ঢাকা: অনেকটা শ্বাসরুদ্ধকর অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে। খানিকবাদেই অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) শুরু হতে যাচ্ছে ১৬ কোটি বাঙালির বহুল প্রত্যাশিত স্বপ্নের কোয়ার্টার ফাইনাল।
এবারের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল অর্থাৎ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার এ লড়াই বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) এমসিজিতে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টায়।
গ্রুপ পর্বের পর এ নকআউট পর্বে হারলেই ধরতে হবে দেশের ফিরতি ফ্লাইট। এরই দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে বিশ্বমঞ্চ থেকে বিদায় নিয়েছে উপমহাদেশের পরাশক্তি শ্রীলঙ্কা। সেই বিবেচনা থেকে প্রত্যাশা আর প্রস্তুতি নিয়েই দু’দল মাঠে নামছে।
ক্রিকেটবোদ্ধারা বলছেন, বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারানোর শক্তি রয়েছে বাংলাদেশ দলের। গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শেষ আটের টিকেট পায় আত্মবিশ্বাসী টাইগার বাহিনী। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও তুমুল প্রতিরোধ গড়ে বাংলাদেশ।
শেষ দুটি ম্যাচের আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে ভারত-বধ করে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলতে চায় টাইগাররা। অধিনায়ক মাশরাফি জানিয়েছেন, শরীরের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে চেষ্টা করবে ক্রিকেটাররা। কোচ হাথুরুসিংহে ও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের বিশ্বাস ভারতকে হারানোর শক্তি-সামর্থ্য বাংলাদেশের রয়েছে।
ভারতের বিপক্ষে এর আগে তিনবার জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপেও জয় রয়েছে টাইগারদের। ২০০৭ বিশ্বকাপে ক্যারিবিয়ান সাগরের পোর্ট অব স্পেনে মাশরাফি, রফিক ও রাজ্জাকের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর তামিম, মুশফিক ও সাকিবের ফিফটিতে পাঁচ উইকেটের দারুণ জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় রাহুল দ্রাবিড়ের টিম ইন্ডিয়া।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয় ২০০৪ সালে। দলটির বিপক্ষে বাংলাদেশের ১৩তম ম্যাচে জয় ধরা দেয় টাইগার শিবিরে। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সৌরভ গাঙ্গুলির ভারতকে ১৫ রানে হারায় হাবিবুল বাশারের দল।
১৯৮৩ চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ১৫তম ম্যাচে আরেকবার শচীন-সৌরভ-যুবরাজদের ভারতকে লজ্জা দেয় টাইগাররা। তৃতীয় জয়টি আসে ২০১২ সালের এশিয়া কাপে। ১৬ মার্চ মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাঁচ উইকেট হাতে রেখে ২৮৯ রান টপকে জয় পায় মুশফিকবাহিনী। প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছায় বাংলাদেশ।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ খেলে ১৯৮৮ সালের উইলস এশিয়া কাপে। চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সে ম্যাচে গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর বাংলাদেশ দল হারে ৯ উইকেটের ব্যবধানে।
বাংলাদেশ-ভারত এ অবধি ২৮বার মুখোমুখি হয়েছে, যার মধ্যে ভারতের জয় ২৪টিতে, বাংলাদেশের তিন ম্যাচে। পরিত্যক্ত হয়েছে একটি ম্যাচ। তিন জয়ের মধ্যে বাংলাদেশের দু‘টি জয়ই এসেছে মার্চ মাসে। আর বিশ্বকাপের শেষ আটের ম্যাচটিও স্বাধীনতার মাসে হওয়ায় সবটুকু শক্তি দিয়ে টাইগাররা ভারতের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে আনবে-এমনই বিশ্বাস পুরো দেশবাসীর।
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করবেন ইংল্যান্ডের ইয়ান গুল্ড ও পাকিস্তানের আলিম দার।
আগের ম্যাচে বিশ্রামে ছিলেন টাইগার দলপতি মাশরাফি। কোয়ার্টারে ভারতের বিপক্ষে ফিরছেন তিনি। ফলে বাদ পড়ার সম্ভাবনা স্পিনার তাইজুল ইসলামের। নাসির হোসেন ও আরাফাত সানির মধ্যে একজন জায়গা পাবেন একাদশে। সেক্ষেত্রে আগের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই উইকেট নেওয়ায় টিম ম্যানেজম্যান্টের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন নাসির হোসেনই।
ভারতীয় দলে আসছে না কোনো পরিবর্তন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের একাদশ নিয়েই মাঠে নামবে ভারতীয়রা।
সম্ভাব্য বাংলাদেশ দল
তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মাহমুদু্ল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির আহমেদ রুম্মন, আরাফাত সানি/নাসির হোসেন, রুবেল হোসেন, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক) ও তাসকিন আহমেদ।
সম্ভাব্য ভারত দল
মহেন্দ্র সিং ধোনি (অধিনায়ক), রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, অজিঙ্কা রাহানে, বিরাট কোহলি, সুরেশ রায়না, রবিন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, মোহিত শর্মা, মোহাম্মদ সামি ও উমেশ যাদব।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৫
** রাত পোহালেই স্বপ্নের কোয়ার্টার ফাইনাল