ঢাকা: দলীয় ৮১ রানের মাথায় টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যান ফিরে গেলে সাঙ্গাকারা এবং লঙ্কান দলপতি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন। তবে, ইনিংসের ৩৩তম ওভারে জেপি ডুমিনির করা শেষ বলে ডু প্লেসিসের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন লঙ্কান দলপতি।
এরপর ইমরান তাহির ফেরান থিসারা পেরেরাকেও। সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন কুলাসেকারা। আর অষ্টম উইকেট হিসেবে সাজঘরের পথ ধরেন থারিন্ডু কুশল। শেষ দু’জনকে ফেরান ডুমিনি। আর এর ফলে হ্যাটট্রিক করেন ডুমিনি।
টপঅর্ডারের আট ব্যাটসম্যানকে হারালেও সাঙ্গাকারা ৮৮ বলে ৩৪ রান করে একাই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
৩৪.২ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৮ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান।
এর আগে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। কাইল অ্যাবোটের করা প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে উইকেটের পিছনে দাঁড়ানো কুইন্টন ডি ককের অসাধারণ এক ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন কুশল পেরেরা। আউট হওয়ার আগে তিনি ১০ বলে মাত্র ৩ রান করেন।
শুরুতেই উইকেট হারানো লঙ্কানদের আরেক ওপেনার দিলশানকে ফেরান ডেল স্টেইন। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে ফাফ ডু প্লেসিসের তালুবন্দি হওয়ার আগে দিলশান কোনো রানই সংগ্রহ করতে পারেননি। দলীয় ৩ রানে কুশল পেরেরা আর দলীয় ৪ রানে দিলশান সাজঘরে ফেরেন।
দলীয় ৪ রানেই দুই ওপেনার সাজঘরে ফেরার পর কিছুটা সর্তক থেকে বিপর্যয় কাটানোর চেষ্টা করেন কুমার সাঙ্গাকারা এবং লাহিরু থিরিমান্নে। তবে, ইনিংসের ২০তম ওভারের প্রথম বলে থিরিমান্নেকে দুই ওপেনারের দেখানো পথে যেতে বাধ্য করেন ইমরান তাহির। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে ৪৮ বলে ৪১ রান করা থিরিমান্নেকে সাজঘরে পাঠান তাহির। থিরিমান্নে আর সাঙ্গাকারা মিলে ৬৫ রানের জুটি গড়েন।
লাহিরু থিরিমান্নে আউট হওয়ার পর ব্যাটিং ক্রিজে আসেন মাহেলা জয়াবর্ধনে। তবে, এ ম্যাচেও ব্যর্থ তিনি। ইমরান তাহিরের দ্বিতীয় শিকারে ফাফ ডু প্লেসিসের তালুবন্দি হয়ে আউট হওয়ার আগে জয়াবর্ধনে করেন ১৬ বলে মাত্র ৪ রান।
নকআউট পর্বের ম্যাচে টস জয়ী শ্রীলঙ্কার হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে আসেন কুশল পেরেরা এবং তিলকারত্নে দিলশান। আর প্রোটিয়াদের হয়ে বোলিং সূচনা করতে আসেন ডেল স্টেইন। প্রথম ওভার থেকে লঙ্কানরা তোলে তিন রান।
পাওয়ার প্লে’তে (১০ ওভার শেষে) শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল দুই উইকেট হারিয়ে ৩৫ রান। ২০ ওভার শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় তিন উইকেটে ৭২ রান। ৭২ বলে দলীয় অর্ধশতক আসলেও ১৭০ বলে দলীয় শতক পেরোয় লঙ্কানরা। ৩০ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেট হারিয়ে ১০৫ রান।
বিশ্বকাপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নামে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হাইভোল্টেজ এ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন লঙ্কান দলপতি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ।
গ্রুপ পর্ব থেকে শেষ আটে আসার ধারাতে মিল রয়েছে দুই দলের। পুল ‘এ’ থেকে আসা শ্রীলঙ্কার ছয় ম্যাচে চার জয়ে পয়েন্ট আট। পুল ‘বি’ থেক দক্ষিণ আফ্রিকা দলও আট পয়েন্ট নিয়ে কোয়ার্টারে পা রাখে।
মুখোমুখি লড়াইয়েও দুই দলের সমান দাপট। ওয়ানডেতে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ৫৯ বার। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কা জিতেছে ২৯ বার। আর দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ২৮ বার। একটি ম্যাচ টাই ও একটি পরিত্যক্ত হয়েছে।
বিশ্বকাপে দু’দলের দেখা চার বার। ১৯৯২ বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের হারিয়েছিল লঙ্কানরা। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ফিরতি দেখায় ৮৯ রানে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৩ বিশ্বকাপে ডাক ওয়ার্থ লুইস মেথডে ম্যাচটি টাই হয়। আর চতুর্থবার দেখা হয় ২০০৭ বিশ্বকাপে। গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে শ্বাসরুদ্ধকর সে ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে এক উইকেটে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
দক্ষিণ আফ্রিকা দল: হাশিম আমলা, কুইন্টন ডি কক (উইকেটরক্ষক), ফাঁফ ডু প্লেসিস, রিলে রুশো, এবি ডি ভিলিয়ার্স (অধিনায়ক), ডেভিড মিলার, জেপি ডুমিনি, কাইল অ্যাবোট, ডেল স্টেইন, মরনে মরকেল ও ইমরান তাহির।
শ্রীলঙ্কা দল: তিলকারত্নে দিলশান, লাহিরু থিরিমান্নে, কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ (অধিনায়ক), কুশাল পেরেরা, থিসারা পেরেরা, দুসমান্থা চামিরা, নুয়ান কুলাসেকারা, থারিন্ডু কুশল ও লাসিথ মালিঙ্গা।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, ১৮ মার্চ ২০১৫
** সাঙ্গাকারা-ম্যাথুজের সতর্ক ব্যাটিং
** এবারে তাহির ফেরালেন জয়াবর্ধনেকে
** তাহির ফেরালেন থিরিমান্নেকে
** হাল ধরেছেন সাঙ্গাকারা-থিরিমান্নে
** পাওয়ার প্লে’তে লঙ্কানদের ৩৫/২
** দুই ওপেনার সাজঘরে, বিপাকে লঙ্কানরা
** প্রথম ৫ ওভারে বাউন্ডারি শূন্য লঙ্কানরা
** শুরুতেই উইকেট খোয়ালো লঙ্কানরা
** ব্যাটিংয়ে কুশল-দিলশান
** টস জিতে ব্যাটিংয়ে লঙ্কানরা
** শ্রীলঙ্কা-দ. আফ্রিকার বাঁচা-মরার লড়াই