ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

কথার ঝুড়ি নিয়ে বাড়ি ফেরা বইপ্রেমীদের

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২
কথার ঝুড়ি নিয়ে বাড়ি ফেরা বইপ্রেমীদের ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: সাদা জমিনের উপর বাংলা বর্ণমালা আঁকা শাড়ি পরে সেজেছে তৃপ্তি। তারপর বাবার হাত ধরে এসেছে বইমেলায়।

বাবাও খুব যত্নে তাকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিল বাংলা বই আর বর্ণমালার সঙ্গে।

সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে তৃপ্তির মতো আরও অনেকেই এসেছিল অমর একুশে বইমেলায়। খালি পায়ে, কপালে বাধা সাদা কাপড়ে অমর একুশ এঁকে, কেউবা আবার গালে রঙ-তুলির আঁচড়ে বাংলাদেশের পতাকা অথবা বর্ণমালা এঁকেছে। তারপর প্রভাতফেরি শেষে বইমেলায় এসেছে সবাই।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এদিন বইমেলার দুয়ার খুলে দেওয়া হয় সকাল ৮টায়। তখন থেকেই বইপ্রেমীরা মেলায় আসতে শুরু করেন। একুশের শোক আর শ্রদ্ধায় প্রায় সবাই আজ পরেছে সাদাকালো পোশাক।

ক’দিন আগে বসন্তের প্রথম দিনে মেলা যেমন বর্ণিল হয়ে উঠেছিল বাসন্তি রঙে, তেমনি একুশের দিনে মেলায় আগতদের মার্জিত পরিপাটি পোশাকে স্পষ্ট একুশের ছাপ। তেমনই একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শ্যামলী আক্তার। শহীদ মিনারে বন্ধুদের সঙ্গে ফুল দিয়ে সরাসরি মেলায় ঢুকেছেন। কিনেছেন হেলাল হাফিজের কবিতার বই।

কথা হলে তিনি বলেন, একুশ তো আমাদের অহংকার। আজ বন্ধুদের সঙ্গে সকালে শহীদ মিনারে এলাম ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে। সেখান থেকেই বন্ধুদের নিয়ে বইমেলা। কিছু বই কিনেছি, এখন ঘোরাঘুরি করছি। বইমেলা থেকে বের হবার আগে আরও অনেকগুলো বই কেনার ইচ্ছে আছে।

সুদূর শহীদ মিনার থেকে ভেসে আসে মাইকের আওয়াজ। সে আওয়াজ শোনা যায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকেও। সুর ওঠে- ‘মাগো, ওরা বলে সবার কথা কেড়ে নেবে/তোমার কোলে শুয়ে গল্প শুনতে দেবে না/ বলো, মা, তাই কী হয়? তাইতো আমার দেরি হচ্ছে/ তোমার জন্য কথার ঝুড়ি নিয়ে তবেই না বাড়ি ফিরবো। ’

সেদিন মায়ের জন্য কথার ঝুড়ি নিয়ে ফেরা না হলেও মুখের ভাষাকে কেড়ে নিতে দেয়নি বাংলার দামাল ছেলেরা। জীবন তুচ্ছ করে মায়ের ভাষার, মুখের ভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছিল রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বার। আর সে সূত্রকেই আজ যেন আবার সত্যি করছে বর্তমান সময়ের সন্তানরা। তাইতো বইমেলা থেকে ব্যাগভর্তি বই নিয়ে বাড়ি ফিরছেন তারা। তাইতো আজ সবারই একটু দেরি হবে বাড়ি ফিরতে।

এদিকে প্রকাশকরাও আশা করছেন আজ মেলা জমজমাট হবে। টিএসসি আর শাহবাগের মতো জনস্রোত নামবে বইমেলার প্রাঙ্গণেও।

এ প্রসঙ্গে ইন্তামিন প্রকাশনীর প্রকাশক এস এম ইউনুস বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির দিন বইমেলার প্রতি সবার একটু আলাদা আগ্রহ থাকে। শহীদ মিনার থেকে সব বইপ্রেমীরা একবারের জন্য হলেও বই মেলায় এসে ঢু মেরে যান। আর সঙ্গে নিয়ে ফেরেন নিজের পছন্দের বইটি। অন্যান্যবারের মতো আজকেও বইমেলাতে বইপ্রেমীদের আগমন অনেক বেশি হবে এবং বইয়ের বিক্রিও বাড়বে বলে আশা করছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।