ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘অ্যাম্বুলেন্স’ এবার ক্রিকেটের আলোচনায়

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৮ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৬
‘অ্যাম্বুলেন্স’ এবার ক্রিকেটের আলোচনায় ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ক্রিকেট মাঠে বলের আঘাতে মৃত্যু নতুন কিছু নয়। বছর দুয়েক আগেই তো বলের আঘাতে কোটি মানুষকে কাঁদিয়ে পৃথিবী ছেড়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার ফিলিপ হিউজ।

বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেও আছে এমন করুণ মৃত্যু। ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বলের আঘাতে মৃত্যুবরণ করেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটার রমন লাম্বা। ঢাকার ক্রিকেটে এমন মৃত্যুর উদাহরণ থাকলেও প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে রাখা হচ্ছে না অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা।

 

লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের এই লিগে অংশ নেন দেশের শীর্ষ ক্রিকেটার, বিদেশি ক্রিকেটার। ক্লাবগুলোর মাঝে চলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। প্রশ্ন হলো, মাঠে হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে কি হবে? আহত ক্রিকেটারকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা কী? নিশ্চয়ই অ্যাম্বুলেন্স। অবাক হওয়ার মতো তথ্য হলো, আন্তর্জাতিক ম্যাচের বাইরে ঘরোয়া কোনো ম্যাচে মাঠে রাখা হয় না অ্যাম্বুলেন্স।

শনিবার (১৮ জুন) ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ২০১৬-১৭ মৌসুমের সুপার লিগের ম্যাচে আবাহনীর পেসার তাসকিন আহমেদের বলে মাথার নিচে ঘাড়ের কাছাকাছি অংশে আঘাত পেয়ে আহত হন ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের ব্যাটসম্যান সোহরাওয়ার্দী শুভ। বিসিবির মাইক্রোবাসে উঠিয়ে তাকে নেওয়া হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে। শুভকে নিয়ে শঙ্কা কেটে গেলেও ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে তাকে। তাই বলে মাঠে অ্যাম্বুলেন্স না রাখার দায় কিভাবে এড়িয়ে যাবে বিসিবি?

বাধ্যবাধকতা না থাকায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই লিগের আয়োজক ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসের (সিসিডিএ)। গ্রাউন্ডস অ্যান্ড ফ্যাসিলিটিজ কমিটির ম্যানেজার সৈয়দ আব্দুল বাতেন এ ব্যাপারে বিসিবির মেডিকেল বিভাগে যোগাযোগের কথা বললেন।

বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী অদ্ভূত যুক্তিই দিলেন। মাঠে অ্যাম্বুলেন্স রাখার ব্যাপারে তিনি জানান, ‘আমাদের দেশের অ্যাম্বুলেন্স গুলোতে  প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার মতো ব্যবস্থা নেই। শুধুমাত্র রোগী বহন ছাড়া খুব একটা উপকার হয় না। আমরা সাধারণত ছোটখাটো ইনজুরিতে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করি না। আন্তর্জাতিক সিরিজ হলে বড় বড় হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়। ’

‘ঘরোয়া ক্রিকেটের জন্য আমরা একটি অ্যাম্বুলেন্স কেনার চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু খেলা হয় বিভিন্ন ভেন্যুতে। এছাড়া জাতীয় লিগের খেলা ঢাকার বাইরে হয়। এজন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সে সমস্যা সমাধান হবে না। আর বেশি অ্যাম্বুলেন্স কেনার চিন্তাও করা যাচ্ছে না। অ্যাম্বুলেন্স অপারেট করা, ড্রাইভার সবমিলিয়ে এমন কিছু করতে হলে অনেক বাজেটের প্রয়োজন। ’- যোগ করেন দেবাশিষ।

প্রিমিয়ার লিগের ভেন্যুগুলোতে হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা তাহলে কি-এমন প্রশ্নে দেবাশিষ জানান, ‘প্রিমিয়ার লিগে মিরপুর ভেন্যুর জন্য ডিজিল্যাবে চিকিৎসার কথা বলা আছে। বিকেএসপি ভেন্যুর জন্য আছে শেখ ফজিলাতুনন্নেসা মুজিব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। ফতুল্লা ভেন্যুর জন্য পপুলার চিকিৎসা সেবা দেবে। এখানকার সার্জনদের ম্যাচের আগের দিন বলা থাকে। তাদের ইনফর্ম করা হলে তারা দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করবে। ’

প্রিমিয়ার লিগ শুরুর আগেই ভেন্যুগুলোতে অ্যাম্বুলেন্স রাখার কথা বলে আসছিলেন ক্রিকেটার-কোচরা। তারপরও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়নি বিসিবি। শনিবারের ঘটনা সবার মনে নাড়া দিলেও মাঠে অ্যাম্বুলেন্স রাখার ব্যাপারে উদ্যোগী নয় বিসিবি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, ১৮ জুন ২০১৬
এসকে/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।