ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

শ্রীমঙ্গলে ফের গাছে করাত বসানোর পাঁয়তারায় পল্লিবিদ্যুৎ 

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪১ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
শ্রীমঙ্গলে ফের গাছে করাত বসানোর পাঁয়তারায় পল্লিবিদ্যুৎ  বৈদ্যুতিক খুঁটির ফলে হুমকিতে সৌন্দর্যবর্ধনকারী গাছগুলো। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: রাস্তার এক পাশে নতুন বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানোর নামে শ্রীমঙ্গলের নৈসর্গিক সৌন্দর্য নষ্ট করছে মৌলভীবাজার পল্লিবিদ্যুৎ সমিতি (মৌপবিস)। এর আগে শহরের হবিগঞ্জ রোডের অনেকগুলো গাছ কেটে শ্রীহীন করে ফেলা হয়েছে শহরটিকে। এবারেও রয়েছে সেই আশঙ্কা।

গাছ কাটার মহোৎসবের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে মৌলভীবাজার পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির নাম। প্রকৃতিপ্রেমী আর পরিবেশবাদীদের তীব্র আপত্তির তীর এখন এ প্রতিষ্ঠানটির দিকেই।

কারণে-অকারণে বৈদ্যুতিক খুঁটি, নতুন সংযোগ ও রক্ষণাবেক্ষণের নামে গাছপালা ধ্বংস করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করছে তারা।
 
পর্যটননগরী ও চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল। এখানে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি পর্যটকে মুখরিত থাকে সৌন্দর্যের এ লীলাভূমি। এখানে রাস্তার দু’পাশে লাগিয়ে রাখা কৃষ্ণচূড়া গাছগুলোতে ফুল ফুটলে বাড়বে এ পর্যটননগরীর নৈসর্গিক শোভা। অপরদিকে বৈদ্যুতিক খুটি বসানোর নামে এই মূল্যবান গাছগুলোকে কেটে ফেললে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে পরিবেশ-প্রতিবেশ।
 
শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের এক পাশে নতুন বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানো কাজ চলছে। এখানের গাছগুলো কাটার উদ্যোগ নিলে স্থানীয় পরিবেশপ্রেমীদের প্রবল আপত্তির মুখে তা সাময়িকভাবে জন্য বন্ধ রয়েছে।
 
বৈদ্যুতিক খুঁটির ফলে হুমকিতে সৌন্দর্যবর্ধনকারী গাছগুলো।  ছবি: বাংলানিউজসম্প্রতি শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ উপজেলার সংযোগ সড়ক ও শ্রীমঙ্গল শহরতলীর ভানুগাছ সড়কে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের বধ্যভূমির সামনে থেকে বিটিআরআই এর প্রবেশমুখ পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগানো। ছোট-বড় গাছগুলো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। এই গাছগুলোর পাশে মৌলভীবাজার পল্লিবিদ্যুৎ সমিতি বৈদ্যুতিক লাইন নেওয়ার জন্য খুঁটি বসিয়েছে। সড়কটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় জায়গা।
 
আগামী বছরই ফুল ফুটবে। কৃষ্ণচূড়ার লালে রঙিন হয়ে থাকবে পথ। যেভাবে বিদ্যুতের লাইন টানার জন্য খুঁটি বসানো হচ্ছে অবশ্যই কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো তখন কাটা হবে। পল্লিবিদ্যুৎ ইচ্ছে করলে অন্য জায়গা দিয়ে খুঁটি বসিয়ে লাইন নিতে পারে। কিন্তু তা তারা করছে না।
 
মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমি মৌলভীবাজারের পল্লিবিদ্যুৎ সমিতিকে তীব্র আপত্তি জানিয়েছি। আমরা এখানকার গাছপাল ধ্বংস করে এখানে খুঁটি বসাতে দেবো না। বাফার জোন ছাড়া সংরক্ষিত বনের ভিতর দিয়ে কোনো অবস্থাতেই বৈদ্যুতিক লাইন টানা যাবে না। এতে মূল্যবান বন্যপ্রাণীদের মারাত্মক ক্ষতি হবে। পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে।
 
মৌলভীবাজার পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) শিবু লাল বসু বাংলানিউজকে বলেন, বৈদ্যুতিক এ লাইনটাকে আপডেট করা হচ্ছে। ওই লাইনটা সিঙ্গেল সার্কিট ছিল; এখন ৩৩ কেভির ডাবল সার্কিট করা হচ্ছে। আমি বলেছি, গাছগুলো না কাটার জন্য। প্রয়োজনে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো একটু সরিয়ে যদি গাছগুলো রক্ষা করা যায় আমরা তা-ই করবো। আর যদি একান্তই খুঁটি না সরানো যায় তবে আরো উন্নত পদ্ধতির বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার ব্যবহার করে গাছগুলোকে রক্ষা করবো।
  
বাংলাদেশ সময়: ১১১৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৯
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।