ঢাকা: ছয় বছর আগে এক কলঙ্কিত অধ্যায় দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। ‘নো’ বলের কারণে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন পাকিস্তানি তিন ক্রিকেটার।
২০১০ সালে ইংল্যান্ডে চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে গিয়েছিলো পাকিস্তান। শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ঐতিহ্যবাহী লর্ডসে। আর সেবার অধিনায়ক সালমান বাটের নেতৃত্বে অপরাধে জড়িয়েছিলেন মোহাম্মদ আসিফ ও আমির। তিন জনই বিভিন্ন মেয়াদে জেল সহ বহিষ্কৃত হয়েছিলেন ক্রিকেট থেকে।
বর্তমানে ক্রিকেটে আবারও ফিরেছেন তিনজনই। তবে বাকিরা শুধুমাত্র ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরলেও জাতীয় দলে আশার আলো ছড়াচ্ছেন আমির। গত জানুয়ারিতে পাকিস্তানের হয়ে সীমিত ওভারের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ফেরেন বাঁহাতি তরুণ এ পেসার। ফিরে অবশ্য আগের চেয়ে যেন বেশি ভয়ঙ্কর রুপ নেন তিনি।
কাকতালিয় ভাবে এতদিন সাদা পোশাকে না খেললেও সেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই প্রত্যাবর্তন হচ্ছে আমিরের। আবার সেই লর্ডসেই শুরু করবেন তিনি।
এদিকে আমিরের টেস্টে প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ইতোমধ্যে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব। কেভিন পিটারসেন, নাসের হুসাইন ও গ্রায়েম সোয়ানরা যেমন চাইছেন এমন ক্রিকেটারকে যেন আজীবন নিষিদ্ধ করা হোক। তেমনি তার ফেরাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন শচীন টেন্ডুলকার, মাইকেল হোল্ডিং ও আথারটনরা।
টেস্টে ফেরার আগে অবশ্য আমিরকে বিধ্বংসী রুপেই পাওয় গিয়েছে। এতদিন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত পারর্ফম করেছেন তিনি। আর লর্ডস টেস্টের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে অসাধারণই ছিলেন না ছিলেন দাপুটেও। তাই সমর্থকদের আশা ম্যাচেও কার্যকরী থাকবেন তিনি।
ইংলিশ সেরা ব্যাটসম্যান জো রুট যেমন বলেই ফেলেছেন, তাদের বিপক্ষে সবচেয়ে কঠিন হয়ে মাঠে থাকবেন আমির। এতেই বোঝা যায় স্বাগতিকরা হালকা ভাবে নিচ্ছে না তাকে।
অন্যদিকে বৃটিশ মিডিয়াগুলোতে আমিরের ফেরাকে অন্যভাবে নিচ্ছে। মিডিয়াগুলো খবরে বলা হয় মাঠে দর্শকদের সামনে নিন্দিত হতে পারেন আমির। কিন্তু পুরো দল আমিরের পাশে থাকবেন বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছিলেন তারই বোলিং সতীর্থ ওহাব রিয়াজ। বাঁহাতি পেসার রিয়াজ আরও জানান ইংলিশরা যদি ম্যাচে স্লেজিং করে তাহলে বসে থাকবে না পাকিস্তানিরাও। তিনি গতবার ইংলিশ ব্যাটসম্যান জনাথন ট্রটে সঙ্গে নিজের বিবাদের কথাও তুলে আনেন।
আজ (বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই) চার ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড-পাকিস্তান। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায়।
এদিকে ফর্মের বিচারে টেস্টে দুর্দান্ত অবস্থায় রয়েছে পাকিস্তান । সর্বশেষ তিনটি সিরিজ জিতেছে মিসবাহ-উল-হকের দল। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার পর এই ইংল্যান্ডকেই হারিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ ছয় টেস্টের পাঁচটিতেই জয় পাকিস্তানের।
বর্তমান টেস্ট র্যাঙ্কিংয়েও ইংল্যান্ডের ওপরে রয়েছে পাকিস্তান (পাকিস্তান ৩, ইংল্যান্ডে ৪)। তবে গত বছর আমিরাতে পাকিস্তানের কাছে হারের পর দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতেছে ইংল্যান্ড। নিজেদের দেশে গত ২০ বছর পাকিস্তানের কাছে সিরিজ হারেনি।
ইংলিশদের মাটিতে পাকিস্তানের সর্বশেষ সিরিজ জয় সেই ১৯৯৬ সালে, ওয়াসিম আকরামের নেতৃত্বে সেবার হারিয়েছিল মাইক আথারটনের ইংল্যান্ডকে। এরপর তিনটি সিরিজে হেরে ফিরেছে পাকিস্তান।
টেস্টে দু’দলের মুখোমুখি পরিসংখ্যান
ম্যাচ ইংল্যান্ড পাকিস্তান ড্র
মোট ৭৭ ২২ ১৮ ৩৭
ইংল্যান্ডে ৪৭ ২০ ৯ ১৮
লর্ডসে ১৩ ৪ ৩ ৬
সিরিজ ২৩ ৯ ৮ ৬
বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, ১৪ জুলাই, ২০১৬
এমএমএস