ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সেমিফাইনাল হবে বাংলাদেশের

মাহমুদ মেনন, হেড অব নিউজ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৮ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৭
সেমিফাইনাল হবে বাংলাদেশের বাংলাদেশ ক্রিকেট দল/

বলা হয়, ক্রিকেটে বডি ল্যাঙুয়েজটাই সব। যদি তাই হয়- তাহলে প্রথমেই বলে নিতে চাই- চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আগামী ১৫ জুন (বৃহস্পতিবার) এজব্যাস্টনে অনুষ্ঠেয় সেমি-ফাইনালটি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের। কারণ সেরা খেলার সব বডি ল্যাঙুয়েজ এখন বাংলাদেশ দলে বর্তমান।

শুক্রবারের ম্যাচান্তে মাশরাফির গর্জন বুঝিয়ে দিয়েছে আমরা ফিরেছি টুর্নামেন্টে। আমরা এখন জয় ছাড়া আর কিছুই দেখতে চাই না।

 
 
কোনও একটি দল তখনই খেলায় জেতে যখন তার প্রধান তিনটি বিষয় নিশ্চিত করা যায়। টিম স্ট্রেংথ, হোম কন্ডিশন, কি প্লেয়ার্স। এর তিনটিই বাংলাদেশের রয়েছে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে।
 
ম্যাচগুলোর শুরুতে যখন লাল-সবুজের পতাকাতলে মাশরাফি বাহিনী গাইতে থাকে- আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি- তখনই তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে যায় দেশের ষোলো কোটি মানুষ। সুতরাং দলের একক শক্তিতো রয়েছেই সাথে গোটা দেশের শক্তি। ফলে টিম স্ট্রেংথে সামান্য ঘাটতি নেই।
 
আর এখনতো বলাই হয়, ক্রিকেটে দলীয় শক্তিতে বাংলাদেশ এখন তার সর্বকালের সেরা অবস্থানে রয়েছে।
 
হোম কন্ডিশন নিয়ে কথা হতে পারে। তবে লন্ডনে যত রয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশি আর তাদের যে উপস্থিতি আমরা প্রতিটি ম্যাচে দেখছি তাতে কার্ডিফ, লর্ডস কিংবা এজব্যাস্টন কোনওটিই আর ব্রিটিশদের মাঠ হয়ে থাকছে না। টাইগারদের কাছে ঘরের মাঠই মনে হয় এসব গ্রাউন্ডকে।
 
কি-প্লেয়ার্স বা স্পেশাল প্লেয়ার্সের বিষয়ে বাংলাদেশ পুরোপুরি সম্মৃদ্ধ বলা যাবে। আমাদের তামিম রয়েছে, রয়েছে সাকিব-মুশফিক-মাহমুদুল্লাহ। এরা দলের অভিজ্ঞতায় পূর্ণ চার সদস্য। এদের যেকোনও একজন যেকোনও টুর্নামেণ্টে জ্বলে উঠলেই দল জিতে যায়। সঙ্গে গড়ে ওঠা চাই একটি জুটি। সেতো গত কয়টি ম্যাচের সবগুলোতেই আমরা দেখেছি। হয় তামিম মুশফিক খেলছেন নয়তো সাকিব-মাহমুদুল্লাহ। চার-ছক্কায় তারা শত-অর্ধশত করছেন যখন তখন।
 
এর বাইরে রয়েছেন ইমরুল কায়েস- সাব্বির- সৌম্য। এরা তিনজনই এরই মধ্যে দলের পরীক্ষিত সেনা। পিঞ্চ হিটার বটে তবে, নির্ভরযোগ্যতাও দেখিয়েছেন নানা টুর্নামেন্টে। অভিজ্ঞদের পাশাপাশি এরাও যখন তখন দলকে দিতে পারেন বড় কিছু। সেটি তখন হয়ে ওঠে বাড়তি পাওনা।
 
ব্যাটিং লাইনে আমরা কখনো কখনো মাশরাফি-মোসাদ্দেককেও জ্বলে উঠতে দেখেছি।
 
আর বোলিংয়ে মাশরাফি নিজেই নিজের তুলনা। তার প্রতিটি বলই সমগ্র একাগ্রতা মেশানো। আরও একটি দারুণ বিষয় যেনো মিশে যায় তাতে-সেটা দেশপ্রেম। ফলে মাশরাফির বল মানেই বাংলাদেশের বল। মাশরাফিকে বেশ পিটিয়েছেন বিশ্বের কোনও ব্যাটসম্যান এমন একটা নজির এ পর্যন্ত তৈরি হয়নি। বরং তার বোলিংয়ের তোড়ে অনেক মিডল স্ট্যাম্পের ডিগবাজি চোখের সামনে ভাসে।
 
বোলিং লাইনে আমরা তাসকিনকে পাচ্ছি। প্রতিটি বলই যার আগুনের গোলার মতো। বোলিংয়ের জন্য দৌড় শুরুর আগে সামান্য ঝুঁকে রুবেল যখন লক্ষ্য স্থীর করে নেন, তখন যে কেউ বুঝতে পারে এর যে কোনও বলে উড়ে যেতে পারে মিডল-অফ কিংবা অন স্ট্যাম্প।  কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ তার ফর্মে এসে গেছেন। একটা-দুটো করে উইকেট ঝোলায় নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন ইদানিং। আর গত ম্যাচে মোসাদ্দেকের ১৩ রানে তিন উইকেট দখলের পর তার সামনে ব্যাট নিয়ে সমীহ করবে না এমন বুকের পাটাওয়ালা ব্যাটসম্যান কে হতে পারে? অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসানের বোলিংকে আগে থেকেই সমীহ করে সবাই। তার বলের ঘুর্ণিপাকে পড়ে কত বাঘা ব্যাটসম্যান বেঘোরে প্রাণ দিয়ে হয়েছেন সাজঘরমুখো সে দৃশ্য চোখে চোখে ভাসে।
 
ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ তার সর্বোচ্চ ফর্মে রয়েছে ইদানিং। ঝাপিয়ে পড়ে, লাফিয়ে উঠে বল তালু বন্দি করার কৌশল রপ্ত সবারই। বলের গতির চেয়েও দ্রুত দৌড়ে বাউন্ডারি লাইনে আটকে দেওয়ার নজির অনেক। রয়েছে স্ট্যাম্পিংয়ে রান আউটের অনেক সুন্দর দৃশ্যের স্মৃতি।
 
সুতরাং টোটাল ক্রিকেট বাংলাদেশ খেলছে অনেক দিন ধরেই। বৃহস্পতিবারের ম্যাচটিও হতে যাচ্ছে তেমনই এক টোটাল ক্রিকেটের মঞ্চায়ন। যার অগ্রভাগে থাকবেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। সুতরাং সেমিফাইনাল হবে বাংলাদেশের।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৭
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।