মিরপুর থেকে: চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে আট উইকেটে ১৩১ রানের মাঝারি স্কোর গড়েছে খুলনা টাইটান্স। চাপের মুখে জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আরিফুল হক।
চিটাগংয়ের সামনে টানা পাঁচ ম্যাচ জয়ের হাতছানি! টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন খুলনা দলপতি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
তাসকিন-নবী-সাকলাইনদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরু থেকেই চাপের মধ্যে ছিল খুলনা। নির্ধারিত ওভার শেষে তাই স্কোরবোর্ডে বড় সংগ্রহ অানতে ব্যর্থ হয় তারা। সর্বোচ্চ ৪২ রান আসে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে। দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও ইমরান খান দু’টি করে উইকেট লাভ করেন। একটি করে নেন মোহাম্মদ নবী, শুভাশিষ রায় ও সাকলাইন সজিব।
প্রথম ওভারেই ব্রেকথ্রু এনে দেন নবী। তাইবুর রহমানকে (১) ক্লিন বোল্ড করেন আফগান অলরাউন্ডার। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই অলক কাপালির (৩) স্ট্যাম্প ভাঙেন বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন। পরের ওভারে শুভাগত হোমকে (২) বাউন্ডারি লাইনে শোয়েব মালিকের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত করেন পেসার শুভাশিষ।
পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে ওপেনার রিকি ওয়েসেলসের (২০) উইকেট হারিয়ে কঠিন চাপের মুখেই পড়ে খুলনা। আরেক পেসার ইমরানের বলে প্রথমে ক্যাচ হাতছাড়া করলেও মাটিতে পড়ার আগমুহূর্তে বল তালুবন্দি করেন ক্রিস গেইল।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে দলকে টেনে তোলেন মাহমুদউল্লাহ ও আরিফুল। ১৪তম ওভারে দুর্ভাগ্যজনকভাবে দু’জনের ৪৪ রানের পার্টনারশিপ ভাঙে। সিঙ্গেল নিতে গিয়ে বোলার ইমরানের থ্রোতে রানআউটের শিকার হন অারিফুল (১৮)।
পরের ওভারেই তাসকিনের বলে জাকির হাসানের ক্যাচবন্দি হওয়ার আগে ৪২ রানের (৩৯ বল) ইনিংস উপহার দেন মাহমুদউল্লাহ। তাতে ছিল ৪টি চার ও ১টি ছক্কার মার।
সপ্তম উইকেটে ৩২ রান যোগ করেন দুই ক্যারিবিয়ান নিকোলাস পুরান ও কেভন কুপার। ১৯তম ওভারে কুপারকে (১৫) আনামুল হকের গ্লাভসবন্দি করেন ইমরান। তাসকিসের করা ইনিংসের শেষ বলে মালিকের হাতে ধরা পড়েন পুরান (১৮)।
এদিকে, মঙ্গলবারের (২৯ নভেম্বর) প্রথম ম্যাচে মুশফিকের বরিশাল বুলসকে আট উইকেটে হারিয়েছে মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এবারের আসরে ধুঁকতে থাকা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেল। ১৪৩ রানের লক্ষ্যটা এক ওভার হাতে রেখে টপকে যায় কুমিল্লা। ওপেনিং জুটিতেই ৯৩ রান তোলেন ইমরুল কায়েস (৪৬) ও আহমেদ শেহজাদ (৬১)। মারলন স্যামুয়েলস ২৭ ও খালিদ লতিফ ৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
টুর্নামেন্টের প্রথম দেখায় খুলনার কাছে নাটকীয়ভাবে চার রানে হেরে যায় চিটাগং। ১২ নভেম্বরের ম্যাচটিতে ১২৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শেষ ওভারে দরকার ছিল ৬ রান। হাতে ছিল চার উইকেট। বোলিং প্রান্তে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু মাত্র এক রান নিতে সমর্থ হয় চিটাগং। তিন উইকেট নিয়ে দলকে দুর্দান্ত এক জয়ই এনে দেন খুলনা দলপতি।
গত ২৫ নভেম্বর বরিশাল বুলসের বিপক্ষে ছয় উইকেটের জয়ে ঢাকা দ্বিতীয় পর্ব শুরু করলেও নিজেদের সবশেষ ম্যাচে রাজশাহী কিংসের কাছে ৯ রানে হারের স্বাদ পায় খুলনা। মাহমুদউল্লাহদের সামনে তাই ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামে চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই জয় তুলে নেওয়ার পর ঢাকায় ফিরেও ছন্দ ধরে রাখে চিটাগং। ক্রিস গেইলকে পাওয়ায় দলের শক্তিও বেড়ে যায়। ম্যাচেও এর প্রভাব পড়ে। দু’দিন আগেই তামিম-গেইলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে রংপুর রাইডার্সের ১২৫ রানের লক্ষ্যটা ৯ উইকেট ও চার ওভার হাতে রেখেই টপকে যায় চিটাগং।
সাত দলের পয়েন্ট টেবিলে ৯ ম্যাচ শেষে ছয় জয় ও চার হারে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে চিটাগং। সমান ১২ পয়েন্টে দুইয়ে খুলনা ও রান রেটে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে সাকিবের ঢাকা ডায়নামাইটস। চিটাগংয়ের সমান পয়েন্টে যথাক্রমে চার নম্বরে রাজশাহী ও পাঁচে রংপুর। দুই জয়ে তলানিতেই কুমিল্লা আর এক ম্যাচ বেশি খেলা বরিশাল ছয় পয়েন্টে ছয়ে অবস্থান করছে।
চিটাগং একাদশ: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), ক্রিস গেইল, আনামুল হক (উইকেটরক্ষক), শোয়েব মালিক, মোহাম্মদ নবী, জহুরুল ইসলাম, সাকলাইন সজিব, শুভাশিষ রায়, জাকির হাসান, ইমরান খান, তাসকিন আহমেদ।
খুলনা একাদশ: রিকি ওয়েসেলস, তাইবুর রহমান, অলক কাপালি, শুভাগত হোম, আরিফুল হক, নিকোলাস পুরান (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), কেভন কুপার, শফিউল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন রুবেল, জুনাইদ খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৬
এমআরএম