ঢাকা, শনিবার, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘যা-তা’ বিপিএলের কী কী ভালো হবে এবার?

মাহমুদুল হাসান বাপ্পি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (স্পোর্টস) | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৩
‘যা-তা’ বিপিএলের কী কী ভালো হবে এবার?

ইয়াসির আলির সঙ্গে খুলনা টাইগার্স ম্যানেজার সাব্বির খান পথ খুঁজে পাচ্ছেন না। তাদের বলা হয়েছে, তিনটার সময় ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠান।

‍ঘড়িতে মিনিট খানেক বাকি থাকতেও তারা বুঝতে পারছেন না কোথায় হবে সেটি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ছাপই যেন হয়ে থাকলো এই ঘটনা।

একদিন বাদেই শুরু টুর্নামেন্ট, তবুও এখনও দিশা খুঁজে পাচ্ছে না বিপিএল। মাশরাফি বিন মুর্তজার ভাষায় ‘হ-য-ব-র-ল’ আর সাকিবের ‘যা-তা’ টুর্নামেন্টের পর্দা উঠবে একদিন পর। এবার কি কিছু ভালো হবে? আশার আলো অবশ্য খুব বেশি ফুটে উঠছে না। ট্রফি উন্মোচনই তো যেমন।  

তিনটার বদলে শুরু হয়েছে প্রায় ঘণ্টাখানেক পর। অধিনায়কদের মধ্যে সাকিব আল হাসান আসেননি। কয়েকজন চলে এসেছেন প্র্যাক্টিস কিট পরে। বিপিএল শুরুর আগের রাতে পাঁচ তারকা হোটেলে সব ক্রিকেটারকে নিয়ে আয়োজন করে জার্সি উন্মোচন করেছে ঢাকা ডমিনেটরস।

এবারের টুর্নামেন্টের বড় রহস্য অধিনায়কত্ব। ঢাকার অধিনায়কত্বই যেমন পেয়েছেন নাসির হোসেন। গত বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফটে নাম থাকলেও দল পাননি। এবার তিনিই হয়েছেন অধিনায়ক। এই যাত্রা কেমন লাগছে জানতে চাইলে নাসির বলেছেন, ‘আমার তো খুব সুন্দর লাগছে, ওয়াও ফিলিংস ক্যাপ্টেন যেহেতু; আর সামনের বার আমি ইনজুরিতে ছিলাম, তাই খেলতে পারিনি। ’

বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন পৃষ্ঠপোষকতার নাম জানাতে এসে পড়েছিলেন বেশ বিপাকে। সাংবাদিকরা প্রশ্নবানে জর্জরিত করেছেন তাকে। তিনি বারবার ঘুরে ফিরে বলেছেন ‘সীমাবদ্ধতার’ কথা। এই ‘সীমাবদ্ধতা’ কবে বা কোথায় শেষ হবে জবাব দিতে পারেননি তার।

সিইওর প্রশ্নের বড় অংশজুড়ে ছিলেন সাকিব আল হাসানও। দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা আয়োজকদের তুলেছেন কাঠগড়ায়। বিপিএলের অবস্থা ‘যা-তা’ অবধি বলেছেন তিনি। তার সঙ্গে বেশির ভাগ জায়গাতেই একমত মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিনি অবশ্য বলছেন, মাঠের ফিরলেই সবকিছু ভুলে যাবে সবাই।

মাঠের ক্রিকেটে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হবে রংপুর রাইডার্স। ইতোমধ্যেই একমাত্র দল হিসেবে নিজের মাঠে অনুশীলন করে নজর কেড়েছে তারা। নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বে তাদের দল গড়া হয়েছে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের সমন্বয়ে। কাগজে-কলমে বেশ শক্তিশালী দল গড়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, খুলনা টাইগার্স, ফরচুন বরিশাল, সিলেট স্ট্রাইকার্সও।

তবে মাঠের ক্রিকেটের আগে প্রচার-প্রচারণার অভাব, আয়োজনে অসঙ্গতি, তারকার অভাব, দলগুলোর অনুশীলনে সুযোগের অভাব প্রশ্নের মুখে ফেলেছে বিপিএলকে। এসবকে ঢেকে দিতে পারে মাঠের ক্রিকেট। কিন্তু অতীত ইতিহাস থেকে ওই সুখস্মৃতির সম্ভাবনাও পাওয়া যাচ্ছে না খুব একটা। টুর্নামেন্টের শুরুর আগে তাই প্রশ্ন, ‘যা-তা’ ও ‘হ-য-ব-র-ল’ বিপিএলের কী কী ভালো হবে এবার?

প্রথম দিন কে, কখন নামছে

শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও সিলেট স্ট্রাইকার্স। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে খেলবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।  

তারা বলেছেন...

ইমরুল কায়েস (অধিনায়ক, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস)

কুমিল্লা সবসময় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দল করে। এ বছরও আমাদের একই পরিকল্পনা। চেষ্টা করব এ বছরও শিরোপা ধরে রাখার জন্য। মাঠে ভালো খেলতে হবে। কাগজে-কলমে যত শক্তিশালীই হই না কেন, মাঠে খেলতে না পারলে লাভ হবে না।  

মেহেদি হাসান মিরাজ (প্রতিনিধি, ফরচুন বরিশাল) 

আমি তো একবারও চ্যাম্পিয়ন হতে পারি নাই। দুই বার ফাইনাল খেলেছি। অবশ্যই শিরোপা জেতার লক্ষ্য থাকবে। চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে তো অবশ্যই ভালো লাগবে।  

শুভাগত হোম চৌধুরী (অধিনায়ক, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স) 

সবার যে লক্ষ্য আমারও সেই লক্ষ্য (চ্যাম্পিয়ন হওয়া)। আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই মাঠে নামব। আমাদের শক্তিশালী দিক হলো, টিম স্পিরিট। দল ভারসাম্যপূর্ণ। সেই হিসেবে আমরা আশা করতেই পারি।  

নুরুল হাসান সোহান (অধিনায়ক, রংপুর রাইডার্স)

অবশ্যই আশা থাকবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। ট্রফি এখনও ধরি নাই। যদি চ্যাম্পিয়ন হতে পারি তাহলেই ধরব। আমাদের দল তরুণ, এনার্জেটিক। দলে অনেক অলরাউন্ডার আছে। মাঠে একশ ভাগ দিলে ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে। অনুশীলন (নিজেদের মাঠ) আমাদের জন্য ভালো সুযোগ। সময়সীমা ছিল না, ইচ্ছেমত নিজেদের মাঠে অনুশীলন করতে পেরেছি। কিন্তু ম্যাচ মিরপুরে। এখানে নিজেদের শতভাগ দিতে হবে।  

নাসির হোসেন (অধিনায়ক, ঢাকা ডমিনেটরস)

সবার মতো আমরাও চাইব চ্যাম্পিয়ন হতে। আমরা আশাবাদী, খুব ভালো কিছু করব। এর আগেও আমি অধিনায়কত্ব করেছি। প্রত্যেক টুর্নামেন্টেই সবার চ্যালেঞ্জ থাকে। এটা আমাদের জন্য একটা সুযোগ। এখানে ভালো করলে সামনের ক্যারিয়ারেও ভালো হবে। এটাই মনোযোগ থাকবে, সঙ্গে দলও যেন ভালো ফল করে।  

ইয়াসির আলি রাব্বি (অধিনায়ক, খুলনা টাইগার্স) 

নার্ভাস না (অধিনায়কত্ব পেয়ে), এক্সাইটেড আসলে। জীবনের নতুন একটা জিনিস তাও বিপিএলের মতো আসরে। চেষ্টা করব দলের জন্য ভালো কিছু করার। তামিম ভাইয়ের সঙ্গে দল গঠনের পর থেকেই কথা হচ্ছে। অধিনায়ক হওয়ার পর তেমন কথা হয়নি। শুধু বলেছেন, আমাকে যখন তোর প্রয়োজন হবে আমি পাশে আছি। তোর কোনো কিছু লাগলে আমাকে বলিস। অবশ্যই সহায়তা করব।  

মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক, সিলেট স্ট্রাইকার্স)

বলা কঠিন (চ্যাম্পিয়ন হওয়া)। তবে ব্যবস্থাপনা খুবই ভালো মনে হচ্ছে। যারা কোচিং স্টাফে আছে, ক্রিকেটার সবার মধ্যেই...কম্বিনেশনও ভালো। মাঠে কেমন করবে, সেটা বলা কঠিন। ফ্র্যাঞ্চাইজি চায় ভালো কিছু করতে। সব দলই চায় চ্যাম্পিয়ন হতে। আমরাও তার ব্যতিক্রম কিছু না। এটা তো বলেকয়ে হবে না। মাঠে ভালো করতে হবে। ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চাই আমরা। কাল যদি ভালো করতে পারি, এটা মোমেন্টামের খেলা। শেষের দিকে না তাকিয়ে আমরা শুরু থেকে ভালো করার চেষ্টা করব।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২৩
এমএইচবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।