পাবনা: প্রতিবছর ভাষার মাসে বইমেলা শুরু হয় রাজধানী ঢাকায়। সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে জেলা শহর পাবনাতেও হয়ে থাকে এই বইমেলা।
সোমবার (০১ মার্চ ২০২১) সন্ধ্যা থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্র বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল পৌর মুক্তমঞ্চ (টাউন হল) ময়দানে শুরু হয়েছে বইমেলা।
শতবর্ষী এই জেলায় প্রতি বছরই বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে, আয়োজনে রয়েছে পাবনা বইমেলা উদযাপন পরিষদ। রাজধানী ঢাকার বাইরে মফঃস্বল শহরে এই জেলাতেই সবচেয়ে বড় বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে বিকেল পৌনে ৬টায় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পাঠের মাধ্যমে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত দুই জন এর মধ্যে সাংবাদিক কলামিস্ট রণৈশ মৈত্র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট গোলাম হাসনাইন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বইমেলা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কমরেড জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন- সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু এমপি।
তিনি বলেন, বই আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। আর বইমেলা বাঙালি সংস্কৃতির অংশ। রাজধানী ঢাকার পরেই এ জেলায় সবচেয়ে বড় বইমেলা উদযাপন হয়ে আসছে।
এসময় তিনি আফসোস করে বলেন, বর্তমান ফেসবুক ইন্টারনেটের যুগে যুব সমাজ বইপড়া থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে, ছেলেমেয়রা বই পড়তেই চায় না। তারা শুধু ইন্টারনেট নিয়ে বসে থাকে। বইপড়া শূন্যের কোঠায় নেমে আসছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহিত্যিক তৈরির জন্য বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেছেন, হাজার হাজার লাইব্রেরি গড়ে গেছেন, তিনি সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার ভাবনা, মাদক, সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করে গেছেন, সেই থেকেই তার সুযোগ্য কন্যা এই দেশটা এগিয়ে নিতে কাজ করছেন। ১৯৪৮ সালে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়। বর্তমানে এ দেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর হয়েছে।
এ সময় আরো বক্তব্য দেন- জেলা আওয়ামী লীগে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লাল, পাবনা পৌরসভার মেয়র শরিফ উদ্দিন প্রধান, নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক ইদ্রিস আলী বিশ্বাস, পাবনা বার সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট বেলায়েত আলী বিল্লু, নাট্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন মেলা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, সাংবাদিক কলামিস্ট হাবিবুর রহমান স্বপন।
উদ্বোধনী আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা কয়েকটি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। আয়োজকরা জানান, বইমেলার সঙ্গে একযোগে চলবে দুর্লভ বইয়ের প্রদর্শনী। পাঠক ও দর্শনার্থীরা বই কেনার পাশাপাশি পরিচিত হতে পারবেন ঐতিহাসিক পুস্তকের সঙ্গে।
প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে মেলামঞ্চে হবে বই নিয়ে আলোচনা। আলোচনায় জেলার বিভিন্ন এলাকার শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পাঠকেরা অংশ নেবেন। এছাড়া থাকবে জেলার লেখকদের নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক।
একইসঙ্গে এই বছরের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত সাহিত্যিক গোলাম হাসনাইনকে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
এবারের বইমেলায় ৪৪টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বইমেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করা যাবে। সবাইকে মাস্ক পড়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেলায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন। সর্বশ্রেণির জন্য টাউন হল ময়দান উন্মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২১
আরএ