ঢাকা: পরবর্তী আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শেষ দু’টি দল হিসেবে জায়গা করে নিতে ওডিআই র্যাংকিংয়ের তলার দলগুলোর মধ্যে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। র্যাংকিংয়ের সপ্তম স্থানে থাকা বাংলাদেশের সঙ্গে অষ্টম ও নবম স্থানে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং পাকিস্তানের মধ্যে চলছে সমীকরণের জটিল লড়াই।
বুধবার (৮ জুলাই) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা আইসিসির পাঠানো সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার নিশ্চয়তার খবর পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয় দলের সামনেই যেহেতু রয়েছে আরও একটি করে ওয়ানডে সিরিজ, তাই এ সিরিজের ফলাফল প্রভাব ফেলবে দল দু’টির ভবিষ্যৎ র্যাংকিংয়ে।
গত দু’টি সিরিজে পাকিস্তানকে ‘বাংলাওয়াশ’ ও ভারতের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জিতে ৯৩ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে আইসিসির ওডিআই র্যাংকিংয়ের সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮৮ এবং পাকিস্তান ৮৭ পয়েন্ট নিয়ে র্যাংকিংয়ে যথাক্রমে অষ্টম ও নবম স্থানে চলে গেছে।
২০১৭ সালে অনুষ্ঠেয় আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কেবল সাতটি দেশের সঙ্গে স্বাগতিক দেশ হিসেবে টুর্নামেন্টে অংশ নেবে ইংল্যান্ড। স্বাগতিক ইংল্যান্ডসহ ৠাংকিংয়ের প্রথম ছয়টি দেশের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করা নিশ্চিত। পয়েন্ট ব্যবধান কম হওয়ায় এবং হাতে সিরিজ থাকায় সমীকরণটা কষতে হচ্ছে পাকিস্তানকেই, আর তাদের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সম্প্রতি র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ সপ্তম স্থানে উঠে এলেও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শেষে এতে ভিন্ন চিত্র দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাকিস্তানের পঞ্চম ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের ফলাফলের প্রভাবও পড়বে র্যাংকিংয়ে।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে র্যাংকিংয়ের ব্যবধান ৬ রেটিং পয়েন্ট। বাংলাদেশ যদি ৩-০ তে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সিরিজে হারায়, তবে বাংলাদেশের পয়েন্ট গিয়ে দাঁড়াবে ৯৯ তে। আর সিরিজ যদি টাইগাররা জিতে নেয় ২-১ ব্যবধানে তবে তাদের পয়েন্ট হবে ৯৬। অন্যদিকে ২-১ ব্যবধানে যদি বাংলাদেশ সিরিজ হারে তবে টাইগারদের রেটিংয়ে কোনো পরিবর্তন আসবে না। অর্থাৎ ৯৩ পয়েন্টেই থেকে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু ৩-০ ব্যবধানের হতাশাজনক সিরিজ পরাজয় যদি হয় মাশরাফি বাহিনীর, তবে তাদের পয়েন্ট হবে ৯০, যা বর্তমান রেটিং থেকে ৩ পয়েন্ট কম।
অন্যদিকে, শ্রলীঙ্কার মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ যদি পাকিস্তান ৫-০ ব্যবধানে হারে, তবে তাদের পয়েন্ট কমে হবে ৮৪। ৪-১ ব্যবধানে পাকিস্তান সিরিজ হারলে তাদের পয়েন্ট হবে ৮৬। ৩-২ ব্যবধানে সিরিজে পরাজিত হলে পাকিস্তানের পয়েন্ট হবে ৮৮। এতে র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের নিচেই থেকে যাবে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলটি।
আর যদি পাকিস্তান ৫-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতে, তবে বাংলাদেশকে টপকে তারা পৌঁছে যাবে ৯৪ পয়েন্টে। ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলে পাকিস্তানের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৯২, আর ৩-২ ব্যবধানে সিরিজে জয়ী হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজিকে টপকে পাকিস্তানের পয়েন্ট হবে ৯০। এতে তারা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হটিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা করে নিতে পারলেও র্যাংকিংয়ে টপকাতে পারবে না বাংলাদেশকে।
চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওডিআই র্যাংকিংয়ের প্রথম সাতটি স্থানে থাকা দলগুলো (ইংল্যান্ড বাদে) চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে পারবে। আর এই সময়ের মধ্যে আইসিসির নির্ধারিত সূচিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনো সিরিজ নেই বিধায় পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা সিরিজের দিকেই তাকিয়ে থাকছে তারা।
এসব সমীকরণ ও রেটিংয়ের হিসাব-নিকাশ বিবেচনায় রেখেই বলা যাচ্ছে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত। তবে র্যাংকিংয়ে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করতে হলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে অন্তত একটি ম্যাচ জিততে হবে টাইগারদের। অন্যদিকে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা করে নিতে হলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জয় ছাড়া পাকিস্তানের কোনো বিকল্প নেই। পাকিস্তান যদি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে জিতেই যায়, তবে কপাল পুড়বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সেক্ষেত্রে, দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ছাড়াই আয়োজিত হবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।
বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৫
এমজেএফ/এইচএ/