ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘কনকাশন রিপ্লেসমেন্ট’ নিয়মে বাংলাদেশের ‘প্রথম’ লিটন

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৯
‘কনকাশন রিপ্লেসমেন্ট’ নিয়মে বাংলাদেশের ‘প্রথম’ লিটন ছবি: সংগৃহীত

গত ১ আগস্ট থেকে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনে নতুন একটি ধারা যুক্ত হয়। সেদিন থেকে নারী-পুরুষদের সব আন্তর্জাতিক ম্যাচে চালু হয় ‘কনকাশন রিপ্লেসমেন্ট’ নিয়ম। বিশ্বব্যাপী প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও এ পদ্ধতি প্রযোজ্য হচ্ছে।

মাথায় আঘাত লেগে বদলি খেলোয়াড় নামানোর নতুন এই নিয়মে প্রথম নাম লেখায় অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ এবং মার্নাস লাবুসাঙ্গে। বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড় হিসেবে আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচে লিটন দাস এই তালিকায় নাম তুললেন।

ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ার আগে তিনি করেন ২৪ রান।

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে পেসার ইশান্ত শর্মা এবং মোহাম্মদ শামির দুটি বল লাফিয়ে উঠলে দুটিই লিটনের মাথায় আঘাত করে। হেলমেট থাকায় বড় কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও প্রথম সেশনের পর আর ব্যাটিংয়ে নামেননি তিনি। ‘কনকাশন রিপ্লেসমেন্ট’ নিয়ম লিটনের জায়গায় আসেন মেহেদি হাসান মিরাজ। যদিও লিটনের স্থলাভিষিক্ত হবেন কে সেটা নিয়েই ছিল শঙ্কা। পারিবারিক কারণে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত দেশে ফিরলে তার জায়গায় কাউকে নেওয়া হয়নি। এদিকে, হাতের আঙ্গুল ফেটে যাওয়ায় ইডেন টেস্ট থেকে ছিটকে পড়েন ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান। আর মূল একাদশে রাখা হয়নি মিরাজকে।

নতুন নিয়মের ব্যাপারে আইসিসি জানায়, মাথায় আঘাত লাগলে বদলি খেলোয়াড় নেয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন দলের ফিজিও। তবে, দুই ক্রিকেটারকে অবশ্যই একই মানের হতে হবে। তাতে ম্যাচ রেফারির অনুমোদন থাকবে।

ভারতের শীর্ষ একটি দৈনিক খবর প্রকাশ করে যে, উইকেটরক্ষক লিটন দাস গোলাপি বলে অস্বস্তিবোধ করছিলেন। ফলে বল দেখতে সমস্যা হচ্ছিল তার। এ নিয়ে নাকি বিস্তর পরীক্ষা-নীরিক্ষাও হয়েছে। বুধবার বাংলাদেশের অনুশীলনেই নেট বোলার ইরফানের বলে ৯ বার বোল্ড হয়েছিলেন তিনি। এরপর চোখ পরীক্ষায় (দৃষ্টি পরীক্ষা কিংবা ভিশন পরীক্ষা) দেখা যায়, লিটন সত্যি সত্যি গোলাপি বল দেখতে পাচ্ছেন না। গতকাল (বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর) তিনি অনুশীলনও করেননি। তারপরও তাকে ইডেন টেস্টের একাদশে রাখা হয়।  

লর্ডসে গত অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টে অভিষিক্ত ইংলিশ পেসার জোফরা আর্চারের একটি বাউন্সার স্মিথের মাথায় লাগলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। অস্ট্রেলিয়ার ফিজিও প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে আবারো ব্যাটিং শুরু করেন প্রথম টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি করা স্মিথ। ক্রিস ওকসের বলে এলবির ফাঁদে আউট হওয়ার আগে করেন ৯২ রান। ৮ রানের জন্য টানা তিন সেঞ্চুরি করতে পারেননি স্মিথ।

দ্বিতীয় ইনিংসে ফিজিও স্মিথকে মাঠে নামতে বারণ করে দিলে ‘কনকাশন রিপ্লেসমেন্ট’ নিয়মে তার জায়গায় দ্বিতীয় ইনিংসে দলে আসেন লাবুসাঙ্গে। ক্রিকেটের ইতিহাসে ২৫ বছর বয়সী লাবুসাঙ্গেই প্রথম কোনো ক্রিকেটার যিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ‘কনকাশন রিপ্লেসমেন্ট’ এ নাম লেখান। স্মিথের মতোই তিনি ডানহাতি ব্যাটসম্যান এবং পাশাপাশি লেগব্রেক বোলিং করেন।

মাথায় আঘাত পেলে বদলি খেলোয়াড় নামানোর আলোচনা বেশ কয়েক বছর ধরেই চলেছে। ২০১৪ সালের নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ওপেনার ফিলিপ হিউজ শেফিল্ড শিল্ডে ব্যাটিংয়ের সময় মাথায় আঘাত পেয়ে মারা যান। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ওই ঘটনার তদন্ত করার পরই সচেতন হয়ে উঠেছিল। ২০১৬-১৭ মৌসুমে ছেলে ও মেয়েদের ঘরোয়া ক্রিকেটে মাথায় আঘাত পাওয়া খেলোয়াড়ের বদলি নামানোর নিয়ম চালু করে অস্ট্রেলিয়া। তবে শেফিল্ড শিল্ডে সেই নিয়ম চালুর জন্য তাদের আইসিসির অনুমতি পাওয়ার অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০১৭ সালের মে মাস পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৯
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।