ঢাকা: তামিম ইকবাল ও তার সতীর্থ-সমর্থকদের গালিগালাজের কারণে ক্ষুব্ধ আম্পায়াররা ম্যাচ পরিচালনা করতে না চাইলে সুপার লিগের প্রথম রাউন্ডের আবাহনী লিমিটেড-প্রাইম দোলেশ্বর ম্যাচটি স্থগিত ঘোষণা করেন ম্যাচ রেফারি। লিগের আয়োজক-ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসের (সিসিডিএম) সমন্বয়ক আমিন খান জানান, গত রাতে (১২ জুন) ম্যাচ রেফারি তার রিপোর্ট জমা দিয়েছেন।
তবে, অবাক করার মতো বিষয় হলো, গতকালের ম্যাচে যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে তা রিপোর্টে জানাননি ম্যাচ রেফারি মন্টু দও। সিসিডিএমের সভায় তোলা তার ফাইলবন্দি রিপোর্টটিতে ছিল, ম্যাচের দায়িত্বে থাকা দুই আম্পায়ার অসুস্থ থাকায় নির্ধারিত দিন ম্যাচের বাকি অংশ মাঠে গড়ায়নি। আম্পায়াররা পরের দিনও সুস্থ না হওয়ায় রিজার্ভ ডে’তেও মাঠে গড়াচ্ছে না ম্যাচটি।
এদিকে, সমালোচনা হয়েছে ম্যাচ নিয়ে একক সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা থাকলেও কেন সেটি দেননি ম্যাচ রেফারি।
সিসিডিএম সমন্বয়ক আমিন খান জানান, আম্পায়ারদের ইস্যুকে প্রধান করে ম্যাচ রেফারি আমাদের কাছে যে রিপোর্টটি জমা দিয়েছেন আমরা সেটি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে পাঠিয়েছি। ম্যাচ চলাকালীন গণ্ডগোলের কোনো রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। আপাতত ম্যাচটি স্থগিত রাখা হয়েছে। বিসিবি সিদ্ধান্ত নেবে কবে ম্যাচটি মাঠে গড়াবে। বাকি ম্যাচগুলো আগের সূচি অনুযায়ী মাঠে গড়াবে।
এদিকে, শঙ্কা জেগেছে ঢাকার ক্রিকেটের এমন ঘটনায় বোর্ড কী ম্যাচ যেখানে বন্ধ হয়েছে সেখান থেকে শুরু করবে? না কি নতুন করে আবার ম্যাচ আয়োজন করবে? যদি দুই আম্পায়ার এক সঙ্গেই অসুস্থ (!!) হয়ে পড়েন, তাহলে তাদের ছাড়াই কি ম্যাচ পরিচালনার কোনো নিয়ম ছিল না?
এদিকে, বাংলানিউজের পক্ষ থেকে গতকালই সিসিডিএমের সদস্য সচিব রাকিব হায়দার পাভেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সিসিডিএমের কাছে ম্যাচটির সিদ্ধান্ত তুলে দেওয়ায় কিছুটা বিব্রত তিনি। মুঠোফোনে বাংলানিউজকে তিনি জানান, ‘ম্যাচ রেফারি সিসিডিএমের উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। এটা ক্রিকেটের নিয়মে নেই। আমি যতদূর জানি তাতে ম্যাচ রেফারির সিদ্ধান্তের ব্যাপার এটি। নিয়ম হয়তো এখন নতুন করে জানতে, শিখতে হবে। ’
এর আগেও বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠেই এ দুটি দলের ম্যাচে আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আম্পায়ার রেজওয়ান ওই ম্যাচটিতে আবাহনীর পক্ষে দুটি বাজে সিদ্ধান্ত দিয়ে বিতর্কিত হন। আর এবার আবাহনীর বিপক্ষে সিদ্ধান্ত দেওয়ায় বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমন বাজে ঘটনা ঘটলো।
রোববার (১২ জুন) আবাহনীর বোলারের একটি আবেদন নাকচ করায় তামিম ইকবালসহ আবাহনী সমর্থকরা লাগামহীনভাবে গালিগালাজ করায় মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন আম্পায়ার তানভির আহমেদ। ৪৫ ওভারের ম্যাচে আবাহনীর দেয়া ১৯২ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা দোলেশ্বরের ইনিংস ১৭ ওভার অতিবাহিত হলে আম্পায়াররা তামিম ইকবালের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে বিকাল ৩টা ১৮ মিনিটে মাঠ ছাড়েন। ঘণ্টাখানেক পর ম্যাচটি স্থগিত করেন ম্যাচ রেফারি।
ইনিংসের ১৬তম ওভারে ঘটনার সূত্রপাত হয়। সাকলাইন সজীবের বলে রকিবুল হাসান তখন ব্যাট করছিলেন। একটি স্ট্যাম্পিংয়ের আবেদনে সাড়া না দিলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আবাহনী শিবির। এরপর ১৭তম ওভারে গড়ায় ম্যাচটি। তখনও চলতে থাকে গালিগালাজ। লাগামহীন গালিগালাজে বাধ্য হয়ে মাঠ ছাড়েন দুই আম্পায়ার। ততক্ষণে ১৭ ওভার খেলে দুই উইকেট হারিয়ে ৫৯ রান তোলে দোলেশ্বর।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, ১৩ জুন ২০১৬
এমআরপি/এসকে