ঢাকা: মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (০৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ২৬তম ম্যাচে জয় পেয়েছে সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্স। কুমিল্লাকে ২১ রানে হারিয়েছে রংপুর।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। বিপিএলের লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্কোরবোর্ডে ছয় উইকেটে ১৫৩ রান তোলে রংপুর রাইডার্স। জহুরুল ইসলামের অপরাজিত অর্ধশতকে ভর করে কুমিল্লাকে ১৫৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় রংপুর।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই রংপুরের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। পেসার আবু হায়দার রনির বলে শুভাগত হোমের তালুবন্দি হন সৌম্য সরকার (৫)। সপ্তম ওভারের মাথায় আসার জাইদির বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন লেন্ডল সিমন্স (১৩)।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৩৯ রান যোগ করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও জহুরুল ইসলাম। ব্যক্তিগত ২০ রানে কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে জাইদির ক্যাচে পরিণত হন সাকিব। তবে এক প্রান্ত আগলে রাখেন জহুরুল।
বিপিএলের চলতি আসরে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন জহুরুল। ৪৩ বল মোকাবেলায় সাতটি চার ও এক ছক্কায় তিনি অর্ধশতক পূরণ করেন। পঞ্চাশ বলে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন ২৮ বছর বয়সী এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। শেষদিকে, ড্যারেন স্যামি ২০ বলে ২৪ ও মোহাম্মদ নবী ৭ বলে ১২ রান করে আউট হন।
কুমিল্লার হয়ে রনি দু’টি উইকেট লাভ করেন। একটি করে উইকেট নেন শোয়েব মালিক, জাইদি, আন্দ্রে রাসেল ও রাব্বি।
১৫৪ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনী জুটি থেকে ৫.১ ওভারে ৪৮ রান তুলে নেয় কুমিল্লার দু্ই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও মাহামুদুল হাসান। ব্যাটে ঝড় তুলে ২৪ বলে ছয়টি বাউন্ডারি আর একটি ওভার বাউন্ডারিতে ৩৮ রান করে বিদায় নেন ইমরুল কায়েস। ড্যারেন স্যামির বলে আরাফাত সানির তালুবন্দি হয়ে ফেরেন ইমরুল।
আরেক ওপেনার মাহামুদুল হাসান ১০ বলে করেন ৮ রান। এলবির ফাঁদে ফেলে তাকে ফিরিয়ে দেন সাকলাইন সজীব। ওয়ানডাউনে নামা পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান আহমেদ শেহজাদ (১০) নবম ওভারে মোহাম্মদ নবীর বলে পেরেরার হাতে ধরা পড়েন। আফগান বোলার নবী একই ওভারে ফেরান ২ রান করা জাইদিকে। দলীয় ৮৫ রানের মাথায় কুমিল্লা পঞ্চম ব্যাটসম্যানকে হারায়। ১৩তম ওভারের চতুর্থ বলে আরাফাত সানি বোল্ড করেন ১২ রান করা শুভাগত হোমকে।
তবে, ক্রিজের একপ্রান্ত ধরে রাখার চেষ্টা করেন শোয়েব মালিক। তাকে সঙ্গ দিতে থাকেন বিপিএলের তৃতীয় আসরে প্রথম খেলতে নামা ক্যারিবীয়ান তারকা আন্দ্রে রাসেল। ইনিংসের ১৬তম ওভারের শেষ বলে সাকিব ফেরান রাসেলকে (৯)। মালিকের সঙ্গে ১৭ রানের জুটি গড়েন রাসেল।
দলীয় ১০২ রানের মাথায় ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটলে ব্যাট হাতে নামেন কুমিল্লার দলপতি মাশরাফি। নিজের প্রথম বলেই সাকলাইন সজীবকে কাভারের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকান ম্যাশ। পরের বলে ডাবল নিলেও তারপরের বলেই ফেরেন কুমিল্লার অধিনায়ক। মোহাম্মদ নবীর তালুবন্দি হয়ে ফেরার আগে মাশরাফির ব্যাট থেকে আসে ৮ রান।
১৮তম ওভারের শেষ বলে দলকে ১১২ রানের মাথায় রেখে ফিরে যান মালিক। পেরেরার বলে সানির তালুবন্দি হয়ে আউট হওয়ার আগে মালিক ২৪ বলে ১৫ রান করেন। সে ওভারে কোনো রানই নিতে পারেনি কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরা। শেষ দিকে আবু হায়দার দুটি ছক্কায় ৬ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। শেষ ওভারে পেরেরা তুলে নেন ধীমান ঘোষ আর রাব্বির উইকেট। পেরেরা দু’জনকে বোল্ড করে এক বল বাকি থাকতেই কুমিল্লার ইনিংস থামিয়ে দেন ১৩২ রানে।
রংপুরের হয়ে সাকিব ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। আরাফাত সানি আর স্যামিও একটি করে উইকেট পান। ৪ ওভারে ১৯ রানের বিনিময়ে দুটি উইকেট দখল করেন সজীব। মোহাম্মদ নবী ৩ ওভারে ১৩ রান খরচ করে নেন দুটি উইকেট। পেরেরার দখলে যায় তিনটি উইকেট। লঙ্কান এ বোলার ২.৫ ওভারে ১৮ রান খরচ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, ০৮ ডিসেম্বর ২০১৫
আরএম/এমআর
** শেষ ম্যাচে সাকিবদের সংগ্রহ ১৫৩