ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

মা হতে যাচ্ছে 'সখিনা'

সুমন সিকদার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৫
মা হতে যাচ্ছে 'সখিনা' ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

তালতলী থেকে ফিরে: রাখাইন অধ্যুষিত তালতলী উপজেলার টেংরাগিরি সংরক্ষিত বনের সোনাকাটা ইকোপার্ক কুমির প্রজনন কেন্দ্রের  কুমির 'সখিনা' মা হতে যাচ্ছে। সোনাকাটা ইকোপার্কের কুমির প্রজনন কেন্দ্রের এ কুমির প্রথমবারের মতো ডিম দেওয়ায় এমন আশা বনবিভাগের।



জুন মাসে কুমির সখিনাকে ডিমে তা দিতে দেখা যায়। কুমিরটি ২৫/৩০টি ডিম দিয়েছে বলে ধারণা বনবিভাগের। এই ডিম থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে প্রাকৃতিক নিয়মে যদি বাচ্চা না আসে তবে পরবর্তী বছর থেকে ইনকিউবেটরের মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে ডিম ফুটানোর ব্যবস্থা করা হবে।

ইকো-ট্যুরিজমে সুযোগ বৃদ্ধি শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীনে টেংরাগিরি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সখিনা বিটে ২০১১-১২ অর্থবছরে একটি ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়। টেংরাগিরি বনাঞ্চলের অভয়ারণ্যে আটটি হরিণ, ২৪টি শুকর, আটটি চিতাবাঘ, দু'টি অজগর এবং দু'টি সজারু ছাড়া হয়। সেই সঙ্গে এখানে একটি কুমির প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন করে তিনটি কুমির ছাড়া হয়। কুমির তিনটির নাম দেওয়া হয়- টেংরা, গিরি ও সখিনা। এর মধ্যে টেংরা মারা যায়।

সম্প্রতি সখিনা ডিম দেওয়ায় বাচ্চা হওয়ার আশা করছে বনবিভাগ। প্রতিদিন কুমিরের ডিম দেখতে আসছে দর্শনার্থী। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে দর্শনার্থীদের থেকে দূরে রাখা হয়েছে কুমিরের ডিম। এখানে প্রাকৃতিক নিয়মে কুমির নিজেই ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটানোর চেষ্টা করছে। তবে ,এখান থেকে সাতটি ডিম আলাদা করে হিপ পদ্ধতিতে বালি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে।

বরিশাল থেকে আসা দর্শনার্থী খাইরুল বাশার আশিক বাংলানিউজকে বলেন, কুমির ডিম দিয়েছে শুনে মনের মধ্যে একটা আনন্দ অনুভব করছি। হয়তো কয়েক বছরের মধ্যে এ জায়গাটা কুমিরের জন্য বিখ্যাত হয়ে যাবে। করমজলের মতো এই কুমির প্রজনন কেন্দ্রটিও ভবিষতে সমাদৃত হবে।

স্থানীয় আদিবাসী খেমংলা বলেন, একটি কুমির মারা যাওয়ায় স্থানীয়রা হতাশ হয়ে পড়েছিল। তবে নতুন করে আশা জাগিয়েছে কুমির সখিনা। আমরা তালতলীবাসী কুমির সখিনা মা হওয়ার সংবাদে আনন্দিত।

টেংরাগিরি সংরক্ষিত বনের সখিনা বিট কর্মকর্তা সজিব কুমার মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, কুমিরের ডিম দেখার সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। এ বছর প্রাকৃতিক উপায়ে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যেহেতু প্রথম ডিম দিয়েছে তাই কৃত্রিম উপায় অবলম্বন করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী বছর থেকে ইনকিউবেটরে ডিম ফোটানোর ব্যবস্থা করা হবে।

করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রের কুমির বিশেষজ্ঞ জাকির বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু এখানে প্রথম বার ডিম এসেছে তাই কোনো কৃত্রিম উপায় ব্যবহার করা হয়নি। তাই, ডিম থেকে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

তিনি আরো বলেন, কৃত্রিম উপায়ে কুমিরের ডিম থেকে বাচ্চা আসতে প্রায় ৮০/৮৫ দিন সময় লাগে। যেহেতু প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চা হবে তাই ৯০ দিন পর্যন্ত খোঁজ রাখতে হবে। বাচ্চা এলে সেগুলোকে আলাদা করে ফেলতে হবে।

পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মিহির কুমার বাংলানিউজকে বলেন, ডিম দেওয়ার খবর পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৫     
এমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।