ঢাকা: ২০১০ সালের মার্চে মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক, ২০১১ সালের অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে। মাঝের দেড় বছরে জাতীয় দলে নিয়মিত থেকে সোহরাওয়ার্দী শুভ খেলেছেন ১৭টি ওয়ানডে।
এরপর পাঁচ বছর ফিরতে পারেননি জাতীয় দলের আঙ্গিনায়। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্যাটে-বলে নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজের জন্য ঘোষিত ৩০ সদস্যের প্রাথমিক দলে জায়গা পেয়েছেন এ অলরাউন্ডার। লক্ষ্য এখন মূল স্কোয়াডে জায়গা করে নেয়া।
২০ জুলাই থেকে শুরু হবে জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প। তার আগেই শুভ ফিটনেস নিয়ে কাজ শুরু করেছেন মিরপুরের জিমে। তারই ফাঁকে কথা বললেন বাংলানিউজের সঙ্গে।
শুভ মনে করছেন অনুশীলনে নিজের শতভাগ দিতে পারলে মূল দলেও জায়গা পাওয়া সম্ভব, ‘আমার আত্মবিশ্বাস ছিল প্রিমিয়ার লিগে যদি ভালো করি, অভিজ্ঞতা আছে-সব মিলিয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া সম্ভব। মনে বিশ্বাস ছিল, যদি লিগে ভালো খেলি আমাকে ডাকতে পারে। আমি ভালো খেলেছি যার প্রতিফলনে নির্বাচকরা আমাকে ডেকেছেন। আমি চেষ্টা করবো ভালো কিছু করার জন্য। ’
জাতীয় দলে মাত্র দেড় বছর থিতু হতে পারলেও বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপের মতো বড় বড় আসরে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে সোহওরায়ার্দী শুভ’র। আছে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা।
বাংলাদেশ দলের মূল স্কোয়াডে সুযোগ পেলে পেছনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান শুভ, ‘বড় বড় বেশ কিছু টুর্নামেন্টে আমার খেলার সৌভাগ্য হয়েছে। ওখানে খেলাতে নিঃসন্দেহে একটা অভিজ্ঞতা তো আছেই। যেহেতু ওই লেভেল গুলোতে খেলেছি, তাই পরিস্থিতি কিভাবে সামলাতে হয় আমার একটু হলেও জানা আছে। অভিজ্ঞতা থাকায় জাতীয় দলের হয়ে খেলা আমার জন্য একুট হলেও সহজ হবে। যদি সুযোগ পাই অভিজ্ঞতা আমি কাজে লাগাবো। ’
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে পাঁচ বছর পর জাতীয় দলের আঙ্গিনায় ফেরা নিঃসন্দেহে ভাগ্যের ব্যাপার। শুভ নিজেকে ভাগ্যবান মানছেন অন্য একটি কারণে। মিরপুরে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে তাসকিনের করা বল যেভাবে শুভর মাথার পেছনে আঘাত হেনেছিল তাতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেই পারতো।
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন এ ক্রিকেটার, ‘আমার যে জায়গায় বল লেগেছে এটাতে খুব বড় ইনজুরি হয়ে যায় খুব সহজেই। মাথার মার্সেল গুলো খুব নরম থাকে। ওখানে এতো জোরে বল লেগে অনেকেই মারা গেছেন। আমি অনেক ভাগ্যবান। সবার দোয়ায় আমি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরেছি। এজন্য নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আল্লাহ আমাকে আরেকবার জন্ম দিয়েছেন-এমনও বলতে পারেন। ’
মিরপুরে ভিক্টোরিয়া-আবাহনী ম্যাচের দিন তাসকিন আহমেদের বলের আঘাত তার ঘাড়ের ঠিক পেছনে লাগার পর যেভাবে লুটিয়ে পড়েছিলেন, তাতে সবার মনে ভেসে উঠেছিল ফিল হিউজের দৃশ্যটাই। ভাগ্য সহায় বলেই হয়তো বেঁচে গেছেন শুভ।
সে যাত্রায় বেঁচে গেলেও বাড়তি সুরক্ষা সম্বলিত নতুন ধরনের হেলমেট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার কথা বললেন শুভ, বাড়তি সুরক্ষা রয়েছে এমন হেলমেট ব্যবহার করা উচিৎ। মাথা শরীরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। অন্যান্য জায়গায় ইনজুরি হলে আমরা রিকভারি করতে পারি। লাইফের ব্যাপার বলে বাড়তি সুরক্ষা নিয়ে আমাদের খেলা উচিৎ। এটা খুবই জরুরি। নতুন ধরনের হেলমেটগুলো দেশের বাইরে থেকে আনাতে হয়। আমি এখনও আনিনি। তবে শিগগিরই আনবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, ১৬ জুলাই ২০১৬
এসকে/এমআরপি