গাছ কাটার মহোৎসবের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে মৌলভীবাজার পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির নাম। প্রকৃতিপ্রেমী আর পরিবেশবাদীদের তীব্র আপত্তির তীর এখন এ প্রতিষ্ঠানটির দিকেই।
পর্যটননগরী ও চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল। এখানে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি পর্যটকে মুখরিত থাকে সৌন্দর্যের এ লীলাভূমি। এখানে রাস্তার দু’পাশে লাগিয়ে রাখা কৃষ্ণচূড়া গাছগুলোতে ফুল ফুটলে বাড়বে এ পর্যটননগরীর নৈসর্গিক শোভা। অপরদিকে বৈদ্যুতিক খুটি বসানোর নামে এই মূল্যবান গাছগুলোকে কেটে ফেললে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে পরিবেশ-প্রতিবেশ।
শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের এক পাশে নতুন বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানো কাজ চলছে। এখানের গাছগুলো কাটার উদ্যোগ নিলে স্থানীয় পরিবেশপ্রেমীদের প্রবল আপত্তির মুখে তা সাময়িকভাবে জন্য বন্ধ রয়েছে।
সম্প্রতি শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ উপজেলার সংযোগ সড়ক ও শ্রীমঙ্গল শহরতলীর ভানুগাছ সড়কে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের বধ্যভূমির সামনে থেকে বিটিআরআই এর প্রবেশমুখ পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগানো। ছোট-বড় গাছগুলো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। এই গাছগুলোর পাশে মৌলভীবাজার পল্লিবিদ্যুৎ সমিতি বৈদ্যুতিক লাইন নেওয়ার জন্য খুঁটি বসিয়েছে। সড়কটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় জায়গা।
আগামী বছরই ফুল ফুটবে। কৃষ্ণচূড়ার লালে রঙিন হয়ে থাকবে পথ। যেভাবে বিদ্যুতের লাইন টানার জন্য খুঁটি বসানো হচ্ছে অবশ্যই কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো তখন কাটা হবে। পল্লিবিদ্যুৎ ইচ্ছে করলে অন্য জায়গা দিয়ে খুঁটি বসিয়ে লাইন নিতে পারে। কিন্তু তা তারা করছে না।
মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমি মৌলভীবাজারের পল্লিবিদ্যুৎ সমিতিকে তীব্র আপত্তি জানিয়েছি। আমরা এখানকার গাছপাল ধ্বংস করে এখানে খুঁটি বসাতে দেবো না। বাফার জোন ছাড়া সংরক্ষিত বনের ভিতর দিয়ে কোনো অবস্থাতেই বৈদ্যুতিক লাইন টানা যাবে না। এতে মূল্যবান বন্যপ্রাণীদের মারাত্মক ক্ষতি হবে। পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে।
মৌলভীবাজার পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) শিবু লাল বসু বাংলানিউজকে বলেন, বৈদ্যুতিক এ লাইনটাকে আপডেট করা হচ্ছে। ওই লাইনটা সিঙ্গেল সার্কিট ছিল; এখন ৩৩ কেভির ডাবল সার্কিট করা হচ্ছে। আমি বলেছি, গাছগুলো না কাটার জন্য। প্রয়োজনে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো একটু সরিয়ে যদি গাছগুলো রক্ষা করা যায় আমরা তা-ই করবো। আর যদি একান্তই খুঁটি না সরানো যায় তবে আরো উন্নত পদ্ধতির বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার ব্যবহার করে গাছগুলোকে রক্ষা করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৯
বিবিবি/এএ