বিপিএলের গত আসরে অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিলেন তৌহিদ হৃদয়। ফরচুন বরিশালের হয়ে ১১ ম্যাচে একশোরও কম স্ট্রাইকরেট নিয়ে কেবল ১৩৬ রান করেছেন।
প্রথম ম্যাচে যদিও ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি। তবে পরের দুই ম্যাচে লাইমলাইট হৃদয় থেকে কেড়ে নিতে পারেননি কেউ। আজও কুমিল্লার বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে ৩৭ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৫৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের এই ব্যাটার।
গত আসরে বাজে পারফর্ম করার পর নিজের ব্যাটিং স্টাইলে কিছু পরিবর্তন এনেছেন হৃদয়। তাতেই বদলে গেছে তার ব্যাটিংয়ের চেহারা। যদিও এর পেছনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকেই (বিসিবি) কৃতিত্ব দিলেন বেশি।
ব্যাক টু ব্যাক ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়ে ২২ বছর বয়সি তৌহিদ বলেন, ‘অবশ্যই, প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের জন্য এটা ভালো অনুভূতির ব্যাপার। আজকে একটা আত্মবিশ্বাস ছিল যদি ভালো শুরু করতে পারি তাহলে ইনশাআল্লাহ…। আমি চেষ্টা করেছি রেঞ্জ হিটিংয়ে সবসময় কীভাবে উন্নতি করা যায়। এইচপিতে থেকে কাজ করছি, ভালো না খেলার পরও জাতীয় দলের ক্যাম্পে সুযোগ দিয়েছিল বোর্ড। এসব সুযোগ যখন পেয়েছি তখন চেষ্টা করেছি কীভাবে সামনের দিকে যাওয়া যায়। তাই বোর্ডের কাছে কৃতজ্ঞ, আমি খুব একটা ভালো না খেলেও আমাকে ক্যাম্পে ডেকেছে। ’
‘গত বছরে যখন খারাপ খেলেছিলাম, খেলার পর থেকেই চিন্তা করছিলাম কীভাবে উন্নতি করা যায়। গত বছর ভালো খেলতে পারিনি। তারপর থেকে যখনই সুযোগ পেয়েছি, তখনই কাজ করেছি যে টি-টোয়েন্টিতে কীভাবে আরও উন্নতি করা যায়। কিছু শট নিয়ে কাজ করেছি, ছোট ছোট জিনিস পরিবর্তন করা ইনশাল্লাহ ভালো যাচ্ছে। ’
মাঠে নামার পর থেকেই ভয়ডহীনভাবে ব্যাটিং করেছেন হৃদয়। ঝুঁকি নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতাটা খুব ভালোভাবেই দেওয়া আছে দল থেকে। কোচ থেকে শুরু করে সবাই আমাদের সাপোর্ট করছে। আমরা হয়তো প্রতিদিন সফল হবো না কিন্তু যদি আমাদের এপ্রোচটা ঠিক থাকে, বেশিরভাগ সময় আমরা সফল হবো ইনশাল্লাহ। ’
‘আসলে টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা কম ছিল আগে। এখন চেষ্টা করতেছি কীভাবে উন্নতি করা যায় এবং মিনিমাম রিস্ক গুলো কীভাবে নেওয়া যায়। সবসময় সাপোর্ট পাচ্ছি, উপরে ব্যাটিং করে নিজের দায়িত্বটা বুঝতে পারছি। সবসময় চেষ্টা করছি খেলা কীভাবে ক্লোজে নেওয়া যায় দলের জন্য। ’
আজকের ম্যাচে শেষ পর্যন্ত থাকতে না পেরে আফসোস হচ্ছে হৃদয়ের। তবে তার চেয়েও বেশি আক্ষেপে পুড়ছেন ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করতে না পেরে। তিনি বলেন, ‘আজকের ম্যাচটাতে আফসোস আছে। কিন্তু আগের ম্যাচটা নিয়ে বেশি আফসোস ছিল। কারণ যদি আরেকটু খেলতে তাহলে সেঞ্চুরি হওয়ার সুযোগ ছিল। আজকে চেষ্টা করেছিলাম একটা দুটা ছয় মারার। কারণ রান রেটের একটা ব্যাপার আছে তাই চেষ্টা করেছিলাম ঝুঁকি নেওয়ার। ’
গত আসরের ফাইনাল ম্যাচে ক্রিজে শেষ পর্যন্ত বরিশালকে জয় এনে দিতে পারেননি হৃদয়। এক রানের রোমাঞ্চকর জয়ে শিরোপা উৎসব করেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সেই বেদনাদায়ক হার থেকে শিক্ষা নিয়ে সফলতার পথ খুঁজেছেন হৃদয়।
সিলেটের এই ব্যাটার বলেন, ‘বিপিএলের ম্যাচটা হওয়ার পর আমি মানসিকভাবে হতাশ ছিলাম। কারণ একটা যদি বাউন্ডারি মারতে পারতাম হয়তো বা খেলাটা একটু চেঞ্জ হতো। যদিও আমি ওই জায়গার ব্যাটার না, একদম নিচে। তারপরও একজন ব্যাটার হিসেবে আমাকে যেখানেই নামাবে সেখানেই চেষ্টা করতে হবে দলকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়। তবে আমার শেষ বল পর্যন্ত চেষ্টা ছিল। ’
‘ব্যর্থতা থেকে মানুষ সফলতার পথ খুঁজে। আমি চেষ্টা করেছি কীভাবে আরও সামনের দিকে যাওয়া যায়। আরও ভালো করা যায় এবং কী কী জিনিসগুলো উন্নতি করতে হবে। ঐভাবেই চেষ্টা করেছি আমি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২৩
এএইচএস/আরইউ