ঢাকা: ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ২০১৩ সালের আসরে স্পট-ফিক্সিংয়ের অভিযোগে পুলিশের দায়ের করা মামলা বাতিল করেছেন নয়াদিল্লির একটি আদালত। তথ্যপ্রমাণের অভাবে মামলাটি বাতিল হওয়ায় খালাস পেয়ে গেলেন অভিযুক্ত পেসার শান্তকুমারন শ্রীশান্থ, অজিত চন্ডিলা ও অঙ্কিত চবনসহ ৪২ ক্রিকেটার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি।
শনিবার (২৫ জুলাই) নয়াদিল্লির পাতিয়ালার অভ্যন্তরীণ আদালত এ রায় দেন। আদালত সূত্র ও ক্রিকেটারদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এ খবর দিয়েছে।
স্পট-ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলার আসামি হওয়ার পর শ্রীশান্থ-চবনদের ক্রিকেট আজীবন নিষিদ্ধ করেছিল ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। আদালতের এ রায়ের পর সে নিষেধাজ্ঞামুক্ত হওয়ার সুযোগ এসে গেলো শ্রীশান্থ-চবনদের সামনে।
রায়ের পর আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আবেগাপ্লুত শ্রীশান্থ। তিনি বলেন, ‘কোনো দুঃখ নেই। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। এখন ভালোভাবে ক্রিকেটে ফিরতে চাই। আশা করছি, আমি আবারও ক্রিকেটে ফিরতে পারবো, ফিটনেস অর্জনে বিসিসিআইয়ের সরঞ্জাম ও স্থাপনা ব্যবহারের অনুমতি পাবো। ’
তিনি বলেন, ‘আমি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাবও পেয়েছি, কিন্তু আমি প্রথমে ক্রিকেটার। অনেক ধকল গেছে। এসব এখন অতীত। আমি আগামীকাল জাতীয় স্টেডিয়ামে যেতে চাইবো এবং সেখানে কেবলই দৌঁড়াতে চাইবো। ’
রায়ের পর উচ্ছ্বসিত শ্রীশান্থের আইনজীবী বলেন, ‘আমি প্রথম দিন থেকেই বলছিলাম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। আজ প্রমাণ হলো, দিল্লি পুলিশ খেলোয়াড়দের ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়েছে। ’
তবে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, তারা এ ‘বিচ্যুত’ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করবে।
আইপিএলের ২০১৩ সালের আসরে রাজস্থান রয়্যালসের তিন ক্রিকেটার শ্রীশান্থ, অজিত চন্ডিলা ও অঙ্কিত চবনের বিরুদ্ধে স্পট-ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলে সে বছরের ১৬ মে মুম্বাই থেকে তাদের গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের বিশেষ শাখা। এরপর শ্রীশান্থ-চান্দিলা-চবনসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় ৪২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিটও জমা দেওয়া হয়।
চার্জশিটে দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে বুকি (বাজিকর) ও খেলোয়াড়দের মধ্যকার ফোনালাপ তুলে ধরা হয় এবং সেসব ফোনালাপে ম্যাচ গড়াপেটা ও অর্থ বাজি ধরা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
প্রায় দু’বছর বিচারপ্রক্রিয়ার পর পাতিয়ালা অভ্যন্তরীণ আদালত এ রায় দিলেন। মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন পলাতক আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন দাউদ ইব্রাহীম এবং তার উপদেষ্টা ছোটা শাকিলও। মামলা বাতিল হওয়ায় অভিযোগ উঠে গেল তাদের ওপর থেকেও।
তথ্যপ্রমাণের অভাবে দিল্লি পুলিশের মামলাটি বাতিল করে দেওয়া হলেও সম্প্রতি একই আসরে ফিক্সিংয়ের দায়ে চেন্নাই সুপার কিংস ও রাজস্থান রয়্যালসকে দু’বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার দায়ে দুই ক্লাবের মালিক যথাক্রমে গুরনাথ মেইয়াপ্পান ও রাজ কুন্দ্রাকেও সারাজীবনের জন্য ক্রিকেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৫/আপডেট ২০৩২ ঘণ্টা
এইচএ/