ঢাকা: ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজের ম্যাচ সাধারণত মিরপুর থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় চট্টগ্রামে। কোনো কোনো বার চট্টগ্রামে শুরু হয়ে শেষ হয় মিরপুর এসে।
প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে সিরিজ হারানোর কৃতিত্ব নিতে পারে স্টেডিয়ামটি। সিরিজের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে প্রোটিয়াদের হারানো গেলেই আরও এক কৃতিত্বের দাবিদার হবে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। দেশের মাটিতে টানা চার সিরিজ জয়ের কৃতিত্বে ভাগ বসাবে বন্দরনগরীর স্টেডিয়ামটি।
গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের সূচনা হয়েছিল এখানেই। প্রথম দুটি ওয়ানডে জয়ের পর মিরপুরে ফিরে বাকি তিনটিতেই জয় পায় বাংলাদেশ। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্তম্ভ তৈরি হয়েছে মিরপুরে, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রোটিয়াদের সাত উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে। সিরিজ সমতায় (১-১) ফেরার পর এবার হোম ভেন্যুতে টানা চার সিরিজ জয়ের কীর্তি গড়তে পারেন টাইগাররা।
বুধবার (১৫ জুলাই) দেশকে আরও একটি জয় উপহার দেবে লাকি ভেন্যু চট্টগ্রাম- এমন প্রত্যাশাই টাইগার ভক্তদের!
২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর এই মাঠে এ পর্যন্ত ১৫টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ দল। এর মধ্যে ৯টিতেই জয় স্বাগতিকরা। সর্বশেষ ১০ ওয়ানডের মধ্যে ৮টিতেই জিতেছে টাইগারররা। টস জিতে আগে ব্যাট করে সাফল্য কমই পেয়েছে বাংলাদেশ। এ মাঠে ৮ বার টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে স্বাগতিকরা জয় পেয়েছে ৩টিতে, হেরেছে ৫টি ম্যাচ।
টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে ৭ বারের মধ্যে ৪বার জয় এসেছে টাইগার শিবিরে। এ মাঠের সর্বোচ্চ স্কোর ৩০৯। ২০০৬ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রান করেছিল লংকানরা। এর পর আর তিন’শ পেরোনো কোনো স্কোর হয়নি এই মাঠে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর গড়েছিল ইংল্যান্ড। ২০১০ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৮৪ রান করেছিল ইংলিশরা। তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোরটা বাংলাদেশের। গত বছর এ মাঠে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাকিব আল হাসানের সেঞ্চুরিতে ২৮১ রান করে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে ৮৭ রানের জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের কাছে বাংলাওয়াশ হয় জিম্বাবুয়ে।
চট্টগ্রামে ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা আছে দক্ষিণ আফ্রিকারও। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ সফরে এসে এই মাঠে একটি ওয়ানডে খেলেছিল তারা। তখন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্টেডিয়াম নামেই পরিচিত ছিল এই ভেন্যু। ওই একবারই এই স্টেডিয়ামের সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছে অতিথি দলটি। বর্তমান দলে থাকা হাশিম আমলা ও জেপি ডুমিনি ছিলেন সেই ম্যাচে। হাশিম আমলা ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন আর জেপি ডুমিনি ব্যাটিংয়েই নামতে হয়নি। গ্রায়েম স্মিথের অপরাজিত সেঞ্চুরি ও হার্শেল গিবসের অর্ধশতকে ৯ উইকেটে ম্যাচ জেতে প্রোটিয়ারা।
বাংলাদেশের পক্ষে এ মাঠে সর্বোচ্চ রান ঘরের ছেলে তামিম ইকবালের (৩৯১)। আর সর্বোচ্চ উইকেট সাকিব আল হাসানের (২৭টি)। কাল আর এক উইকেট পেলে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে ২০০টি ওয়ানডে উইকেট পাওয়ার কৃতিত্ব দেখাবেন সাকিব। একই সুযোগ আছে অধিনাংয়ক মাশরাফিরও। দু’জনেরই দখলেই ১৯৯টি করে উইকেট।
এর আগে বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র বোলার হিসেবে ২০০ উইকেট শিকারের মাইলফলক ছুয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। কাল হয়তো সাকিব-মাশরাফির নতুন মাইলফলক স্পর্শ করার সাক্ষীও হতে চলেছে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। কাল বাংলাদেশকে দু’হাত ভরে দেবে এই লাকি ভেন্যু- এমন প্রত্যাশাই টাইগারভক্তদের।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১০ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২১০৫
এসকে/এমজেএফ