ঢাকা: টাইগারদের হাতে বাংলাওয়াশ হওয়ার শঙ্কায় ভুগছে দু’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাওয়াশ থেকে রেহাই পাওয়ার লড়াই চলছে তাদের।
এই অবস্থায় টাইগারদের হাতে জায়ান্ট দলগুলোর বাংলাওয়াশ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে ক্রিকবাজ।
‘বাংলাদেশের জায়ান্ট কিলিং কর্মকাণ্ড’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে বিশ্বকাপ থেকে ইংল্যান্ডকে ছিটকে ফেলার কথাও।
প্রথম বাংলাওয়াশ-ড জায়ান্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজ
২০০৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায় তারুণ্নোদ্দীপ্ত বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে স্বাগতিকদের ধবলধোলাইয়ের পর তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজেও তাদের নাকানি চুবানি দেয় টাইগার বাহিনী।
প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ৫২ রানে, দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ৩ উইকেটে এবং তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচেও ৩ উইকেটে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথম কোনো জায়ান্টকে ‘বাংলাওয়াশ’ করার নজির গড়ে টাইগার বাহিনী।
২০১০ সালে নাস্তানাবুদ নিউজিল্যান্ড
২০১০ সালের অক্টোবরে পূর্ণাঙ্গ শক্তি নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু অস্ট্রেলিয়াকে ঘরের মাঠে নাস্তানাবুদ করে আসা কিউইরা টাইগারদের হাতে বেদম নাকানি-চুবানি খায়।
প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ৯ রানে, দ্বিতীয় ম্যাচ পরিত্যক্ত, তৃতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে, চতুর্থ ম্যাচে আবারও ৯ রানে এবং পঞ্চম ম্যাচে ৩ রানে হারিয়ে সফরকারীদের ধবলধোলাই করে ফেরত পাঠায় টাইগার বাহিনী।
২০১৩ সালে আবারও বাংলাওয়াশ-ড নিউজিল্যান্ড
প্রায় তিন বছর পর আবারও বাংলাদেশ সফরে আসে কিউই বাহিনী। এবারও ওয়ানডে সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে ধবলধোলাই দিয়ে ফেরত পাঠায় স্বাগতিকরা।
প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ৪৩ রানে, দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ৪০ রানে এবং তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ৪ উইকেটে কিউইদের হারিয়ে তাদের দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাওয়াশ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
সবশেষ জায়ান্ট বাংলাওয়াশ-ড পাকিস্তান
গত বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ সফরে আসে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে প্রথম খেলায় ৭৯ রানে, দ্বিতীয় খেলায় ৭ উইকেটে এবং তৃতীয় খেলায় ৮ উইকেটে জয় নিয়ে তৃতীয় জায়ান্ট বাংলাওয়াশ নিশ্চিত করে টাইগাররা।
অবশ্য পরাশক্তি দলগুলো বাংলাওয়াশ হতে শুরু করার আগে থেকেই টাইগারদের হাতে নিয়মিতভাবে ধবলধোলাই খেয়ে আসছে জিম্বাবুয়ে, কেনিয়ার মতো একসময়ের শক্তিশালী দলগুলোও।
বাংলাদেশের জায়ান্ট কিলিং কাণ্ডের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিল ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়াকে ধরাশায়ী করা, ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় করে দেওয়া এবং সেকেন্ড রাউন্ডে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দেওয়া, ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেওয়া এবং সবশেষে সেই ইংল্যান্ডকেই গত বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড থেকে হটিয়ে দেওয়া।
বাংলাদেশের এ ‘বাংলাওয়াশ’ ও জায়ান্ট কিলিং মিশনে আতঙ্কিত হয়ে স্বদেশি দলগুলোকে সতর্ক থেকে খেলার কথা বলে আসছেন প্রতিপক্ষের সাবেক গ্রেটরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশকে এখন আর বাচ্চা বলার সুযোগ নেই, তারা এখন ঘোষণা দিয়ে নাকানি-চুবানি দিচ্ছে পরাশক্তি দলগুলোকে। বাচ্চারা এখন বড় হয়ে গেছে।
বড় হওয়ার এই পর্যায়টা প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্কের হলেও নিঃসন্দেহেই টাইগার ভক্তদের জন্য মহাউচ্ছ্বাসের খবর। এ উচ্ছ্বাসটা লেগে থাকুক সারাটা বছর পুরো ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলজুড়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৫
এইচএ/