আসামির উপস্থিতিতে সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিজন আশাশুনি উপজেলার গোয়ালডাঙা গ্রামের মনোহর মণ্ডলের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে আশাশুনি উপজেলার ফকরাবাদ গ্রামের অনিল কৃষ্ণ মণ্ডলের মেয়ে কঙ্কাবতী মণ্ডলের (৪০) সঙ্গে একই উপজেলার গোয়ালডাঙা গ্রামের মনোহর মণ্ডলের ছেলে বিজন মণ্ডলের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর প্রতিবেশী দীপক মণ্ডলের স্ত্রী সন্ধ্যা রানী মণ্ডলের সঙ্গে বিজনের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রতিবাদ করায় কঙ্কাবতীর সঙ্গে বিজনের প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকতো। এরই জের ধরে ২০১৭ সালের ১০ জুন রাতে বিজন তার স্ত্রীর মুখমণ্ডল ও নাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরে কঙ্কাবতীর গলায় দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বিজন। এর পর কঙ্কাবতীর মরদেহ বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে বাথরুমের সামনে আমগাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নামে প্রচার চালান বিজন ও তার পরিবারের সদস্যরা।
২০১৭ সালের ১০ জুন দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে লোকমুখে খবর পেয়ে পরের দিন ১১ জুন সকালে বিজনের বাড়িতে গিয়ে কঙ্কাবতীর মরদেহ দেখতে পান বাবা অনিল কৃষ্ণ মণ্ডল ও তার স্বজনরা। জিজ্ঞাসা করায় গ্রামবাসীর সামনে বিজন তার স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ওই বছরের ১১ জুন রাতে জামাতা বিজনসহ অজ্ঞাতনামা তিন জনের বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
১২ জুন বিজন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হোসেনের কাছে পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ার কারণে স্ত্রীকে নির্যাতন চালিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন বিজন। ২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এজাহারভুক্ত বিজনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মামলায় নয়জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনা শেষে আসামি বিজনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান পিণ্টু, অ্যাডভোকেট এসএম হায়দার আলীসহ কয়েকজন আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট তপণ কুমার দাস।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৯
এসআরএস