নতুন বইয়ের গন্ধে ছুটে আসোতে থাকেন বইমেলায়। অন্যদিকে ব্যাগভর্তি বই নিয়েও বাড়ি ফিরতে দেখা যায় অনেককে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২০
এইচএমএস/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।