ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘আমার সঙ্গে মালানের কিছুই হয়নি’—মেজাজ হারানোর ব্যাখ্যায় তামিম

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
‘আমার সঙ্গে মালানের কিছুই হয়নি’—মেজাজ হারানোর ব্যাখ্যায় তামিম সংগৃহীত ছবি

এবারের বিপিএলে মাঠের ক্রিকেটের চেয়ে তামিম ইকবালকে নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে মেজাজ হারানোর ঘটনায়। বেশ কয়েকবার তাকে মাঠে বিতর্কে জড়াতে দেখা গেছে।

সর্বশেষ নিজ দলেরই সতীর্থ দাভিদ মালানের প্রতি ক্ষোভ ঝাড়তে দেখা গেছে। তবে তামিম বলছেন, ঘটনা আসলে ভিন্ন, বরং তাদের মধ্যে নাকি কিছুই হয়নি।

ঘটনাটি বরিশাল ইনিংসের চতুর্থ ওভারের। আলিস ইসলামের অফ সাইডের বাইরে ছুড়ে দেওয়া বল এক্সট্রা কভারে মারেন মালান। সেখানে থাকা উসমান খান প্রথম চেষ্টায় বল ধরতে ব্যর্থ হলে দৌড় শুরু করেন তামিম। কিন্তু দ্রুত নিজেকে সামলে বল ধরে নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে ছুড়ে দেন মালান। ততক্ষণে অর্ধেক পিচ পেরিয়ে ফেরার চেষ্টায় ছিলেন তামিম। কিন্তু তিনি ক্রিজে পৌঁছানোর আগেই সেখানে থাকা বোলার আলিস নিজেই স্ট্যাম্প ভেঙে দেন।

রানআউটের ঘটনায় বেশ হতাশা প্রকাশ করেন তামিম। হাত তুলে মালানের কাছে দৌড় না দেওয়ার কারণ জানতে চান তিনি। মাঠ ছাড়ার সময় রাগে গজরাতে দেখা যায় তাকে। বিষয়টি টেলিভিশনের ক্যামেরায় ধরা পড়ে। মালান নিজেও হতাশা প্রকাশ করেন। তবে ঘটনার ব্যাখ্যায় আজ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন এই অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটার। তিনি লিখেছেন, 'অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, মাঠে ডাভিড মালানের সঙ্গে কিছু হয়েছিল কিনা। এটা নিয়ে নাকি অনেক আলোচনা হচ্ছে। অথচ আমার সঙ্গে মালানের কিছুই হয়নি। মালান তো ওভাবে জবাব দিচ্ছিল প্রতিপক্ষের একজনকে!

মাঠে দুই ব্যাটসম্যানের ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাশা প্রকাশ করাও স্বাভাবিক। আমি রান আউট হওয়ার পরই মালান হাতের ইশারায়  ‘সরি’ বলেছে। আমি সেদিকে তাকিয়ে মাঠের বাইরে চলে যাই। তার সঙ্গে কোনো কথাই হয়নি। কাছেই থাকা প্রতিপক্ষের একজন ফিল্ডার তখন মালানকে একটা কথা বলেছে, যা তার ভালো লাগেনি। মালান সেই ফিল্ডারকেই জবাব দিচ্ছিল, তার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল। অথচ সেটাকেই অনেকে বানিয়ে ফেলেছে, আমার সঙ্গে নাকি মালানের ঝামেলা হয়েছে!

এরকম অনেক সময়ই অনেকে টিভিতে দু-একটি দৃশ্য দেখে নানা রকম ধারণা করে ফেলেন। গত কয়েক দিনে আমাকে নিয়েও এরকম হয়েছে। কিন্তু কোনো ঘটনা তো হুট করে হয় না। এটার পেছনেও অনেক ঘটনা থাকে। মাঠে এরকম অনেক কিছুই হয়, যা টিভিতে পুরোপুরি ফুটে ওঠে না এবং সেটা উচিতও নয়। কিন্তু টিভিতে দু-একটি দৃশ্য দেখেই চূড়ান্ত ধারণা নেওয়া উচিত নয়। যাদের নিয়ে ঘটনা, যারা মাঠে থাকেন, তারা সবকিছু জানেন। আজকের উদাহরণ দিয়েই আবার বলছি, টিভিতে এক-দুই ঝলক দেখেই সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়া উচিত নয়। ধন্যবাদ সবাইকে। '

এর আগে রংপুর রাইডার্সের বিদেশি খেলোয়াড় অ্যালেক্স হেলস ও ঢাকা ক্যাপিটালসের সাব্বির রহমানের সঙ্গে বিতর্কে জড়ান সদ্য অবসর নেওয়া বাংলাদেশি ওপেনার।  

চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে খেলতে গিয়ে সাব্বির রহমানের ওপর মেজাজ হারান তামিম। সেদিন বরিশালের হয়ে ব্যাট করছিলেন তামিম ও মালান। ইনিংসের নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে রান নিতে গিয়ে ‘ফেইক ফিল্ডিং’র শিকার হন তারা। এতেই ক্ষেপে যান তামিম। মূলত বাউন্ডারির কাছে থাকা সাব্বির সরাসরি বল না মেরে মাটিতে ফেলে দেন শুরুতেই। এতেই মেজাজ হারান তামিম।  

পরক্ষণে সাব্বিরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘বেশি লাগতে যেও না সাব্বিার, বেশি লাগতে যেও না। ’ এরপর আরও কিছু শব্দ বলেন এই ওপেনার। তবে সেগুলো স্পষ্ট শোনা যায়নি। তবে এতে ক্ষেপে যান সাব্বিরও। তেড়ে আসেন তিনি তামিমের দিকে। পরবর্তীতে থিসারা পেরেরা সাব্বিরকে সরিয়ে নিয়ে যান। এই ঘটনার পর ম্যাচের পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে বিসিবি প্রধান ফারুকের জন্য অপেক্ষায় থেকে বিরক্ত হয়ে পুরস্কার নেওয়া থেকে বিরত থাকেন তিনি।  

এরপর রংপুর রাইডার্সের হেলসের সঙ্গেও তর্ক হয় তামিমের। তামিম তেড়ে গিয়েছিলেন হেলসের দিকে। এরপর ঘটনাটি নিয়ে একটি টেলিভেশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুখ খোলেন ইংলিশ তারকা। তিনি জানান, কিছু না বলা সত্ত্বেও তামিম তার দিকে তেড়ে এসেছিলেন। ব্যক্তিগত আক্রমণ করার অভিযোগও তোলেন তিনি।  

ওই ঘটনায় শাস্তি পান তামিম। তাকে একটি ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়। আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টের ২.৬ ধারা ভাঙায় লেভেল-১ অপরাধের শাস্তি পান তামিম। তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার করায় আর শুনানির প্রয়োজন হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।