ঢাকা: তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারের পর কটাকে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ম্যাচেও হেরেছে স্বাগতিক টিম ইন্ডিয়া। সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৬ উইকেটে হেরে সিরিজও হাতছাড়া করেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল।
শুধু হারলেই লজ্জাটা টিম ইন্ডিয়ার পাওনা হয়ে থাকতো। সমতায় ফেরার হাতছানি নিয়ে হেরেছে বড় ব্যবধানে। তার চেয়েও বড় হলো ১৭.২ ওভারে টি-টোয়েন্টির স্পেশালিষ্ট ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা অলআউট হয়েছে মাত্র ৯২ রানে। লজ্জাটা কী ধোনিবাহিনীর জন্য এখানেই শেষ! শেষ ৫৪ বল আর হাতে ৭ উইকেট রেখে যখন প্রোটিয়ারা জয়ের পথে ঠিক তখনই বন্ধ হয়ে যায় ম্যাচটি। এ সময় সফরকারীদের দরকার ছিল মাত্র ২৯ রান। ফিল্ডিংয়ে থাকা টিম ইন্ডিয়ার ক্রিকেটারদের লক্ষ্য করে কটাকে উপস্থিত স্বাগতিক দর্শকদের বোতল ছোঁড়াতে ফিল্ডের দায়িত্বরত দুই আম্পায়ার সিকে নন্দন আর শামসুদ্দিন ম্যাচ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন। দুই ওভার পর ঘটে একই ঘটনা। আর একই ঘটনার কারণে মাঠের বাইরেই চলে যান ক্রিকেটাররা।
প্রোটিয়াদের দলপতি ফাফ ডু প্লেসিস টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান স্বাগতিকদের। ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনার রোহিত শর্মা ২২ রান করে বিদায় নেন। আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ানের ব্যাট থেকে আসে ১১ রান।
বিরাট কোহলি (১), আম্বাতি রাইডু (০), ধোনি (৫), আক্সার প্যাটেল (৯), হারবাজান সিং (০), ভুবনেশ্বর (০) রানে বিদায় নেন। মোহিত শর্মা কোনো রান না তুলে অপরাজিত থাকেন। মাঝে দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছান সুরেশ রায়না (২২) এবং অশ্বিন (১১)।
টিম ইন্ডিয়াকে ধ্বসিয়ে দিতে দারুণ বোলিং করেন অ্যালবি মরকেল। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান খরচায় ৩ উইকেট তুলে নেন প্রোটিয়া এ সিমার। তার বলকে কোনো ভারতীয় ব্যাটসম্যান বাউণ্ডারি সীমানার বাইরে নিতে পারেননি। এছাড়া দুটি করে উইকেট নিজেদের থলিতে ভরেন ইমরান তাহির এবং ক্রিস মরিস। কাইল অ্যাবোট কোনো উইকেট দখল করতে না পারলেও একটি উইকেট পান কেগিসো রাবাদা।
মাত্র ৯৩ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৭.১ ওভার ব্যাট চালিয়ে প্রোটিয়ারা জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। ৪ উইকেট হারিয়ে তারা ৯৬ রান তোলে।
প্রোটিয়া ওপেনার এবিডি ভিলিয়ার্স অশ্বিনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেন ১৯ রান। আরেক ওপেনার হাশিম আমলার ব্যাট থেকে আসে ২ রান। দলপতি ডু প্লেসিসের ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান।
জয়ের দিকে এগুতে থাকা প্রোটিয়াদের ইনিংসের ১১তম ওভার শেষে মাঠের দর্শকদের বোতল ছুঁড়ে মারায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে বেশ কিছুক্ষণ ম্যাচটি বন্ধ থাকে। এরপর নিরাপত্তা বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলে আবারো মাঠে গড়ায় বল। তবে, খুব বেশি সময় পরিস্থিতি শান্ত থাকেনি। দুই ওভার পর ফের শুরু হয় গণ্ডগোল। প্রথমবার ক্রিকেটার, আম্পায়াররা মাঠে থাকলেও এবারে সকলে মাঠের বাইরে চলে যেতে বাধ্য হন। ক্রিকেটাররা ড্রেসিং রুমে অবস্থান করলেও আম্পায়াররা সীমানা ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় তাদের সঙ্গে যোগ দেন ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড এবং প্রোটিয়া দলপতি ডু প্লেসিস।
এ সময় ডাকওয়ার্থ লুইস মেথডে জয়ের জন্য ১৩ ওভার শেষে সফরকারীদের প্রয়োজন ছিল ৫৫ রান। তবে, ততক্ষনে ক্রিকেটের এ আইনে ১৫ রানে এগিয়ে প্রোটিয়ারা।
প্রায় ৩০ মিনিট ধরে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা দর্শকদের মাঠের বাইরে বের করে দেওয়া হলে মাঠে ফেরেন ক্রিকেটাররা। আরেকবার শুরু হয় ম্যাচটি।
গত ম্যাচের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জেপি ডুমিনি আর ফারহান বেহারদিয়েন দলকে জয়ের পথে নিতে থাকেন। ১৫তম ওভারে এলবির ফাঁদে পড়ে ব্যক্তিগত ১১ রান করে ফেরেন বেহারদিয়েন। ম্যাচের বাকিটা পথ ডেভিড মিলারকে সঙ্গে নিয়ে পাড়ি দেন ডুমিনি। সিরিজে দ্বিতীয়বার অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়া ডুমিনি ৩৯ বলে ৩০ রান করেন। আর মিলার অপরাজিত থাকেন ১০ রানে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২০ ঘণ্টা, ০৫ অক্টোবর, ২০১৫
এমআর