ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ রজব ১৪৪৬

ক্রিকেট

ফুরিয়ে যাননি শরীফ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৬
ফুরিয়ে যাননি শরীফ মোহাম্মদ শরীফ-ছবি:শোয়েব মিথুন-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মিরপুর থেকে: ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের এবারের আসরে বল হাতে হ্যাটট্টিকের দেখা মিলছিলো না। সেই অদেখা হ্যাটট্টিক দেখা দিল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের পেসার মোহাম্মদ শরীফের হাতে।

সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে এসে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে শরীফ তুলে নিয়েছেন এই কাঙ্খিত হ্যাটট্টিক।
 
আর এই হ্যাটট্টিক করার পর গণমাধ্যমের সামনে তিনি দাবী করলেন যে, এখনও তিনি ফুরিয়ে যাননি। ২০০৫-০৬ মৌসুমে জাতীয় ক্রিকেট লিগে হ্যাটট্রিকের পর ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগেও একবার হ্যাটট্টিক করেছিলেন। এই ম্যাচ দিয়ে এটি তার দ্বিতীয় প্রিমিয়ার লিগ হ্যাটট্টিক।
 
বল হাতে এমন পারফরম্যান্সের পর তিনি জানালেন সুযোগ পেলে শুধু ঘরোয়া ক্রিকেটেই নয় জাতীয় দলের হয়েও করতে পারবেন দারুণ কিছু। ‘আমার কাছে মনে হয় না আমি শেষ হয়ে গেছি। আমার কাছে মনে হয় আমার দেওয়ার আরও কিছু আছে। আমার ইচ্ছা আছে জাতীয় দলে ফিরে আসার। যতদিন পারি ফিটনেস ধরে খেলে যাব। ’
 
বুধবার (১৮ মে) মিরপুর জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শরীফ এমন প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করলেন।
 
ওয়নডে ক্রিকেটে জাতীয় দলের হয়ে শরীফের অভিষেক হয়েছিল ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। খেলেছেন ছয় বছর। তার সবশেষ ম্যাচটি ছিল ২০০৭ সালে ওই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই। এরপর ইনজুরিতে পড়ে আর দলে ফিরতে পারেননি।
 
শরীফের ছয় বছরের ক্যারিয়ারে ওয়ানডেতে খেলেছেন ৯টি ম্যাচ আর উইকেট পেয়েছেন ১০টি। আর টেস্টে ১০ ম্যাচ খেলে পেয়েছেন ১৪টি উইকেট।
 
এদিকে, লিস্ট এ ক্রিকেটে ৮৭ ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ১৩২টি। আর এই লিস্ট এ ক্রিকেটের পারফরম্যান্সই তাকে জাতীয় দলের আসার স্বপ্ন দেখাচ্ছে বলে তিনি জানালেন। তবে বয়স ৩০ হওয়ায় জাতীয় দলে তাকে সুযোগ দিচ্ছেনা বলে সাংবাদিকদের সামনে একরকম অভিযোগই করে বসলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আসলে আমাদের দেশের কালচার এটা, ৩০ বছর হলেই বলে বুড়ো বলে। অন্যদেশে এটা না, অন্যদেশে ৩০ হলে তাকে বলে সবে অভিজ্ঞ হয়েছে। আমি ফাস্ট বোলারদের মধ্যে সর্বাধিক উইকেটটেকার। দুইবছর আগে আমি জাতীয় লিগে তৃতীয় সেরা উইকেটশিকারি ছিলাম পাশাপাশি ভালো রানও করেছিলাম। আমাকে ডাকা হয়েছিল, বলা হয়েছিল আমি ‘এ’ দলের হয়ে খেলতে যাচ্ছি কিন্তু শেষ মুহূর্তে আমাকে নেয়া হয়নি। আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম কেন আমাকে বাদ দেওয়া হলো? আমি কি ওভার এজ নাকি চাচ্ছেন না আমি খেলি? তারা বলেছে এটা না অন্য একটি কারণ, কিন্তু কারণ আমাকে বলেনি।   আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম ২৫ বছর হলেই কি বাদ দিয়ে দিবেন। পরের প্রজন্মতো দেখতেছে। সাকিবের এখন ২৮ হয়েছে, পরের বছর পারর্ফম না করলে বাদ দিয়ে দিবেন? আমি চাই এদেশে যেন এইটা উঠে যায়। মিসবাহ যদি ৪০ বছরে খেলতে পারে ফিটনেস থাকলে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা কেন পারবে না। আশিস নেহেরা আছে, অনেকেই আছে। ’
 
অনেক দিনে গ্যাপ হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে, এখন কি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপ নিতে পারবেন? গণমাধ্যমের এমন প্রশ্নের জবারে শরীফ বললেন, ‘আমি কখনই চাপ নিয়ে ক্রিকেট খেলি না। যেই লেভেলে হোক আমি স্বাভাবিক খেলবো। আন্তর্জাতিক ম্যাচের প্রথম ম্যাচেই আমি চাপ নেইনি। অবশ্যই এটা শ্রদ্ধার জায়গা, তবে আমার মনে হয়েছিল আমি প্রথম বিভাগেই খেলছি। ম্যাচ যখন খেলি তখন ভাবি ভালো জায়গা এটা ভালো খেলতে হবে পারর্ফম করতে হবে। ’
 
একথা অনস্বীকার্য যে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে এই মুহুর্তে যারা পেসার আছেন আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোতে তাদের ভীড়ে শরীফকে খুঁজে মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু তারপরেও হাল ছাড়তে চাইছেন না শরীফ, ‘আমার কাজ পারর্ফম করা এবং করে যাব। আমার ইচ্ছা আমি আরও খেলে যাব। বাকিটা নির্বাচকদের ব্যাপার। আমি উপরে খেলবো কিনা। আমিতো জোড় করে ঢুকতে পারবো না। পারফরম্যান্সই কথা বলবে। ’
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, ১৮ মে, ২০১৬
এইচএল/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।