অমর একুশের দিনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জনস্রোত আছড়ে পড়ে বইমেলা প্রাঙ্গণে। এ ভিড় ছাপার আখরে বর্ণনাতীত।
প্রতিবারের মতো এবারও অমর একুশে বইমেলার সবচেয়ে দীর্ঘতম দিন ছিল একুশে ফেব্রুয়ারি। সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে চলবে একুশের ভাষা শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠিত বইয়ের এ মেলা।
শুক্রবার ভোর থেকে রাজধানীবাসীর গন্তব্যস্থল ছিল শহীদ মিনার। হৃদয়ের অর্ঘ্য নিবেদন করে তারা ছুটে আসে বইমেলা প্রাঙ্গণে। এরপর থেকে সারাদিনই ভিড়। যত মানুষ ভেতরে অবস্থান করেছেন, তার চেয়েও বেশি মানুষ বইমেলা প্রাঙ্গণের বাইরে ঘুরে ফিরেছেন।
শুক্রবার মেলায় আগতদের কথন ও বসনে ছিল অমর একুশের চেতনার ছাপ। সাদাকালো শাড়ি, পাঞ্জাবি আর সালোয়ার কামিজ পরা নারী-পুরুষ-শিশুর স্রোত যেন মাতৃভাষার বিশাল এক ক্যানভাস। যাতে বড় বড় লাল আর হলুদ রঙে ফুটে উঠেছে ‘অ’, ‘আ’, ‘ক’, ‘খ’সহ নানা বর্ণমালা।
পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়স্বজন, তরুণ-তরুণী দলবেঁধে হাজির হয়েছিলেন বইমেলায়। বাবার কাঁধে চড়ে শিশু-কিশোররাও এসেছিল সংস্কৃতির টানে, ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিনে মেলা প্রাঙ্গণে তাই সারাদিনই ছিল মানুষের ঢল।
একদিকে, শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর। অন্যদিকে দোয়েল চত্বর। আরেকদিকে সেই নীলক্ষেত। সবদিক থেকেই মানুষের আগমন ঘটেছিল। প্রবেশ পথ অনেকগুলো হওয়ায় দীর্ঘ সময় না হলেও, বেশ কিছুক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে তবেই প্রবেশ করতে হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণে। এত ভিড়ে বই বিক্রিও নেহাত কম হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রকাশকরা।
কেমন হলো একুশের দিনের মেলা- প্রশ্নের উত্তরে অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, একুশের দিন সময় যত গড়িয়েছে, ভিড় ততই বেড়েছে। ভিড়ের তুলনায় বিক্রি তেমন হয়নি। তবে এ দিন শুধু বই কেনাবেচার না। একুশের চেতনায় মানুষ নিজেকে শাণিত করে নেয়, এও কম কিসের?
তীব্র এই ভিড় ঠেলে কথা হয় মোহাম্মদপুর থেকে আগত সুমাইয়া মাহজেবিনের সঙ্গে। বাংলানিউজকে বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির দিন মেলায় আসার মধ্যে একটা ভিন্ন অনুভূতি কাজ করে। সেজন্যই বন্ধুদের সঙ্গে এসেছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
ডিএন/টিএ