ফতুল্লা থেকে: বাংলাদেশ সফরে আসা আফগানিস্তান ক্রিকেট দল দারুণ প্রস্তুতি সেরে নিল। স্বাগতিক বিসিবি একাদশকে ৬৬ রানে হারিয়েছে সফরকারী আফগানিস্তান।
খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে আফগানদের দেয়া ২৩৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা বিসিবি একাদশ ৩৮.১ ওভারে গুটিয়ে যায় ১৬৭ রানে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে প্রথমবারের মতো ডাক পাওয়া মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
আফগানদের দেয়া মাঝারিমানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৯ রানের মধ্যে ইমরুল কায়েস, এনামুল হক বিজয়, সাব্বির রহমান ও লিটন দাসের উইকেট হারায় বিসিবি একাদশ। সেখান থেকে পঞ্চম উইকেটে জুটি বেধে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও মেহেদি হাসান মিরাজ জয়ের আশা জাগান। একটা সময় স্কোরকার্ডে ১৮ ওভারে চার উইকেটে মাত্র ৫৫ রান। ১৯ তম ওভারে আমির হামজাকে তিন বাউন্ডারি মেরে রানের চাকা ঘোরান মোসাদ্দেক। তাকে দারুণ সঙ্গ দিতে থাকেন মিরাজ।
তবে, দলীয় ৯৫ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১৫ রানে করে মিরাজ রান আউট হলে ভাঙে ৫৬ রানের জুটিটি। এরপর শুভাগত হোমকে নিয়ে লড়তে থাকেন মোসাদ্দেক। দলীয় ১৫৪ রানে মোহাম্মদ নবীর বলে মোসাদ্দেক বোল্ড হয়ে গেলে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বিসিবি একাদশ। ৯৭ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৭৬ রান করেন তরুণ সৈকত।
অফস্পিনার মোহাম্মদ নবী ৮ ওভার বল করে মাত্র ২৪ রান দিয়ে নেন চার উইকেট। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন ফারিদ আহম্মাদ ও রশিদ খান।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের ৪ বল বাকি থাকতে (৪৯.২ ওভারে) ২৩৩ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান।
ম্যাচের শুরুর দিকে বিসিবি একাদশের পেসাররা চেপে ধরে আফগান ব্যাটসম্যানদের। দলীয় অর্ধশতকের আগেই একে একে আফগানদের তিন উইকেট তুলে নেন আবু হায়দার রনি, আলাউদ্দিন বাবু ও শুভাশিষ রায়। ৩০ রানের মাথায় আফগানদের ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি। উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন নওরোজ মঙ্গল (১০)। পরের ওভারে অপর ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদকে (১৭) বোল্ড করেন আলাউদ্দিন বাবু। তিন নম্বরে নামা রহমত শাহ ৮ রান করে শুভাশিষ রায়ের বলে আউট হলে ৪৭ রানের মাথায় তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে সফরকারীরা।
শুরুর দিকের চাপ সামলে নেন হাসমত উল্লাহ শহীদি ও স্তানিকজাই। চতুর্থ উইকেটে এ জুটি যোগ করেন ৬৩ রান। দলীয় ১১০ রানের মাথায় জুটিটি ভাঙেন অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। উঠিয়ে মারতে গিয়ে লং অনে আবু হায়দার রনির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন স্তানিকজাই। ৬৩ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ৩১ রান করেন সফরকারী দলের অধিনায়ক স্তানিকজাই।
এরপর রশিদ খানকে নিয়ে ভালো সংগ্রহের দিকেই এগুতে থাকেন হাসমত উল্লাহ। তবে জুটিটি খুব বেশি বড় করতে দেননি মিরাজ। দলীয় ১৫১ রানে রশিদ উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে আলাউদ্দিন বাবুর হাতে ধরা পড়েন। ২৪ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ৩০ রান করে ফেরেন এ ব্যাটসম্যান। এরপর সাবির নুরিকে ফিরিয়ে নিজের দ্বিতীয় শিকারের দেখা পান শুভাশিষ রায়। আলাউদ্দিন বাবুর হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে এ ব্যাটসম্যান ১০ বলে ১০ রান করেন।
ইনিংসের ৪৬তম ওভারে আফগানদের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা হাসমত উল্লাহ আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই দুর্দান্ত স্লোয়ারে বোকা বানান আলাউদ্দিন বাবু। বোল্ড হন এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর মোহাম্মদ নবীকে (৬) ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেটের দেখা পান মিরাজ। করিম জানাত (৬) আবু হায়দারের বলে সাঞ্জামুলের হাত ক্যাচ দেন। ইনিংসের শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে আলাউদ্দিন বাবু দৌলত জাদরানকে (০) বোল্ড করলে অলআউট হয় আফগানরা।
বিসিবি একাদশের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ৮ ওভার বল করে ৪৮ রানের বিনিময়ে তুলে নেন ৩ উইকেট। আলাউদ্দিন বাবু ৮.২ ওভার বল করে ৩২ রান খরচায় তুলে নেন আরও তিনটি উইকেট। এছাড়া, দুটি করে উইকেট দখল করেন আবু হায়দার রনি এবং শুভাশিষ রায়।
এ ম্যাচে বিসিবি একাদশে খেলেছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের তিন ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস, সাব্বির রহমান ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। টাইগারদের বিপক্ষে আফগানদের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি আগামী রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬
এমআরপি/এসকে
** হাসমত উল্লাহর ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজি আফগানদের
** প্রস্তুতি ম্যাচে কড়া নিরাপত্তা