ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ভাবতেও পারেননি নাফিস

মহিবুর রহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১৬
ভাবতেও পারেননি নাফিস ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর (ফাইল ফটো)

ঢাকা: ‘আমি খুবই বিস্মিত। ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর জাতীয় দলে সুযোগ পাইনি।

মাঝখানে ‘এ’ দলের হয়ে একটি ম্যাচ খেলেছিলাম। তাই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের আগে ডাক পেয়ে আমি অবাক হয়েছি। বড় কোনো খুশির সংবাদ পেলে অনুভব করতে সময় লাগে। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। গত তিন বছরে অনেক খেলা গিয়েছে কিন্তু খেলতে পারিনি। তারপরেও আমি চেষ্টা করেছি ব্যক্তিগতভাবে যতটুক কঠোর পরিশ্রম করা দরকার সেটা করতে। কিন্তু এভাবে হঠা‍ৎ জাতীয় দলে ডাক পেয়ে যাব, সেটা ভাবতেও পারিনি। ’ কথাগুলো বলছিলেন তিন বছর পর জাতীয় দলে ফেরা টাইগার টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফিস।
 
শাহরিয়ার নাফিসকে সবশেষ ব্যাট হাতে দেখা গিয়েছিল ২০১৩ সালের এপ্রিলে হারারে স্পোর্টস ক্লাবে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে।

আর সবশেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন ২০১১ সালের ডিসেম্বরে চট্টগ্রামে, পাকিস্তানের বিপক্ষে।   নাফিসের ক্যারিয়ারের একমাত্র টি-টোয়েন্টি ছিল ২০০৬ সালের নভেম্বরে খুলনায়, প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে।

ফলে দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন এই টাইগার ওপেনার। তবে কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা আর একাগ্রতার পাশাপাশি বিগত বছরগুলোতে ঘরোয়া লিগের পারফরমেন্সই তাকে তিন বছর পর জাতীয় দলে খেলার সুযোগ করে দিয়েছে বলে বিশ্বাস করেন এই টাইগার বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বাংলানিউজকে তিনি জানান, ‘জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর আমি দুটি বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছিলাম। প্রথমটি হলো কঠোর পরিশ্রম করে চালিয়ে যাওয়া। যেহেতু আমি পেশাদার ক্রিকেটার সেহেতু জাতীয় দলে খেলি বা না খেলি পরিশ্রমটা চালিয়ে যাওয়াটাই ছিল আমার প্রথম লক্ষ্য।   দ্বিতীয় ব্যাপারটি ছিল গত দুই-আড়াই বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে আমি ভাল খেলেছি। আমার উন্নতির জায়গাগুলো যেমন ফিটনেস, ব্যাটিং ও ‍ফিল্ডিংয়ে আমি ভাল করতে পেরেছি। এর পাশাপাশি আমার প্রতি নির্বাচকদের আস্থা ও বিশ্বাস থেকেই ইংল্যান্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি সিরিজের আগে তারা আমাকে দলে ডেকেছেন। আমি চেষ্টা করবো আমার প্রতি তাদের এই অগাধ আস্থার প্রতিদান দিতে। ’

গেল দুই মৌসুমের ধারাবাহিকতায় ঘরোয়া ক্রিকেটের এবারের আসরেও ব্যাট হাতে বেশ উজ্জ্বল ছিলেন নাফিস। সদ্য সমাপ্ত ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে ৩৫ গড়ে ১০ ম্যাচে সংগ্রহ করেছেন ৩৫০ রান। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য তার অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংসটি।

সংগত কারনেই টাইগার দলে আসতে পেরেছেন বলেও মত তার। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৯ বছরের অভিজ্ঞতাও তাকে এই দৌঁড়ে এগিয়ে রেখেছে বলে তিনি মনে করেন, ‘শুধু এবারের প্রিমিয়ার লিগই নয়। আমার ধারণা নির্বাচকরা বিগত দিনগুলোতেও আমার পারফরমেন্সও বিবেচনা করেছেন। সাথে আমার নয় বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা। ’

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেরা একাদশে জায়গা পেলে ওপেনিংয়েই খেলতে পছন্দ করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে নাফিস জানালেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড যেখানে আমাকে যোগ্য মনে করবেন সেখানেই আমি খেলবো। সেরা একাদশে জায়গা পেতে প্রস্তুতি ক্যাম্পে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো আমার পারফরমেন্স ভালো দেখাতে। সেটা ফিটনেস হোক, ফিল্ডিং হোক অথবা ব্যাটিং। আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে দলকে সেরাটি দেয়া। ’
 
আসছে অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজে নিজের সেরা খেলাটি উপহার দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা নাফিস জানান,  ‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০৭ বিশ্বকাপের পর আর খেলিনি। আমি চেষ্টা করবো এই সিরিজের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে। পাশাপাশি আমার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দলের জন্য যেটা মঙ্গলজনক হবে সেটা করতে।
 
নয় বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে শাহরিয়ার নাফিস টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন ২৪টি। এর মধ্যে অর্ধশতক আছে ৭টি আর শতক আছে ১টি। টেস্টে তার মোট রান ১২৬৭। আর ৭৫টি ওয়ানডে খেলে মোট ২২০১ রান করেছেন। এর মধ্যে ৪টি শতক ও ১৩টি অর্ধশতক। অন্যদিকে ক্যারিয়ারের একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে তার সংগ্রহ ছিল ২৫ রান।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, ০২ জুলাই ২০১৬
এইচএল/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।