ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বিপর্যয়ে লঙ্কানরা, চালকের আসনে টিম ইন্ডিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৫
বিপর্যয়ে লঙ্কানরা, চালকের আসনে টিম ইন্ডিয়া

ঢাকা: কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টের চতুর্থ দিন ভারতের ছুঁড়ে দেওয়া ৩৮৬ রানের টার্গেটে দিন শেষে শ্রীলঙ্কা ৩ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৬৭ রান। সিরিজ জিততে শেষ দিনে স্বাগতিকদের আরও ৩১৯ রান প্রয়োজন।



ভারত প্রথম ইনিংসে ৩১২ রান করলে লঙ্কানরা ২০১ রানে অলআউট হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে সফরকারীরা সবক’টি উইকেট হারিয়ে তোলে ২৭৪ রান।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কা আবারো ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। দলীয় ২১ রানের মাথায় টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারায় স্বাগতিকরা। ভারতীয় পেসার ইশান্ত শর্মার দাপটে ওপেনার থারাঙ্গা কোনো না করেই বিদায় নেন। চান্দিমাল ব্যক্তিগত ১৮ রান করে ইশান্তের বলে কোহলির তালুবন্দি হন। উমেস যাদবের বলে শূন্য হাতেই ফেরেন করুনারত্নে।

দিন শেষে ২৪ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন ওপেনার কুশল সিলভা। ২২ রান নিয়ে অপরাজিত রয়েছেন দলপতি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ।

এর আগে হাতে সাত উইকেট নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করে ভারত। অলআউট হওয়ার আগে টিম ইন্ডিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৭৪ রান। ফলে, স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার সিরিজ জিততে টার্গেট দাঁড়ায় ৩৮৬ রান।

আগের দিনের অপরাজিত থাকা বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মা চতুর্থ দিন ক্রিজে আসেন। ৫৭ রানের জুটি গড়েন তারা। কোহলি ২১ আর রোহিত শর্মা ৫০ রান করে বিদায় নেন। স্টুয়ার্ট বিনির ব্যাট থেকে আসে ৪৯ রান। বিনি রোহিতের সঙ্গে ৫৪ আর নোমান ওঝার সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়েন।

নোমান ওঝা ৩৫, অমিত মিশ্র ৩৯ রান করে দলের লিড আরও বাড়িয়ে নেন। শেষ দিকে অশ্বিনের ব্যাট থেকে আসে ৫৮ রান। মিশ্র আর অশ্বিন মিলে ৫৫ রানের জুটি গড়েন।

দ্বিতীয় ইনিংসে লঙ্কানদের হয়ে চারটি করে উইকেট তুলে নেন ধাম্মিকা প্রসাদ এবং নুয়ান প্রদীপ। হেরাথ পান একটি উইকেট।

এর আগে তৃতীয় দিন ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা আর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপদে পড়ে সফরকারী ভারত। সফরকারী ভারতের প্রথম ইনিংসে করা ৩১২ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০১ রানে অলআউট হয় লঙ্কানরা। টেলএন্ডারদের ব্যাটিং দৃঢ়তায় বিপর্যয় কাটিয়ে উঠলেও প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকরা ভারতের থেকে ১১১ রানে পিছিয়ে থাকে। তৃতীয় দিন শেষে ভারতের লিড বেড়ে দাঁড়ায় ১৩২ রান।

১১১ রান এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা টিম ইন্ডিয়া তৃতীয় দিন শেষে তিন উইকেট হারিয়ে তোলে মাত্র ২১ রান। আগের ইনিংসে অপরাজিত শতক হাঁকিয়ে মহাকাব্যিক এক ইনিংস খেলা চেতস্বর পুজারার ব্যাট থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে কোনো রানই আসেনি। আরেক ওপেনার লোকেশ রাহুল ২ আর অজিঙ্কা রাহানে ৪ রান করে বিদায় নেন।

এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে দলীয় ৪৭ রানের মাথায় টপঅর্ডারের ছয় ব্যাটসম্যানকে হারায় শ্রীলঙ্কা। ভারতীয় পেসারদের দাপটে ওপেনার উপল থারাঙ্গা (৪ রান), কুশল সিলভা (৩ রান), করুনারত্নে (১১ রান), চান্দিমাল (২৩ রান), অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ (১ রান), থিরিমান্নে (শূন্য রান) করে বিদায় নেন।

তবে, দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব বেশ ভালোই পালন করেন সাত নম্বরে নামা অভিষিক্ত উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান কুশল পেরেরা এবং নয় নম্বরে নামা রঙ্গনা হেরাথ। এ দু’জন স্কোরবোর্ডে ৭৯ রান যোগ করেন। পেরেরা ৫৬ বলে ৯টি চারে ৫৫ রান করে বিদায় নেন। হেরাথ ৮৪ বলে ৮টি চারে করেন ৪৯ রান। শেষ সময়ে ধাম্মিকা প্রসাদ করেন ২৭ রান।

ভারতের হয়ে ইশান্ত শর্মা একাই তুলে নেন ৫টি উইকেট। এছাড়া স্টুয়ার্ট বিনি ও অমিত মিশ্র দুটি করে উইকেট দখল করেন।

প্রথম ইনিংসে চেতস্বর পুজারার হার না মানা ১৪৫ রানের ইনিংসে ভর করে ভারত সবক’টি উইকেট হারিয়ে তোলে ৩১২ রান। ২৮৯ বল মোকাবেলা করে পুজারা ১৪টি চারের সাহায্যে তার অপরাজিত ইনিংসটি সাজান। আর তাতেই ইতিহাসের পাতায় ঢুকে যান পুজারা। প্রায় আট মাস পর দলে ফিরে ভারতের চতুর্থ ওপেনার ব্যাটসম্যান হিসেবে ইনিংসের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে অপরাজিত থাকেন তিনি। এর আগে ভারতের হয়ে এ কীর্তি গড়েন রাহুল দ্রাবিড়, বিরেন্দর শেওয়াগ আর সুনীল গাভাস্কার।

ভারতের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান আসে নয় নম্বরে নামা অমিত মিশ্রর ব্যাট থেকে। ২০০২ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের তাপস বৈশ্য নয় নম্বরে নেমে অপরাজিত ৫২ রান করে এ মাঠে এতোদিন সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন। তাপস বৈশ্যকে টপকে মিশ্র ৮৭ বলে ৫৯ রান করার পথে পুজারার সঙ্গে জুটি বেধে স্কোরবোর্ডে আরও ১০৪ রান যোগ করেন। যা লঙ্কানদের বিপক্ষে ভারতের অষ্টম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান। এছাড়া অভিষিক্ত নোমান ওঝাকে সঙ্গে নিয়ে পুজারা ৫৪ রানের জুটি গড়েন।

দ্বিতীয় দিন কোহলি ১৮, রোহিত শর্মা ২৬, স্টুয়ার্ট বিনি ০, অশ্বিন ৫, ওঝা ২১, ইশান্ত শর্মা ৬, উমেস যাদব ৪ রান করেন। শ্রীলঙ্কার হয়ে চারটি উইকেট পান ধাম্মিকা প্রসাদ। আর তিনটি উইকেট দখল করেন রঙ্গনা হেরাথ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, ৩১ আগস্ট ২০১৫
এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।