ঢাকা: প্রায় এক দশক আগে প্রথমবারের মত বাংলাদেশ সফর করেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেবার দু’দলের মধ্যে পার্থক্য ছিল আকাশ-পাতাল।
চলতি বছরে শেষ হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে গ্রুপপর্বে অস্ট্রেলিয়ার একটি ম্যাচ ছিল। বিশ্বকাপ অজিদের ঘরের মাঠে হওয়ায় ক্রিকেট প্রেমীরা ভেবেছিলেন বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে টাইগাররা। তবে ব্রিসবেনের সেই ম্যাচে বৃষ্টির কারণে কোন বলই মাঠে গড়াতে পারেনি। কিন্তু টুর্নামেন্টে মাশরাফিদের অসাধারণ পারর্ফম প্রমাণ করে দেয় অজিদের বিপক্ষেও ভালো প্রভাব বিস্তার করার সম্ভাবনা ছিল।
এদিকে অজি দলে একের পর এক খরা চলছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাশেজ হারের পর অবসরে গেছেন নিয়মিত অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। সেই সঙ্গে ওপেনার ক্রিস রজার্স ও শেন ওয়াটসনও সাদা পোশাকের ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। অন্যদিকে ইনজুরি সমস্যায় পড়ে বাংলাদেশ সফর থেকে বাদ পড়েছেন ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। আর বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে পেসার মিচেল জনসন ও জস হ্যাজেলউডকে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ আছে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ফর্মে। বিশ্বকাপের পর পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়। পাশাপাশি ভারত ও প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ড্র করেছে মুশফিকুর রহিমে নেতৃত্বে থাকা দলটি।
২০০৬ সালে যেবার অজিরা বাংলাদেশ সফর করেছিল সেবার স্বাগতিকরা ঘরের মাঠে ১৯টি টেস্টের মধ্যে ১৬টিতেই হেরেছিল। বাকি তিন ম্যাচের মধ্যে একটিতে জয় (জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে) ও দুটিতে ড্র। আর এক দশক পরেও টাইগাররা শুধুমাত্র সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ঘরের মাঠে সিরিজ জিতেছে। তবে তামিম-সাকিবদের টেস্ট ড্র করার প্রবনতা অনেক বেড়েছে। ঘরের মাঠে ৩০টি টেস্টের মধ্যে দ.আফ্রিকা, ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি করে ম্যাচে ড্র করেছে। এছাড়া পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি করে টেস্ট ড্র করে।
বাংলাদেশ টেস্ট দলের মধ্যে পাঁচজন ব্যাটসম্যান আছেন যাদের ব্যাটিং গড় ৩৫ এর ওপরে। এর মধ্যে মুমিনুল হক ১২ টেস্টে ৬৬.২৪ গড়ে রান করেছেন। বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরি করা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও আছেন ফর্মে। আর অধিনায়ক মুশফিকের গড় ৪৯.৬৭। কিছুটা বাজে ফর্মে থাকলেও পাকিস্তানের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি করা তামিম ইকবালও ছেড়ে কথা বলবেন না।
বোলিংয়ে বিশ্বকাপ আসরে পেসার তাসকিন আহমেদ ও রুবেল হোসেন দুর্দান্ত ভূমিকা রেখেছিলেন। তবে সম্প্রতি প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তরুণ মুস্থাফিজুর রহমান অভিষেক ম্যাচেই চার উইকেট তুলে নিয়েছেন। তিনি এক ওভারেই হাশিম আমলা, জেপি ডুমিনি ও কুইন্টন ডি ককের মতো বিশ্বমানের ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিওনে পাঠান। আর স্পিনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হানান।
২০০৬ সালে অজিদের দলে সব মিলিয়ে ১৪ ক্রিকেটারের ৬৭২টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা ছিল। তবে হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে সেবারের দলটিও রিকি পন্টিংদের ছেড়ে কথা বলেনি। দুই ম্যাচের সেই সিরিজে অজিরা প্রথম টেস্টে বিপর্যয়ে পড়ে শেষ পর্যন্ত তিন উইকেটে জয় পায়। আর দ্বিতীয় টেস্টে পেসার জেসন গিলেস্পির আকস্মিক ডাবল সেঞ্চুরিতে জয় পায় অজিরা।
আর এবারের সফরকারী দলটি পুরোপুরি তারুণ্য নির্ভর দল। স্টিভেন স্মিথের নেতৃত্বে এবারে সফর করবে অজিরা। তবে টাইগারদের মধ্যে মুশফিক, তামিম ও তারকা অলরাউন্ডার সাকিবের অন্তত ৪০টির ওপর টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে অজিদের এবার স্বাগতম জানাবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৫
এমএমএস