ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

গত বারের চেয়ে এবার জুলাইয়ে সিলেটে বৃষ্টিপাত কম

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২১
গত বারের চেয়ে এবার জুলাইয়ে সিলেটে বৃষ্টিপাত কম

মৌলভীবাজার: তৃষ্ণার্ত প্রকৃতির প্রাণসঞ্চারী উপহার বৃষ্টি। এর ফলেই প্রকৃতি হয়ে উঠে সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা।

দূর আকাশ থেকে পতিত বৃষ্টিকণা মাটিতে নেমে অগণিত উদ্ভিদকে স্পর্শ করে। দান করে জীবনীশক্তি।

সিলেটের অন্যতম প্রাকৃতিক সম্ভার চা। চায়ের সঙ্গে বৃষ্টিপাতের যোগসূত্র অতি নিবিড়।

বৃষ্টিপাতের রেকর্ড বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছরের ১ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত বৃহত্তর সিলেট এবং শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসে ৯৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। কিন্তু গত বছর পুরো জুলাই মাসে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩৫১ মিলিমিটার। অর্থাৎ চলতি বছর ৪০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত কম।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া সহকারী অমর তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, ১ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত মোট রেকর্ডকৃত বৃষ্টিপাত ৬৪৭ দশমিক ৯ মিলিমিটার। এ মাসে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে ৩১, ৬ ও ১২ জুলাই যথাক্রমে ১৩৮ মিলিমিটার, ১৩২ মিলিমিটার এবং ৮০ মিলিমিটার।

তবে গত বছর জুলাই মাসে ৯৬৮ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল বলে জানান আবহাওয়াবিদ অমর।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের আবহাওয়া সহকারী আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শ্রীমঙ্গলে জুলাই মাসে মোট ২২ দিন বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ২৯৫ মিলিমিটার। ১, ২০ ও ২১ জুলাই বৃষ্টিপাতের রেকর্ড যথাক্রমে ৬১ মিলিমিটার, ৪৯ মিলিমিটার এবং ৩১ মিলিমিটার। গত বছর জুলাইয়ে বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ছিল ৩৮৩ মিলিমিটার।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বিটিআরআই) সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার (এসএসও) অসীম কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের চা শিল্পে পুরো মৌসুমজুড়ে অর্থাৎ জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয় ১৬০০ থেকে ২৫০০ মিলিমিটার। সে হিসেবে জুলাই মাসে বৃহত্তর সিলেটে ৯৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত বেশ ইতিবাচক। জুন, জুলাই এবং আগস্ট এই তিন মাসই বৃষ্টিপাতের ভরা মৌসুম।

তিনি বলেন, এ বৃষ্টিপাত যদি ওয়েল ডিসট্রিবিউট হতো তাহলে সব দিক থেকে ভালো হতো। মনে করেন, চলতি বছরের জুন মাসে আমাদের ৮০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এখানে ৮০০ মিলিমিটার না হয়ে যদি ৬০০ মিলিমিটার হতো এবং অবশিষ্ট বৃষ্টিপাত যদি আগের মে মাসে হতো তাহলে চা শিল্পকে খরার মুখে পড়তে হতো না।

ধারাবাহিকতার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিপাতের ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। পৃথিবীব্যাপী প্রকৃতিগত সমস্যার কারণে আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাতের বেশ তারতম্য ঘটে চলেছে। কোনো মাসে বৃষ্টিপাত বেশি তো কোনো মাসে কম। ফলে খরাসহ বিভিন্ন অসুবিধার মাঝে পড়তে হচ্ছে আমাদের মূল্যবান চা শিল্পকে। জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত যদি ৪০০ মিলিমিটার করে মোট ২৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়, তাহলে এটা চা শিল্পের জন্য অভাবনীয় উৎপাদন সফলতা বলে নিয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেন বিটিআরআই-এর এ মৃত্তিকা বিজ্ঞানী।

বাংলাদেশ সময়: ০২২০ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২১
বিবিবি/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।