ঢাকা: অক্টোবরে বাংলাদেশের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজকে সামনে রেখে চার দিনের বাংলাদেশ সফরে এসেছেন তিন সদস্যের ইংল্যান্ড ডেলিগশন। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের মাঝে বেশ কয়েকদিন যাবত একটু বাড়তি উৎসাহ চোখে পড়ছে।
অবশ্য এমন বাড়তি উৎসাহ না থাকার কোন কারণও নেই। কেননা গেল বছর অক্টোবরে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে আসা অস্ট্রেলিয়া এই নিরপত্তা ইস্যুতেই সফর বাতিল করেছিল। ফলে দীর্ঘ ১৪ মাস টেস্ট বঞ্চিত লাল-সবুজের দল।
শুধু টেস্টই নয়, ঘরের মাঠে গত বছরের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের পর আর কোন ওয়ানডে সিরিজও খেলেননি মাশরাফিরা। আর গেল মার্চে ভারতে অনুষ্ঠিত টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও আর কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাঠা নামা হয়নি টাইগারদের। ফলে অনেকটা হুমকির সম্মুখিন এদেশের ক্রিকেট। সঙ্গত কারণেই ইংল্যান্ড সিরিজটি টিম বাংলাদেশের জন্য আরাধ্য কোন কিছুরই নামান্তর।
আর সেই সিরিজটি খেলার মতো অবস্থা বাংলাদেশে বিরাজ করছে কী না সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতেই তিন সদস্যের ইংল্যান্ড ডেলিগেশনটি বাংলাদেশ সফরে এসেছে বলে জানালেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।
এই ক্ষেত্রে কোনো বাড়াবাড়ি শব্দ ব্যবহার না করে তাদের এই সফরকে বললেন রুটিন ওয়ার্ক। ‘ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের যে ডেলিগেশন বাংলাদেশ সফর করছে এটি তাদের একটি রুটিন ওয়ার্ক। আপনারা জানেন যে অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ড কোন দ্বিপাক্ষিক সিরিজের আগে তাদের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক দল পাঠিয়ে থাকে। যে ভেন্যুগুলোতে তারা খেলবে সেখানে তারা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করবে। শুধু হোটেলই নয় ইসিবি’র এই ডেলিগেশনটি টিম হোটেল, অনুশীলন ভেন্যু সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধাদিও খতিয়ে দেখবে। বাংলাদেশ থেকে যে নিরাপত্তা ও মেডিকেল পরিকল্পনাটি ওদের দেয়া হয়েছে সেটি নিয়েও ওরা বিসিবি ও নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা আছে তাদের সাথে সভা করবে। ’
বুধবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে চার দিনের সফরে তিন সদস্যের ইংল্যান্ড ডেলিগেসন দলে এসেছেন, ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)’র নিরাপত্তা উপদেষ্টা রেগ ডিকাসন, পিসিএ প্রধান নির্বাহি ডেভিড লেথারডেল ও ইসিবি ক্রিকেট অপারেশনসের পরিচালক জন কার।
দলটি ঢাকায় এসেই বিকেলে বাংলাদেশে অবস্থিত ব্রিটিশ ও অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করার পর মার্কিন দুতাবাসেও যাওয়ার কথা রয়েছে বলে জানালেন সুজন।
এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি সভায় অংশ নেবেন। যেখানে দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তাসহ এই সিরিজে যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন তাদেরও উপস্থিতিত থাকার কথা রয়েছে।
যেহেতু ইংলিশদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডে ও দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে তাই ওখানকার সুযোগ সুবিধাদি দেখতে ডেলিগেশন দলটি ১৯ আগস্ট যাবে চট্টগ্রাম।
গেল ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট ও ৭ জুলাই ময়মনসিংহের শোলাকিয়া ঈদের জামাতে জঙ্গি হামলা ঘটনার পর এদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে কিছুটা উদ্বেগেরে সৃষ্টি হলেও দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক তৎপরতায় সেই দুরবস্থা এখন অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।
তারপরেও দীর্ঘ সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ভেতরে না থাকা বাংলাদেশের জন্য ইংল্যান্ড সিরিজের গুরুত্ব বিবেচনা করে তারা যে ভাবে চাইবে ঠিক সেভাবেই নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করলেন বিসিবি সিইও। ‘আমরা যে নিরাপত্তা পরিকল্পনাটি পাঠিয়েছি সেটা একটা স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস। তারপরেও সাধারণত দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোতে এমন নিরাপত্তা পরিকল্পনা দেয়া হয়। এ ব্যাপারে সরকার থেকেও আমাদের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করি ওদের যে কোনো চাহিদা পূরণে আমরা সক্ষম হব। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, ৭ আগস্ট, ২০১৬
এইচএল/এমএমএস