বইটি মেলায় এনেছে প্রকাশনা সংস্থা- উড়কি। এর নামলিপি ও প্রচ্ছদ রূপায়ণ করেছেন- সঞ্জীব চৌধুরী।
কবিতার এ বইটির মূল বক্তব্য বা উপজীব্য জানতে চাইলে সুহৃদ শহীদুল্লাহ বলেন, কবিতার বইয়েল মূল বক্তব্য বলা তো মুশকিল। গত তিনটি বই আমার একটি একটি সময়পর্বের প্রকল্প বলা যায়। কবিতার পাশাপাশি বইয়ের কাঠামো নিয়েও নীরিক্ষা চালানো জরুরি বলে মনে হয় আমার। সেজন্য এই সময়পর্বের প্রকল্প। এ বইটিতে ৯টি অধ্যায় রয়েছে। প্রতিটি অধ্যয় স্বয়ংসম্পূর্ণ আবার একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। একেকটি অধ্যায় আমার সাথে সম্পর্কিত মানুষগুলোর সাথে আমার আত্মিক ও শারীরিক বোঝা-পড়া। নিজের সাথে নিজেরও। প্রতিটি অধ্যায়ে কাঠামোগতভাবে মিল আছে। অধ্যায়ের চরিত্রকে নিয়ে 'ফিকশন' দিয়ে শুরু আর প্রশ্ন দিয়ে শেষ।
‘বইটি প্রকাশ করে ঠিক করেছি কিনা সে ব্যাপারে আমি এখনো নিশ্চিত নই। কেননা, এই প্রথম আমি সার্বিক অর্থে নিজের পাশাপাশি আমার সাথে সম্পর্কিত মানুষগুলোকেও প্রকাশ্যে আনলাম। সেটা করার কোনো নৈতিক অধিকার আমার আছে কিনা, বইটা প্রকাশ করার আগে হয়তো আরেকবার ভাবা উচিৎ ছিল। ’
এ প্রসঙ্গে কবি আরও বলেন, কোনো একটা উপন্যাস লেখার প্রক্রিয়ার ব্যাপারে কথাসাহিত্যিক সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন যে, নিজেকে জবাই-করা ছাগলের মতো সামনে ঝুলিয়ে চাকু দিয়ে চামড়া ছিলার মতো নিজের চামড়া ছিলে ছিলে লেখা। এই বইয়ে আমারও হয়তো তেমনি। পার্থক্য শুধু নিজেকে জবাই করে ঝুলানোর পাশাপাশি আমি সাথে সাথে সম্পর্কিত মানুষগুলিকেও ঝুলিয়ে দিয়েছি। মরা-চোখে তাকিয়ে দেখি তাদের ক্ষমাসুন্দর মুখ আমার দিকে ক্ল্যাসিক হেঁয়ালিতে বাঁকা হয়ে আছে। ক্ষমা চাওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছি আমি। আমার জন্য শাস্তি হিসেবে থাকল তাই এই অনন্ত ঝুলের শূন্যতা। এই বই সে-অর্থে বিপজ্জনক। কেননা, কবিতাগুলোর সাথে নিজেকে সম্পর্কিত করে ফেললে পাঠক-পাঠিকাদেরও একই অভিজ্ঞতার ভেতর ঝুলে থাকতে হতে পারে।
সুহৃদ শহীদুল্লাহর আগের বইগুলো হলো- কবিতা: উদীয়মান সমাধিশিবির (উলুখড়, ২০১৬), শরীর, সর্বস্ব তুমি (উলুখড়, ২০১৪), জলপাই, স্নেহ ও শর্করা, (উলুখড়, ২০১২), আমার যুদ্ধাপরাধের কাহিনীসকল (শিরদাঁড়া, ২০১৭), ঈশ^রের অটোবায়োগ্রাফি (কবিতা পাক্ষিক, কলকাতা, ২০০০)। এছাড়া লিন্দা মারিয়া বারোসের অনুবাদে ২০১৮ সালে ফরাসি ভাষায় প্রকাশ পেয়েছে এ লেখকের কবিতার বই- ল্যু'দর দ'ন্তিসেপতিক অমপয়েনে লা ভিলে। অনুবাদ: হাইওয়ে ও অন্যান্য কবিতা/ লিন্দা মারিয়া বারোস (ভাষালিপি, কলকাতা, ২০১৮), রেজর বেøডে তৈরি বাড়ি/ লিন্দা মারিয়া বারোস (উলুখড়, ২০১৭), তরুণ কবির প্রতি চিঠি/ রাইনার মারিয়া রিলকে (শিরদাঁড়া, ২০১১)। সম্পাদনা: তরুণ কবিকে বলি (উলুখড়, ২০১৯ ও ভাষালিপি, কলকাতা ২০১৯)।
১৯৭৫ সালে কুষ্টিয়ায় জন্ম সুহৃদ শহীদুল্লাহর। তিনি বর্তমানে 'নেটজ পার্টনারশিপ ফর ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড জাস্টিস' নামের একটি জার্মান সংস্থার বাংলাদেশ কার্যালয়ে কর্মরত।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০
এইচজে