ঢাকা: এ বছর বাংলাদেশ দলের প্রাপ্তির খাতায় অনেক কিছুই যুক্ত হয়েছে। সিরিজ জয়, হোয়াইটওয়াশ, র্যাংকিংয়ে উন্নতি আরো কত কী! রোববার ভারতের সঙ্গে তিনম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৬ উইকেটে জয়ের মধ্য দিয়ে আরো একটি অর্জন ঘরে তুললো।
ঘরের মাটিতে ২০১৪ সালটা বাংলাদেশের জন্য এতটা সুখকর ছিল না। কিন্তু, বছর ঘুরতেই হোম সিরিজে ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে টাইগাররা। এক ম্যাচ হাতে রেখেই ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতার মধ্য দিয়ে নিজেদের মাঠে টানা ১০ ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ।
ভারতের বিপক্ষে চলমাল তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতেই ৭৯ রানের দাপুটে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। ৩০৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে অভিষিক্ত মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং তোপে ২২৮ রানেই গুটিয়ে যায় টিম ইন্ডিয়া। তাসকিন আহমেদের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে অভিষেক ওয়ানডেতেই পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন মুস্তাফিজ।
রোববার (২১ জুন) সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও বিধ্বংসী মুস্তাফিজের কাছে মাথা নত করে ভারত। দু’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা ২০০ রানেই অলআউট হয়। সফরকারীদের ছয় ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে ফেরান মুস্তাফিজ। এর মধ্য দিয়েই দ্বিতীয় অভিষিক্ত বোলার হিসেবে টানা দুই ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের রায়ান ভিটোরির পাশে নাম লেখান ১৯ বছর বয়সী এই বাঁহাতি বোলার।
৬ উইকেটে জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। তৃতীয় ও সিরিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচ জিতে পাকিস্তানের পর ভারতকেও হোয়াটওয়াশের লজ্জা দেওয়াটাই এখন বাকি। সেই সঙ্গে ঘরের মাঠে মাশরাফিদের টানা জয়ের সংখ্যাটা ১১-তে গিয়ে ঠেকবে। আসছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে এই সাফল্যধারা অব্যাহত থাকলে তো কথাই নেই।
২০১৪ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের জয়রথ শুরু হয়। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে মাসাকাদজা-চিগু্ম্বুরাদের রীতিমত উড়িয়ে দেয় টাইগাররা।
চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ৮৭ রানের দাপুটে জয় পায় বাংলাদেশ। যা পরের চার ম্যাচেও অব্যাহত থাকে। একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ম্যাচে ৬৮ রানের জয় তুলে নেয় মাশরাফি বাহিনী। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডেতে হেসেখেলে জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। ১২৪ রানের ব্যবধানে হার মানে জিম্বাবুয়ে।
প্রথম তিন ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত হওয়ায় পরের দুই ম্যাচে হোয়াইওয়াশের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত হলোও তাই। মিরপুরে চতুর্থ ম্যাচে ২১ রান ও পঞ্চম ও সিরিজের শেষ ম্যাচে পাঁচ উইকেটে হেরে খালি হাতেই দেশে ফিরে সফরকারীরা।
আর বিশ্বকাপের পর বদলে যাওয়া বাংলাদেশ যে এখন আরো পরিণত সেটি তো পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেই জানান দেয় টাইগাররা। রীতিমতো বলে কয়ে ৯২’র বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হারানোনসহ হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দেয় মাশরাফি-সাকিবরা।
১৭ এপ্রিল প্রথম ওয়ানডেতে ভারতের মতোই ৭৯ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচের জয়টা তো আরো দাপুটে। তামিম ইকবালের অপরাজিত শতকে ভর করে পাকিস্তানকে সাত উইকেটে হারায় টাইগাররা। আর সিরিজের শেষ ম্যাচে সৌম্য সরকারের সেঞ্চুরিতে আট উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের কাছ থেকে হোয়াইটওয়াশের তিক্ত স্বাদ দেয় আজহার-হাফিজরা।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়রথ শুরু হলেও তার আগে দু’টো হোম সিরিজে বাংলাদেশ একটি ম্যাচেও জিততে পারেনি। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হার মানে মুশফিক-সাকিবরা। আর একই বছরের জুন মাসে ভারতের দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজে হেরে যায় টাইগাররা। সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১০ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৫
আরএম/এসএইচ